বিজ্ঞাপন

সাইবার নিরাপত্তা আইনে যা থাকছে

August 7, 2023 | 11:37 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ডিজিটাল প্লাটফর্মে সংঘটিত অপরাধ দমনে ২০১৮ সালে প্রণয়ন করা হয় ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’। আইনটি প্রয়োগের শুরু থেকেই এ নিয়ে বির্তক ছিল। বিশেষ করে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও বাক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা মনে করা হতো আইনটিকে। যে কারণে আইনটি কখনও বাতিল, কখনওবা সংশোধনের দাবি গত পাঁচ বছর ধরেই।

বিজ্ঞাপন

এবার সেই দাবি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে সরকার। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনটির নাম পরিবতর্ন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন নামে নতুন একটি আইনের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

আইনমন্ত্রী বলেছেন, আইনটি অত্যন্ত সুচিন্তিতভাবে করা হয়েছে। এ আইন নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। এ আইন সাইবার ক্রাইম বন্ধ করতে অত্যন্ত সহজ হবে।

সোমবার (৭ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে আইনটির খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ ব্রিফিং এ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আইনটির বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩’ নামে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়া আইনটির ধারাগুলোতে বড় ধরনের সংশোধন সংযোজন আনা হয়েছে।

তিনি জানান, সাইবার নিরাপত্তা আইনটি করা হয়েছে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের পরিবর্তে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কিন্তু বাতিল করা হয়নি, শুধু পরিবর্তন করা হয়েছে। কারণ এর সবগুলো ধারাই রয়ে গেছে। ধারাগুলোতে সংশোধন, সংযোজন আনা হয়েছে। যে সব ধারা অজামিন যোগ্য ছিল তা জামিনযোগ্য করা হয়েছে।

আইনমন্ত্রী জানান, ধারা ২১ এ আছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের পতাকা, জাতীয় সংগীত এসব নিয়ে যদি কেউ কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করত তাহলে সেটিকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছিল। সেটির শাস্তি ছিল দশ বছর সেটিকে কমিয়ে নতুন আইনে সাত বছর করা হয়েছে। আবার অনেকগুলো ধারার মধ্যে ছিল যদি কেউ এক অপরাধ দ্বিতীয়বার করে তাহলে ওই সাজাগুলো দ্বিগুণ হয়ে যেত। প্রত্যেকটা ধারায় যেখানে দ্বিতীয়বার সাজার কথা আছে, সেগুলো বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এখন নতুন আইনে প্রথম অপরাধ করলে যে সাজা ছিল তা দ্বিতীয়বার একই থাকবে। আর যেগুলো সাইবার অপরাধ টেকনিক্যাল নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেগুলোর বিষয়ো কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।

বিজ্ঞাপন

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকার জনগনের কথা শোনার সরকার। এখানে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের কিছু অপব্যবহার রোধকরার জন্য আমরা এর নাম পরিবর্তন করেছি এবং কিছু কিছু ধারা পরিবর্তন করা হয়েছে। যেমন আগে যে ধারায় জেল ছিল এখন তা নেই।’

তিনি বলেন, ‘অনেক সাংবাদিক বলেছেন এ আইনের কারণে স্বাধীন সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে একটা মানসিক চাপ সৃষ্টি করত সে চাপের বিষয়টিও আমরা মাথায় নিয়েছি।’

আইনটির ৪৩ ধারা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল ক্রাইম বা সাইবার ক্রাইম যখন হয় অনেক সময় সেটি তাৎক্ষণিকভাবে যদি সংশ্লিষ্ট যন্ত্র জব্দ করা না যায় তাহলে সাক্ষ্য-প্রমাণ হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে। সে জন্য আমি মনে করি ৪৩ ধারা থাকা প্রয়োজন।’

ধারা ২৮ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘২৮ ধারায় সাজা কমেছে, যেমন অজামিন যোগ্য ছিল তা জামিনযোগ্য করা হয়েছে। ২৯ ধারা বিলুপ্ত করে ২৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

জরিমানার পরিমাণ বেশি কিনা এ প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দেওয়ানি আদালতে মানহানির মামলা করলে জরিমানার লিমিট নেই। কিন্তু এই আইনে জরিমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। অপরাধ ও যার ক্ষতি হয়েছে সে বিবেচনায় জরিমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। জরিমানা না দিতে পারলে জেল।

৩১ ধারায় সাত বছর কারাদণ্ডের বিধান ছিল এখন ৫ বছর করা হয়েছে। ৩২ ধারায় সরকারি গোপনীয়তা লঙ্ঘনের সাজা ১৪ বছর ছিল এখন ৭ বছর। ৩৩ ধারায় হ্যাকিং করলে অনধিক ১৪ বছর জেল ও ১ কোটি টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।

আগের আইন করার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সিদ্ধান্ত ভুল ছিল না। তবে আইনটির অপব্যবহার করা হচ্ছিল তা ঠিক। আর তা স্বীকার করার সৎ সাহস এ সরকারের আছে বলেই স্বীকার করেছে।’

সারাবাংলা/জেআর/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন