বিজ্ঞাপন

মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব, আলোচনা ৮-১০ আগস্ট

August 8, 2023 | 11:24 pm

সারাবাংলা ডেস্ক

ঢাকা: ভারতের মণিপুর রাজ্যে চলমান সংঘাতের জেরে নরেন্দ্র মোদির সরকারের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে অনাস্থা প্রস্তাব। বিরোধীদলের দেওয়া এই অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হবে ৮ থেকে ১০ আগস্ট। সংসদের বর্ষা অধিবেশন শেষ হবে ১১ আগস্ট।

বিজ্ঞাপন

চলতি অধিবেশনের শুরু থেকেই সংসদ প্রায় অচল করে রেখেছেন বিরোধীরা। মণিপুর ইস্যুতে উত্তাল উভয় কক্ষই। এরই মধ্যে সরকার নামমাত্র আলোচনায় একের পর এক বিল পাস করিয়ে যাচ্ছে। এরই মাঝে অবশ্য মোদি সরকারের বিরুদ্ধে আনা হয়েছিল অনাস্থা প্রস্তাব। সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন সংসদের নিম্ন কক্ষের স্পিকার ওম বিড়লা।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) জানা গেল, সেই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হবে আগামী ৮-১০ অগস্ট। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১০ তারিখ এই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সংসদে বক্তব্য রাখবেন।

প্রসঙ্গত, অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে সরকারের সংখ্য়াগরিষ্ঠতাকে চ্যালেঞ্জ করে বিরোধীপক্ষ। এটি একটি সংসদীয় প্রক্রিয়া। বিরোধীরা এই প্রস্তাবের ডাক দিয়ে যাচাই করে নিতে চায় যে, সরকার মসনদে থাকার যোগ্য কি না। সংসদীয় বিধি বলছে, সংসদের যে কোনো সদস্যই এই অনাস্থা প্রস্তাবের ডাক দিতে পারেন। আর তার সেই প্রস্তাবকে সমর্থন জানাতে হবে অন্তত ৫০ জন সংসদ সদস্যকে।

বিজ্ঞাপন

দেশে দেশে মোট ২৭ টি অনাস্থা প্রস্তাব লোকসভায় ডাকা হয়েছে এর আগে পর্যন্ত। দেশের প্রথম অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল ১৯৬৩ সালে। তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ১৫ বার অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল সংসদে। এছাড়া লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর সরকার ৩ বার ও নরসিংহ রাওয়ের সরকার ৩ বার অনাস্থা প্রস্তাব মুখোমুখি হয়েছিল। ১৯৯৯ সালে ১ ভোটে অনাস্থা প্রস্তাব হেরেছিল তৎকালীন অটল বিহারী বাজপেয়ির সরকার। এরপর ২০০৩ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন সোনিয়া গান্ধী। এছাড়া ২০১৮ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধেও আনা হয়েছে অনাস্থা প্রস্তাব।

এদিকে বিরোধীদের তরফে থেকে অনাস্থা প্রস্তাবে সই ছিল শুধুমাত্র কংগ্রেস সংসদ সদস্য গৌরব গগৈয়ের। যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।

এদিকে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হলেও তাতে যে মোদী সরকারের অবস্থা টলমল নয়, তা জানা আছে বিরোধীদেরও। তবে সংসদে বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ চেহারা তুলে ধরতেই এই রাজনৈতিক চাল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ‘তাড়াহুড়ো’ করতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে কিঞ্চিত বিভেদ সৃষ্টি হয়েছিল কংগ্রেসের। অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে প্রথম যেদিন আলোচনা হয়, সেদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ‘ব্রায়েন। সেদিন ডেরেক অনাস্থা প্রস্তাব ইস্যুতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সময় চান। পরে দলের সম্মতি মেলে। তবে এরপর আর আনুষ্ঠানিক কোনও বৈঠক ছাড়াই গৌরবের মাধ্যমে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করানো হয় সংসদে। যা নিয়ে মন কষাকষি শুরু হয়েছিল দুই দলের মধ্যে। তবে শেষ পর্যন্ত আর সেই বিভেদ বেশি বাড়তে দেওয়া হয়নি।

বিজ্ঞাপন

২০১৪ সাল থেকে একটানা ভারতের ক্ষমতায় আছে মোদী সরকার। এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এই সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হলো। অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার ইস্যু নিয়ে ২০১৮ সালে এক আইনপ্রণেতা প্রথম মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল। সেবার ১২ ঘণ্টা বিতর্কের পর ওই প্রস্তাব আর আলোর মুখ দেখেনি।

সম্প্রতি ভারতের ২৬টি বিরোধীদল মিলে একটি জোট গঠন করেছে, যাকে ‘আইএনডিআইএ বা ইন্ডিয়া’ বলে ডাকা হচ্ছে। তাদের আনা এই অনাস্থা বিতর্ক তাদের ঐক্য প্রদর্শনের একটি সুযোগ বলে মনে করেছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

উল্লেখ্য, মে মাসের প্রথমদিক থেকে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে শুরু হওয়া জাতিগত দাঙ্গায় এ পর্যন্ত ১৫০ জনেরও বেশি নিহত ও বাস্তুচ্যুত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। রাজ্যটির সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতি মেইতেইদের সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ কুকিদের সংঘর্ষ চলছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন