বিজ্ঞাপন

ঢাকায় গণমিছিল আজ, জিরো টলারেন্স নীতিতে বিএনপি

August 11, 2023 | 12:00 am

আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: গত ২৯ জুলাই ‘ঢাকার প্রবেশ মুখে অবস্থান’ কর্মসূচির পর ১১ দিনের ‘বিশ্রাম’ শেষে আজ শুক্রবার (১১ আগস্ট) ফের মাঠে গড়াচ্ছে বিএনপির আন্দোলন। বিকেল ৩ টায় বাড্ডা সুবাস্ত টাওয়ার থেকে আবুল হোটেল পর্যন্ত ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি এবং একই সময় কমলাপুর স্টেডিয়াম থেকে মালিবাগ রেলগেট পর্যন্ত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি গণমিছিল করবে।

বিজ্ঞাপন

কেন্দ্রঘোষিত এ কর্মসূচি সফল করার ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে বিএনপি। দায়িত্বশীল কোনো নেতার মধ্যে কোনোরকম গা’ছাড়া ভাব দেখা গেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে রেখেছে দলের হাইকমান্ড। ইতোমধ্যে ছাত্রদলের সভাপতি রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পদচ্যুত করা হয়েছে তাকে।

বিএনপির মিডিয়া সেলের দেওয়া তথ্যমতে, শুক্রবার (১১ আগস্ট) ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির গণমিছিলে নেতৃত্ব দেবেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সঙ্গে থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, শামসুজ্জামান দুদু, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, আতাউর রহমান ঢালী, জহিরুল হক শাহজাদা মিয়া, ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. মজিবর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সমাজ কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশারফ হোসেন, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম এবং শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দীকি।

গণমিছিলের সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকবেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ও সদস্য সচিব আমিনুল হক।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির গণমিছিলে নেতৃত্ব দেবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তার সঙ্গে থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমদ আযম খান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, মঈনুল ইসলাম খান শান্ত, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দীন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, হারুন অর রশিদ, বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দীন আহমেদ অসীম, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হীরা, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা।

গণমিছিল সমন্বয় করবেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক আব্দুস সালাম। তার সঙ্গে থাকবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।

দলীয় সূত্র মতে, রাজপথে নেতা-কর্মীদের সরব উপস্থিতি নিশ্চিত করতেই বিএনপির শীর্ষ নেতাদের স্পট নির্ধারণ করে দিয়েছেন খোদ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এবার কেউ দায়িত্ব পালনের অবহেলা করলে বা গা’ছাড়া ভাব দেখালে পদ-পদবি কেড়ে নেওয়াসহ দল থেকে বহিষ্কারের খড়গ নেমে আসতে পারে। সংগঠনের কোনো পর্যায়ে গাফিলতি দেখতে চায় না বিএনপি। সিনিয়র নেতাদের পাশাপাশি তরুণ নেতাদেরও দায়িত্বশীল ভূমিকায় দেখতে চান দলের হাউকমান্ড। পদ-পদবি নিয়ে ঘরে বসে থাকার মন-মানসিকতা যারা পোষণ করছেন, তাদের জন্য ইতোমধ্যে চূড়ান্ত বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দায়িত্বে অবহেলার কারণে ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টিকে দলের নিষ্ক্রীয় নেতাকর্মীদের জন্য ‘কঠোর বার্তা’ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। এতেও যদি কাজ না হয়, দায়িত্বশীল নেতাদের দল থেকে বহিষ্কার করতেও পিছপা হবে না বিএনপি।

বিজ্ঞাপন

সূত্র মতে, ডিসেম্বর মাসের আগেই আন্দোলনকে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে চায় বিএনপি। এ ক্ষেত্রে রাজধানী ঢাকাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে তারা। ঢাকার ব্যর্থতার কারণেই বিগত দিনের আন্দোলন সফল হয়নি— এ বদনাম ঘোচাতে ঢাকাকে প্রাধান্য দিয়ে আন্দোলনের ছক এঁটেছে বিএনপি। ইতোমধ্যে যে দুইটি বড় কর্মসূচি (মহাসমাবেশ ও ঢাকার প্রবেশ মুখে অবস্থান) পালন করা হয়েছে; তা ছিল ঢাকা কেন্দ্রিক। আজকের গণমিছিলও ঢাকার দুই সিটিতে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে।

তবে, গত ২৯ জুলাই ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি ‘ব্যর্থ’ হওয়ায় ঢাকার আন্দোলন নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। সে কারণেই এবারের আন্দোলন সফল করতে দলের সবপর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতাদের কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। দলীয় কর্মসূচি সফল করার ব্যাপারে কোনো শৈথিল্য বা সমন্বয়হীনতা দেখা গেলে সংশ্লিষ্ট এলাকা বা ইউনিটের দায়িত্বশীল নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বিএনপি— এ বিষয়টি ইতোমধ্যে পরিষ্কার করা হয়েছে।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপির যেকোনো ধরনের কর্মসূচি সফল করার ব্যাপারে দলের নেতা-কর্মী, সমর্থকেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। কাউকে জোর করতে হয় না। তবে, আন্দোলন যেহেতু চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, সেহেতু দায়িত্বশীল নেতাদের নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে।’

উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আন্দোলনের এ পর্যায়ে কারও মধ্যে কোনো ঘাটতি বা কমতি থাকলে, সেটি কাটিয়ে ওঠার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমাদের আর পেছনে যাওয়ার সুযোগ নেই। সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে— এই বার্তা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের একজন সহ-সভাপতি সারাবাংলাকে বলেন, ‘রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকে শাস্তি দিয়ে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। সবাই এখন পারফরমেন্স দেখানোর চেষ্টা করছে। গতকাল টানা তিন ঘণ্টা বৃষ্টিতে ভিজে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) গাড়ি বহরে যারা ছিল, নিকট অতীতে তাদের অনেককেই এভাবে দেখা যেত না। শুক্রবারের গণমিছিলেও সবার সরব উপস্থিতি দেখা যেতে পারে।’

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন