বিজ্ঞাপন

আ.লীগে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে মাদানী-মতিন, বিএনপির লিটন

November 8, 2023 | 10:54 pm

কাজী মোহাম্মদ মোস্তফা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

ময়মনসিংহ: আওয়ামী রাজনীতির প্রবাদ পুরুষ ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ভাষাসৈনিক রফিক উদ্দিন ভুইয়া, পাঁচ বারের এমপি এম শামসুল হক (একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষাসৈনিক), সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান (একুশে পদকপ্রাপ্ত) এবং সাবেক ফার্স্টলেডি বেগম রওশন এরশাদ’র জন্মভূমি ও রাজনীতির চারণক্ষেত্র ময়মনসিংহ। এই সকল রাজনীতিক কালে কালে বাংলাদেশ ও বাঙালির ইতিহাসকে উচ্চকিত করে গেছেন। এই অঞ্চলের রাজনীতি আবর্তিত হতো উল্লিখিত সব নেতাদের ঘিরে। মূলত নির্বাচনের মাধ্যমে নির্ধারিত হতো তাদের জনপ্রিয়তা। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সেই নির্বাচন এখন কড়া নাড়ছে।

বিজ্ঞাপন

আর মাত্র কয়েক মাস পরেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ইতোমধ্যেই নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। যদিও রাজপথের প্রধান বিরোধীদল বিএনপি সরাসরি নির্বাচন ইস্যুতে কথা বলছে না। তাদের দাবি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। সেই দাবিতে তারা রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আন্দোলনের পাশাপাশি তারা নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিচ্ছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে সারাদেশে বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় থেমে নেই সবচেয়ে বেশি সংসদীয় আসনের জেলা ময়মনসিংহের সম্ভাব্য প্রার্থীরাও। মিছিল-মিটিং, উঠান বৈঠকসহ নিজেকে যোগ্য প্রমাণে উঠে-পড়ে লেগেছেন তারা।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ময়মনসিংহের ১১টি আসনে আওয়মী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জাসদসহ অন্যান্য দলের প্রায় পৌনে দুই’শ মনোনয়ন প্রত্যাশী মাঠে রয়েছেন। ময়মনসিংহকে বলা হয়ে থাকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। স্বাধীনতার পর থেকে এখানকার বেশিরভাগ সংসদীয় আসন আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। ১১টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বেশি আসনে জয়লাভ করেছে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে বিএনপি এবং তার পর জাতীয় পার্টি। কয়েকবছর ধরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে রয়েছে জাতীয় পার্টি। সেজন্য তাদের দুয়েকটি আসন ছেড়ে দিতে হয়। এবারও জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোট বাঁধলে অন্তত দু’টি আসন ছেড়ে দিতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে নয়টি আসনে জয়ের জন্য আওয়ামী লীগকে নির্বাচনের মাঠে নামতে হবে। আর রাজপথের প্রধান বিরোধীদল নির্বাচনে এলে ভোটের হিসাব-নিকাশ কিছুটা হলেও পাল্টে যাবে। কারণ, তারাও কয়েকটি আসন পুনরুদ্ধারে ভোটের মাঠে নামবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আসনভিত্তিক পরিক্রমায় এবার সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে সারাবাংলার আয়োজনে থাকছে ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনের চিত্র।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বাল্যস্মৃতি বিজড়িত ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসন। একটি পৌরসভা এবং ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে আসনটি গঠিত। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এই আসনে আওয়ামী লীগ থেকে পাঁচ বার, বিএনপি থেকে তিন বার এবং জাতীয় পার্টি থেকে দু’বার এমপি নির্বাচিত হয়েছে। ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগের আবুল মনুসর আহমেদ, ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের প্রিন্সিপাল আব্দুর রশিদ, ১৯৭৯ সালে বিএনপি’র আবুল মনুসর আহমেদ, ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগের আব্দুস সালাম তরফদার, ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির আনিসুর রহমান মানিক, ১৯৯১ সালে বিএনপি’র আব্দুল খালেক, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী, ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের আব্দুল মতিন সরকার, ২০০৮ সালের আওয়ামী লীগের রেজা আলী, ২০১৪ সালে জাতীয় পার্টির এম এ হান্নান ও সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী এমপি নির্বচিত হন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন:

আ.লীগে খালিদের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী, বিএনপিতে এগিয়ে জাকির

আসনটি থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সর্বোচ্চ পাঁচবার নির্বাচিত হলেও বিএনপিরও আধিপত্য রয়েছে। আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আসনটি দখলে রাখতে মরিয়া। তবে আন্দোলনমুখী বিএনপিও আসনটি নিজেদের দখলে নিতে চায়। আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরা এলাকায় তৎপর রয়েছেন। তবে এই আসনে দু’বার এমপি নির্বাচিত হওয়ায় জাতীয় পার্টির প্রার্থীও রয়েছেন। তবে তারা সরব নয়। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে বিএনপির প্রভাবশালী প্রার্থীও জয় পেতে পারেন।

বিজ্ঞাপন

তবে সরকার সমর্থকদের দাবি, ঢাকা-ময়মনসিংহ চারলেন মহাসড়ক হওয়ার পর রাজধানী ঢাকা থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরের এই উপজেলায় নীরব শিল্পায়ন ঘটেছে। কর্মসংস্থান হয়েছে হাজারো শ্রমিকের। যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। টানা তিন মেয়াদ ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় এলাকার নানা উন্নয়নে খুশি নানান শ্রেণি-পেশার মানুষ। আগামী নির্বাচনে এলাকার উন্নয়নের ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

আগামী নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হচ্ছেন- বর্তমান এমপি হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী, সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন সরকার, ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন খান, ত্রিশাল পৌর মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এবিএম আনিছুজ্জামান আনিছ, ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, সাবেক ছাত্রনেতা আহাম্মদ আলী আকন্দ ও সাবেক ব্যাংকার হাবিবুর রহমান।

আর বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশায় মাঠে আছেন- বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির আহ্বায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির মনোনয়ন দৌড়ে মাঠে আছেন- অ্যাডভোকেট আবদুল বারী, আবদুর রউফ, আবদুল মজিদ, ইঞ্জিনিয়ার মো. সুরুজ আলী, গোলাম সারুয়ার তপন।

এদিকে, মনোনয়ন প্রতিযোগিতার সঙ্গে বাড়ছে আওয়ামী লীগের কোন্দল, দলাদলি। ফলের দলের ভেতরের বিভক্তিও দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। দলের কোন্দল ও বিভক্তি নিয়ে নেতাকর্মীরা বিব্রত ও হতাশ। জানা গেছে, মূলত কমিটি গঠন ও পদ বাণিজ্য নিয়েই এই কোন্দল ও বিভক্তি।

বিজ্ঞাপন

এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশাী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী, এমপি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার মেয়াদে এলাকার যে পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে অতীতে তা হয়নি। এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের এই দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখে দলের নেতাকর্মীসহ এলাকাবাসী খুশি। আগামী নির্বাচনে এলাকাবাসী এর প্রতিদান দেবে। আগামী নির্বাচনে আমি দলের মনোনয়ন পেলে এই আসনে বিজয় নিশ্চিত। দলের মূল ধারার সব নেতাকর্মীই আমার সঙ্গে আছে।’

আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আব্দুল মতিন সরকার সারাবাংলাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দুর্দিনে আমি পরীক্ষিত নেতা। আমি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলাম। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছি। ২০০১ সালে বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের মেয়াদে এলাকাবাসী আমাকে ভোট দিয়ে এমপি নির্বাচিত করে। এ সময় জেল-জুলুম ও পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়েছি। পাঁচ বার কারাবরণ করেছি। দলের তৃণমূল থেকে শুরু করে এলাকার মূল ধারার প্রত্যেক নেতাকর্মী আমার সঙ্গে আছে। আগামী দ্বাদশ নির্বাচনে মনোনয়ন পেলে এই আসনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত।’

ত্রিশাল পৌর মেয়র এবিএম আনিছুজ্জামান আনিছ বলেন, ‘দলের মনোনয়নে আমি একবার এবং পরে স্বতন্ত্র থেকে আরও দু’বার ত্রিশাল পৌর মেয়র হয়েছি। দলের নেতাকর্মীসহ এলাকাবাসীর সমর্থনে আমি মেয়রের দায়িত্ব পালন করছি। এলাকাবাসী সবসময় তাদের বিপদে-আপদে আমাকে কাছে পায়। দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের আমি সবসময় মূল্যায়ন করে থাকি। আগামী নির্বাচনে দলের নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীরও প্রত্যাশা নতুন মুখ। এই বিবেচনায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন করে মনোনয়ন দিলে এই আসনটি তাকে উপহার দেবো।’

এদিকে, বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন সারাবাংলাকে বলেন, ‘বছর জুড়েই নেতাকর্মী সমর্থদের সঙ্গে নিবিড় ও আত্মিক যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করি। তাদের অভাব-অভিযোগ, সমস্যার কথা শুনি। সমস্যা সমাধানেরও পথ বের করি। নানা সংকটে এলাকাবাসীর পাশে থাকি। দলের ঐক্য ধরে রাখতে সবপর্যায়ের নেতাকর্মীদের যথাযথ মূল্যায়নের চেষ্টাও করে থাকি। এর আগেও দল মনোনয়ন দেওয়ায় নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আশা করছি আগামীতেও দল আমাকে মনোনয়ন দেবে। আমি মনোনয়ন পেলে ত্রিশাল আসনে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত।’

বিএনপির আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালে অনেক কাজ হয়েছে। এলাকার মানুষ আমার কাছে এসে কথা বলার সুযোগ পেয়েছে। এলাকার মানুষের জন্য কাজ করেছি। আন্দোলন শেষে দল যাকে মুল্যায়ন করবে আমি তার পক্ষেই কাজ করব।’

অপরদিকে, জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী ইঞ্জিনিয়ার মো. সুরুজ আলী বলেন, ‘জাতীয় পার্টি এই আসনে দুই বার জয়লাভ করেছে। তাই আসনটিতে জাতীয় পার্টির আলাদা একটা ইমেজ রয়েছে। জাতীয় পার্টির এমপিদের হাত দিয়ে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তাই কাজ ও গ্রহণযোগ্যতার মূল্যায়নে আমার অবস্থান জাতীয় পার্টিতে বেশ মজবুত। মনোনয়ন প্রশ্নে আমি আশাবাদী।

উল্লেখ্য, এই আসনের মোট ভোটার ৪ লাখ ২ হাজার ১৯৬। যার মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৭ হাজার ৬৩৫ এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৯৪ হাজার ৫৬১ জন। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৭৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের রেজা আলী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির মাহবুবুর রহমান। তিনি পান ৫৮ হাজার ৪০ ভোট। এর পর ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির এম এ হান্নান ৩৬ হাজার ৯৬৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। ওই সময় তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী রুহুল আমিন মাদানী। তিনি পান ৩৩ হাজার ৩৬৪ ভোট। তবে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে জয় পান রুহুল আমিন মাদানী। ওইবার তিনি ২ লাখ ৪ হাজার ৭৩৪ ভোট পান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মাহবুবুর রহমান লিটন পান ৩৬ হাজার ৪০৮ ভোট।

সারাবাংলা/কেএমএম/পিটিএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন