বিজ্ঞাপন

‘অগ্নিসংযোগ-ভাংচুরের মাধ্যমে দাবি আদায় সমর্থন করি না’

November 12, 2023 | 2:14 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের মাধ্যমে দেশে অশান্তি সৃষ্টি করে দাবি আদায় ইসলামী আন্দোলন সমর্থন করে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দলটির আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।

বিজ্ঞাপন

রোবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘আমরা হচ্ছি শান্তিপ্রিয় রাজনৈতিক ঘরানার একটা উল্লেখযোগ্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। আমরা ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ অশান্তি তৈরি করে দাবি আদায়ের যে প্রক্রিয়া, সেটা সমর্থন করি না।’

‘তবে, বর্তমানে সরকার যে কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তা যে সম্পূর্ণ অমানবিক এবং অনৈতিক, সেটা আজ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা উপস্থাপন করেছি। এখনও পরিষ্কার করে বলছি যে, শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে যত চাপ প্রয়োগ এবং যত কঠিন অবস্থা তৈরি করা যায়, সেটা আমরা করব। মেসেজগুলো এভাবে পৌঁছাবার সিদ্ধান্ত আমাদের রয়েছে’— বলেন সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আমাদের সাধ্যানুযায়ী আমরা ন্যায়ের পক্ষে এবং দেশ ও জনগণের পক্ষে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এর পরও যদি সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় না হয়, তাহলে আমরা জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে আমরা করণীয় পন্থা ঠিক করব।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘প্রায় দুই বছর আগে আমরা পরিষ্কারভাবে ঘোষণা করেছিলাম। সেই অবস্থান এখনও আমাদের পরিবর্তন হয় নাই। ইনশাল্লাহ আল্লাহ হবে না। আমরা সেখানে বলেছিলাম, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থেকে যদি জাতীয় নির্বাচন করে, সেই নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ অংশ গ্রহণ করবে না।’

‘সরকার বিভিন্ন দলকে নির্বাচনে নেওয়ার চেষ্টা করছে, আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে কিনা?’— এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকার তার হীন স্বার্থে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আবার একটা পাতানো নির্বাচন করার সমস্ত চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে— সেটা তারা করবেই। সে হিসাবে শুধু আমাদের সঙ্গেই নয়, বিএনপির সঙ্গেও তো যোগাযোগ করতে পারে। আমাদের পরিষ্কার কথা হল, যদি এই সরকার ক্ষমতায় থেকে পাতানো নির্বাচন করতে চায়, সেই নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করব না।’

বিজ্ঞাপন

‘বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোনে যাবেন কিনা?’— এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘বিএনপিসহ অন্যান্য দল যে ন্যায্য দাবি উত্থাপন করেছে, সেই দাবির সঙ্গে ইসলামী আন্দোলনসহ সবাই ঐক্যমত্য পোষণ করেছে। আমাদের মহাসমাবেশ থেকে তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সমর্থন জানিয়েছি। পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে। এই জন্যই আমরা জাতীয় সংলাপের প্রস্তাব রেখেছি।’

‘মহাসমাবেশ থেকে যে প্রস্তাবগুলো দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো নিয়ে সরকারের সঙ্গে বসেছিলেন কিনা?’— এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখা করে তাদের জানাই নাই। রাজনৈতিক দলের একটা প্রক্রিয়া হল, সমাবেশের মাধ্যমেই দাবিগুলো তারা উপস্থাপন করে এবং আপনাদের (মিডিয়া) মাধ্যমেই মেসেজটা পৌঁছাবার চেষ্টা করে। আমরা সেইভাবেই জানিয়েছি এবং পৌঁছিয়েছি।’

‘অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের যেভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে, আপনারাও সেরকম কিছু আশঙ্কা করছেন কিনা?’— এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘আশঙ্কা তো উড়িয়ে দিতে পারি না। তারা আমাদেরকেও গ্রেফতার করতে পারে। কারণ, তারা কখন, কীভাবে কার ওপর খড়গহস্থ হবে, এটা তো আমাদের জানা নেই।’

‘শুধু গণমিছিল বা সভা-সমাবেশ দিয়ে কি দাবি আদায় করা সম্ভব হবে, অন্য কোনো কর্মসূচিতে আপনারা যাবেন না?’— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সেটা আন্দোলনরত দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় সংলাপ এবং আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হবে।’

বিজ্ঞাপন

‘আপনারা বারবার বলছে, সব পথ রুদ্ধ করলে ২৫ মার্চের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়— এটা দ্বারা আপনারা কী বার্তা দিতে যাচ্ছেন?’— এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, ‘আপনারা লক্ষ্য করেছেন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। আলোচনার পথ বন্ধ হওয়ার পর জনবিস্ফোরণ ঘটেছে। এই ধরনের বার্তাই আমরা দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘জালেম যখন জুলুমের মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, তখন এক পর্যায়ে তারা ধ্বংস হয়। সেই দিনের অপেক্ষায় আমরা আছি। আল্লাহ’র গজব আসবেই। এতে কোনো সন্দেহ নাই। আমরা চেষ্টা করব। এরপর আল্লাহ’র গজব আসবে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত আছেন সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজী, মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানসহ অনান্যরা।

সারাবাংলা/এজেড/ইআ

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন