বিজ্ঞাপন

‘সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সবচেয়ে বেশি দরকার মানসিকতার পরিবর্তন’

December 1, 2023 | 3:30 pm

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সড়কে আইন না মেনে চলার প্রবল প্রতিযোগিতা। প্রতিদিনই মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে, পঙ্গুত্ব বরণ করছে। তবুও সড়কে ফিরছে না শৃঙ্খলা, সচেতন হচ্ছে না মানুষ। অথচ একটু সচেতন হলেই নিরাপদ সড়ক সম্ভব। আর সেজন্য পরিবহন মালিক, চালক, যাত্রী, পথচারীরা সবার মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। এটাই এখন সবচেয়ে বেশি দরকার। সবাই আইন মেনে চলার সংস্কৃতি অনুশীলন করেন এবং সড়কে শৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিতরা যদি যথাযথ দায়িত্ব পালন করেন তাহলে সড়ক অবশ্যই নিরাপদ হবে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের ৩০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত কর্মসূচিতে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত দুইটি পরিবারকে ব্ল্যাক ব্যাংগল ছাগল সহায়তা দেয় সংগঠনটি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) মো. আখতার হোসেন বলেন, ইলিয়াস কাঞ্চন ভাইয়ের স্ত্রী যখন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান, বাংলাদেশে সে সময় প্রচুর দুর্ঘটনা হতো। তখন পত্রিকা খুললেই সড়কে মানুষের মৃত্যুর খবর দেখতে পেতাম। ইলিয়াস কাঞ্চন সে সময় সামাজিক কল্যাণের জন্য আন্দোলন শুরু করেন। তার এই আন্দোলনের কারণে মানুষের মাঝে সচেতনতা বেড়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর ক্ষেত্রে এই আন্দোলন একটি মাইলফলক।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, গত ১৫ বছর আগে ১২ হাজার কিলোমিটার সড়ক ছিলো। এখন এটি বেড়ে ৩৩ হাজার হয়েছে। সরকার গত দেড় দশক ধরে উন্নয়ন করে যাচ্ছে। সড়কের ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন বেড়েছে। মানুষের দারিদ্র‍্য কমেছে। সক্ষমতা বেড়েছে। আমি মনে করি, আগের তুলনায় সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে।

তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে মানুষেরও দায়বদ্ধতা আছে। বিশেষত, মিডিয়ার দায়বদ্ধতা রয়েছে। জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য মিডিয়ার কাজ করতে হবে। চালকদের সচেতন হতে হবে। গাড়ি চালানোর মৌলিক শিক্ষা ছাড়া কেউ যেন চালক হতে না পারে, সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রশিক্ষিত চালক তৈরি করতে হবে।

কর্মসূচিতে বাংলাদেশ স্কাউটের কোষাধ্যক্ষ সাবেক সিনিয়র সচিব ড. মো. শাহ কামাল বলেন, নিরাপদ সড়ক চাই—এটি সকলের মনের কথা। বাংলাদেশ স্কাউটসের ২৪ লাখ ছাত্রআ নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নে কাজ করছে। একসাথে কাজ করলে উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা সহজ হবে। আমার মনে হয়, রাস্তা ও গাড়ির অনুপাত ঠিক নেই। এতধরনের যানবাহন পৃথিবীতে বিরল। কোনটা রাখব, কোনটা রাখব না, সেটি ঠিক করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

নিরাপদ সড়ক চাই-এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চিত্রপরিচালক মিশুক মুনীরের স্ত্রী মঞ্জুলি মুনীর বলেন, সড়কের আইন যদি আরও একটু কঠিন হতো, তাহলে অনেক প্রাণ বাঁচতো। আমরা যতই কিছু করি না কেন, আমাদের শক্তি কিন্তু সীমিত। কঠোর আইন যেন বাস্তবায়িত হয়, সে ব্যাপারে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাই। আর আমরা যেন আইন মেনে চলি, আসে দিকটিও খেয়াল রাখা জরুরি।

‘নিরাপদ সড়ক চাই’ সংগঠনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, আমি মুখের কথায় বিশ্বাস করি না। আমি কাজে বিশ্বাসী। দেশকে ভালোবাসি বললেই ভালোবাসা হয় না। প্রমাণ দিতে হয়। যে যেখানে আছেন, সেখান থেকেই দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করা উচিত। পরিবহন খাতের নেতাদের মানসিকতা পরিবর্তন হচ্ছে না। এতে করে জনগণ ভুক্তোভোগী হচ্ছে। শ্রদ্ধার সাথে বলছি, আপনারা আপনাদের মানসিকতা পরিবর্তন করুন।

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা কেন হয়, কী করলে এটি প্রতিরোধ করা যায়— এগুলো নিয়ে আর আলোচনা করব না। বহু আগেই এগুলো বলেছি। আমি মনে করি আমাদের সবচেয়ে বেশি দরকার মানসিকতার পরিবর্তন। সবার মন-মানসিকতার যদি পরিবর্তন না হয় তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা যাবে না।

কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের এডিশনাল ডিআইজি সাজ্জাদুর রহমান, নিড়াপদ সড়ক চাই সংগঠনের মহাসচিব লিটন এরশাদ, কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা আইয়ুবুর রহমান খান, এএইচ নোমান, ম. হামিদ, ভাইস চেয়ারম্যান মঞ্জুলী কাজী, বেলায়েত হোসেন খান নান্টু, যুগ্ম মহাসচিব গনি মিয়া বাবুল, অর্থ সম্পাদক আসাদুর রহমান প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরআইআর/এনইউ

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন