বিজ্ঞাপন

ঈদের তৃতীয় দিনেও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে উপচেপড়া ভিড়

April 13, 2024 | 10:30 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: পবিত্র ঈদুল ফিতরের তিন দিনের ছুটি গতকাল (১২ এপ্রিল) শেষ হলেও আজ শনিবারও (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বিনোদন স্পট ও জাদুঘরে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

বিজ্ঞাপন

এদিন রাজধানীর শ্যামলীর ডিএনসিসির শিশু মেলা, আগাঁরগাওয়ের বিমান জাদুঘর, বিজয় সরণির সামরিক জাদুঘর ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার, কলাবাগানের শেখ রাসেল শিশু পার্ক, সংসদ ভবন এলাকার চন্দ্রিমা উদ্যান এবং শাহবাগসংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

দুপুরের পর শ্যামলীর শিশু মেলায় গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে প্রবেশের জন্য বাইরে দর্শনার্থীদের লম্বা সারি। প্রবেশ পথে দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ড জানান, গত তিন ধরে দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায়, সেখানে হাজারো শিশু-কিশোর বিভিন্ন রাইডে চড়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে।

শিশু মেলার উল্লেখযোগ্য রাইডগুলোর মধ্যে রয়েছে- ম্যারি গো রাউন্ড, চুক চুক ট্রেন, নিনি ট্রেন, ট্রয় ট্রেন, নাগরদোলা, হেলিকাপ্টার রাইডস, বাম্পার কার, ড্রাগন রোলার, ব্যাটারিচালিত কার, মোটর রাইড, ভাইকিং ভোট, ওয়ান্ডার হুইল, প্যারাট্রুপার, ঘোড়ার রাইডস, ইত্যাদি।

বিজ্ঞাপন

আজিমপুর থেকে দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে শিশু মেলায় বেড়াতে এসেছেন আফসানা মীম। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা ট্রয় ট্রেন ও ঘোড়ার রাইডসে চড়ে খুব খুশি। ছোট জায়গা হলেও এখানে অনেক রাইডস আছে। তবে জায়গা আরেকটু বেশি হলেও আরও ভালো হতো।’

মিরপুরের ভাসানটেক থেকে পাঁচ বছরের মেয়েকে নিয়ে শিশু মেলায় এসেছেন আরফান শেখ নামে এক নির্মাণ শ্রমিক। সারাবাংলার এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘মেয়ে নাগরদোলা রাইডসে চড়ে খুব খুশি। এখন মোটর রাইডে চড়তে চাইছে। টিকিট কেটে লাইনে দাঁড়িয়ে মোটর রাইডের জন্য অপেক্ষা করছি।’

বিজ্ঞাপন

শিশু মেলার ব্যাবস্থাপক মো. রাজিবুল চৌধুরী রাজু সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদ উপলক্ষ্যে দর্শক সমাগম বেড়েছে। এবার পুরো শিশু মেলা রং করে নতুন রুপে সাজানো হয়েছে। তবে আমাদের ইচ্ছা থাকার পর স্থান সংকুলানের অভাবে রাইডের সংখ্যা বাড়াতে পারছি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ১৯৯৪ সাল থেকে শিশু মেলা ঢাকা সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে পরিচালনা করে আসছি। এবার শিশুদের জন্য কয়েকটি নতুন রাইড সংযোজন করেছি।’ শিশু মেলায় নানা ধরনের অর্ধশতাধিক রাইডস রয়েছে বলে জানান তিনি।

ঢাকার অন্যতম আরেকটি বিনোদন কেন্দ্র হচ্ছে আগাঁরগাওয়ের বিমান জাদুঘর। এদিন বিমান জাদুঘরে গিয়েও প্রচুর দর্শনার্থীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। বিমান জাদুঘরে বাড্ডা এলাকা থেকে ছেলেকে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন মাজহারুল হক। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিমান জাদুঘরে অনেকগুলো রাইডসের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের বিমান দেখতে পেয়ে ছেলে খুব খুশি। অন্য জাদুঘরের চেয়ে এটি ব্যতিক্রম। এখানে বিভিন্ন রাইডে যেমন চড়া যায়, তেমনি বিভিন্ন ধরনের বিমানের ভেতরে প্রবেশ করে এর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। বাস্তবে হয়ত কোনো সাধারণ মানুষের পক্ষে সামরিকসহ নানা ধরনের বিমানে চড়া কখনই সম্ভব না।’

পরিপাটি ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ বিরাজ করা এই জাদুঘর ঈদের দিন থেকে গড়ে প্রতিদিন ২০ হাজারের বেশি দর্শনার্থী ভিজিট করছেন বলে জানা গেছে। বিমানবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই জাদুঘরটিতে টিকিট কেটে যুদ্ধ বিমান, রাডার বিমান ও পরিবহন বিমানের ভেতরে প্রবেশ করার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া, ট্রেন, পুকুরে বোট চালনা, নাগরদোলা, ব্যাটারিচালিত কার, মোটর রাইডসহ ২০টির বেশি বিভিন্ন রাইড রয়েছে এখানে।

বিজ্ঞাপন

এদিন বিকেলে রাজধানীর বিজয় সরণি এলাকায় স্থাপিত সামরিক জাদুঘর ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে শত শত মানুষ টিকিটি কেটে ভেতরে প্রবেশের জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। তাদের অনেকেই শিশু সন্তানকে জাদুঘর দেখাতে নিয়ে এসেছেন। সেখানে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের বেশিরভাগ ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ঈদ উপলক্ষ্যে বেড়াতে এসেছেন। এ ছাড়া, ঢাকার বাইরে থেকেও এসেছেন অনেকে।

নারায়ণগঞ্জ থেকে সামরিক জাদুঘর দেখতে এসেছেন তাসমিয়া আক্তার নামে এক নারী। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘দুই ছেলেমেয়ে এবং হাজব্যান্ডকে নিয়ে সামিরক জাদুঘর দেখতে এসেছি। লম্বা লাইনে অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছি। বাচ্চারা ভেতরে প্রবেশের জন্য অস্থির হয়ে উঠছে।’

জাদুঘর দেখে বের হওয়ার সময় কথা হয় রাতুল আহমেদ নামের এক বেসরকারি চাকরিজীবীর সঙ্গে। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ভেতরে সামরিক বাহিনীর অনেক কিছু দেখলাম। সামরিকবাহিনী অনেক কিছু জানতে পেরেছি, যা আগে জানতাম না। জাদুঘর দেখে খুব ভালো লেগেছে।’

এদিন কলাবাগানের শেখ রাসেল শিশু পার্কেও গিয়েও শিশুসহ শত শত মানুষকে বিভিন্ন রাইডে চড়তে দেখা গেছে। এ ছাড়া, শ্যামলীর খেলার মাঠ, চন্দ্রিমা উদ্যান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও রমনা পার্কে ঈদ উপলক্ষ্যে শত শত মানুষকে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। অন্য সময়ে এসব পার্কে এত লোক সমাগম হয় না।

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন