সপ্তাহজুড়ে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর ঢাকার বাতাস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুদূষণ পরিমাপক সংস্থা আইকিউএয়ারের হিসাব অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে সপ্তাহজুড়ে ধীরে ধীরে বেড়েছে ঢাকার বায়ু দূষণ। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ১৩৭ স্কোর নিয়ে বিশ্বের ১২১টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান ৬ ষষ্ঠ।

এর আগে, ২০ এপ্রিল স্কোর ছিল ১০২, ২১ এপ্রিল ১০৭, ২২ এপ্রিল ১১৯, ২৩ এপ্রিল ১২২, ২৪ এবং ২৫ এপ্রিল ১৩৩। আইকিউএয়ার মানদণ্ড অনুযায়ী ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।

ঢাকার মডারেট বায়ুতে সেন্সিটিভ গ্রুপের ব্যক্তিদের ঘরের বাইরে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে আইকিউএয়ার। এ ছাড়াও বাইরে যেয়ে ব্যায়াম না করা এবং ঘরের জানালা বন্ধ রাখারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আজ ঢাকার আগে থাকা বাকি পাঁচটি শহরই এশিয়ার। ১ম অবস্থানে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু যার স্কোর ১৮৫। দ্বিতীয় অবস্থানে ১৫৭ স্কোর নিয়ে চীনের রাজধানী বেইজিং, ১৫৫ স্কোর নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়, চার-এ ১৫৩ স্কোর নিয়ে কলকাতা এবং পঞ্চম অবস্থানে ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিব যার স্কোর ১৪১।

তবে গত সপ্তাহে ১০১ স্কোর নিয়ে মডারেট অবস্থানে ছিল ঢাকার বাতাস। তার আগের শুক্রবার (১২ এপ্রিল) ঢাকার স্কোর ছিল ১৪৩ যা সেন্সিটিভ গ্রুপের জন্য ক্ষতিকর। এর আগে শুক্রবার (৫ এপ্রিল) ১৬০ একিউআই স্কোর নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে ছিল ঢাকা আর তার আগের শুক্রবার ১৭৪ স্কোর নিয়ে প্রথম অবস্থানে ছিল।

আইকিউএয়ারের তালিকা অনুযায়ী, ঢাকার বায়ু দূষণের প্রধান উৎস বাতাসে অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণার (পিএম ২.৫)’র উপস্থিতি। আজ ঢাকার বাতাসে পিএম ২.৫ এর উপস্থিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে ১০ গুণ বেশি। এর আগের দুই সপ্তাহে পর্যায়ক্রমে ৬.৭ গুণ ও ১০.৫ গুণ বেশি ছিল।

আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে ‘মাঝারি’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’ মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ধরা হয়।

বায়ুদূষণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন সংবেদনশীল গোষ্ঠীর ব্যক্তিরা যাদের মধ্যে আছেন বয়স্ক, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা ও জটিল রোগে ভোগা ব্যক্তি।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে যত মানুষ অকালে মারা যায়, তাদের ২০ শতাংশের মৃত্যুর কারণ বায়ু দূষণ। পরিবেশ দূষণের মধ্যে অকাল মৃত্যুর ক্ষেত্রে ঘরে ও বাইরে বায়ু দূষণকে সবচেয়ে বেশি হওয়ার কথা তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, অকালমৃত্যুর প্রায় ৫৫ শতাংশের কারণই বায়ু দূষণ। এ কারণে ২০১৯ সালে জিডিপির ক্ষতি হয়েছিল ৮ দশমিক ৩২ শতাংশ।

এ ছাড়া আইকিউএয়ারের ২০২৩ সালের বায়ুদূষণ বিষয়ক বৈশ্বিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বায়ুদূষণে গত বছর শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় স্থানে পাকিস্তান। আর রাজধানী শহর হিসেবে ঢাকার স্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। শীর্ষে ছিল ভারতের নয়াদিল্লি।

সারাবাংলা/আরএফ/একে