বিজ্ঞাপন

‘ড. কামালের পকেটে সবসময় টিকেট থাকে’

September 2, 2018 | 5:40 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ‘নির্বাচন নাও হতে পারে’ গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের এমন শঙ্কার প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তাদের কাছে আমার প্রশ্ন তারা আদৌও নির্বাচন চান কি না? বাংলাদেশের একটা শ্রেণি বসে থাকে অন্যরা ক্ষমতা পেলে তারা একটা পতাকা পায়, তাদের কদর বাড়ে।’

গণভবনে রোববার (২ আগস্ট) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্নোত্তর পর্বে এ কথা বলেন। বিমসটেক সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে দেশে ফেরার পর প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে তার অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।

গত শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে ড. কামাল বলেন, দেশের পরিস্থিতি এমন হচ্ছে যে নির্বাচন নাও হতে পারে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। আর নির্বাচন হলে যেন ভোট চুরি না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। যারা নির্বাচনকে অন্যদিকে প্রভাবিত করে সুশাসনের পরিবর্তে কুশাসন সৃষ্টি করতে চায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

গত নির্বাচনে অর্ধেক আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রশ্ন থাকে এতগুলো এমপি আনকনটেস্টেড। একটা বড় দল নির্বাচনে এলো না। তাহলে তো এমন হবেই। খুলনায় সালাম মোর্শেদকে নোমিনেশন দিলাম প্রার্থী পাওয়া গেল না। সে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। তাকে কী বলবেন অবৈধ? বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টিও তো সংবিধানেও আছে।’

ড. কামাল হোসেনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ড. কামালও তো একইভাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু তার সিট ছেড়ে দিয়েছিলেন বলে ক্ষমতায় আসতে পেরেছিলেন। বাংলাদেশে তো দল দুইটা। আওয়ামী লীগ এবং অ্যান্টি আওয়ামী লীগ। এটা ভালো যে তারা জোট করেছে, সেটা থাক। ড. কামালের পকেটে সবসময় টিকেট থাকে। যাতে কিছু একটা হলেই বিমানে উঠে বিদেশ পাড়ি দিতে পারে।’

নতুন রাজনৈতিক মোর্চা যুক্তফ্রন্টের অন্যতম প্রবীণ নেতা বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়াও তাকে সম্মান দেননি। বঙ্গভবন থেকে বের করে রেল লাইন দিয়ে দৌড় দেওয়ালেন। কাদের সিদ্দিকীও আমাদের সঙ্গে ছিলেন। কিন্তু কে যেন বুদ্ধি দিলো, রিজাইন করে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে দাঁড়ালেন। ভাবলেন ভোট পেয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন এমন স্বপ্ন দেখেছিলেন। পরে নৌকা ছেড়ে দিয়ে তিনি হেরে গেলেন।’

বিজ্ঞাপন

‘মান্না আমাদের পার্টি করতে এসেছিলেন। স্বস্তি বোধ করেননি। সারাজীবন আওয়ামী লীগের বিপক্ষে লিখেছেন। আমি বললাম এত ভালো লেখেন, আপনার লেখার হাত ভালো। এতদিন বিপক্ষে লিখেছেন এবার পক্ষে লেখেন। তিনি লিখতেই পারেন না। লিখতে বললেই মান্না জুড়ে দেন কান্না।’

‘তাদের নেতৃত্বে জোট হয়েছে থাক, অন্তত কনটেস্ট হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু দেশকে স্বাধীন করে দিয়ে গেলেন তাকে হত্যা করা হলো এ দেশে সব সম্ভব। দিনের আলোয় গ্রেনেড হামলা করা হয়েছে, গুলি করা হয়েছে, ৭৬ কেজি বোমা। বিমানের নাটবল্টুও খুলে গেছিল। তারপরও বেঁচে আছি।’

‘৭৫ এ আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। ১০ বছরের ছেলে রাসেলকেও হত্যা করা হয়েছে। কেন হত্যা করা হলো যাতে বঙ্গবন্ধুর বংশের রক্ত যাতে না থাকে। অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে, কিন্তু কোনো ষড়যন্ত্র সফল হয়নি।’

বিজ্ঞাপন

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে চতুর্থ বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের (বিমসটেক)’র চতুর্থ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

ওই সম্মেলনে যোগ দিতে ৩০ আগস্ট নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সফরকালে বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি চতুর্থ বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের (বিমসটেক) শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী সেশন এবং শুক্রবার সকালে সমাপনী অধিবেশনসহ সম্মেলনের বিভিন্ন ইভেন্টে অংশ নেন। বিমসটেকভুক্ত অন্যান্য দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে সম্মেলনে যোগ দেন ধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্যও রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সফরের প্রথমদিন বিকেলে কাঠমান্ডুর হোটেল সোয়ালটি ক্রাউনি প্লাজায় চতুর্থ বিমসটেক সম্মেলনের উদ্বোধনী সেশন শুরু হয়। নেপালের জাতীয় সঙ্গীতের পরিবেশনের মধ্যে শুরু হয় সম্মেলন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ভুটানের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দাসো শেরিং ওয়াংচুক, শ্রীলংকান প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রিয়ুথ চ্যান-ও-চার, মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দেন।

কাঠমান্ডুর হোটেল সোয়ালটি ক্রাউন প্লাজায় বিকালে সাতটি দেশের আঞ্চলিক এই জোটের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও বিমসটেক সম্মেলনের সাইড লাইনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি, ভুটানের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দাসো শেরিং ওয়াংচুকের সঙ্গে বৈঠক করেন।

শুক্রবার সকালে বিমসটেকের সমাপনী অনুষ্ঠানসহ রিট্রিট সেশনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। একটি যৌথ ঘোষণার মধ্য দিয়ে এবারের শীর্ষ সম্মেলনের সমাপ্তি ঘটে।

এই উপ-আঞ্চলিক সংস্থাটি ১৯৯৭ সালের ৬ জুন ব্যাংকক ঘোষণার মধ্য দিয়ে গঠিত হয়। এর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ৫টি দক্ষিণ এশিয়ার। এগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা। অন্য দুটি দেশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড। বিশ্বায়নের আগ্রাসন মোকাবেলা করে আঞ্চলিক সম্পদ এবং ভৌগোলিক সুবিধাদি কাজে লাগিয়ে সবার স্বার্থে পারষ্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা হচ্ছে এই ধরনের জোট গঠনের উদ্দেশ্য।

সারাবাংলা/এটি/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন