বিজ্ঞাপন

ভরা মৌসুমে অতিথি পাখি শূন্য জাবি ক্যাম্পাস

February 3, 2018 | 4:08 pm

তহিদুল ইসলাম, জাবি করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

অতিথি পাখি ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় যেন এক সূত্রে গাঁথা। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম শুনলেই পাখির জলকেলির কথা মনে পড়ে যায়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ও একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাকৃতিক পরিবেশ, অতিথি পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে সুনাম রয়েছে। এ জন্য ক্যাম্পাসে শীতকালে প্রচুর দর্শনার্থীদের সমাগম হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে অতিথি পাখি শূন্য হয়ে পড়েছে জাবির লেকগুলো।

পাখি কমে যাওয়ার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্পক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন পাখি বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন পাখি সংরক্ষণের জন্য যে সচেতনতামূলক পোস্টার লাগানো হয়েছে সেটি কেউ মানছে না। পাখি সংরক্ষণে সবাইতে আন্তরিক হবার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, প্রতি বছর শীতের শুরুতে অতিথি পাখি ক্যাম্পাসে আসে। আবার শীত শেষে চলে যায় আপন গন্তব্যে।

এ বছর অতিথি পাখি শীতের আগেই ক্যাম্পাসে আসে। জাবির লেকগুলোতে আসার জন্য যেন মুখিয়ে ছিল পাখিরা। তাদের তর সয়ছিল না। প্রথমে সুইমিংপুল সংলগ্ন লেকে অতিথি পাখির দেখা মেলে। এরপর পাখি স্থানান্তরিত হয়ে চলে আসে পরিবহন চত্ত্বর ও রেজিস্ট্রার ভবনের সামনের লেকে। এরপর বেশ কিছুদিন এ সব লেকে অতিথি পাখির বিচরণ দেখা যায়। তবে এখন শীত শেষ না হতেই পাখি শূন্য ক্যাম্পাস।

তবে অতিথি পাখি চলে যাওয়ার কারণ হিসেবে প্রশাসনের সদিচ্ছাকে দায়ি করেছেন পাখি বিশেষজ্ঞরা। অতিথি পাখি সংরক্ষণের জন্য লেকের পাশে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়। এবার অতিথি পাখি আসার পরে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে। আর এটা করতে গিয়ে পাড়ের ঝোপঝাড় পরিস্কার করা হয়েছে। এতে লেকের পাড় দীর্ঘদিন উন্মুক্ত থাকার জন্য পাখির স্বাভাবিক পরিবেশকে ব্যাহত করেছে।

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়া ক্যাম্পাসের লেকগুলোর চারপাশে দর্শনার্থীদের জটলা লেগেই থাকে। অতিথিরা পাখি দেখেই সন্তুষ্ট হননা তারা। অতিথি পাখির ছবি তোলেন, ঢিল ছোড়েন। একারণে অতিথি পাখির স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে।

অতিথি পাখি যেসব লেকে বসে তার আশেপাশে উচ্চ শব্দে হর্ণ বাজানো, শব্দ করা নিষেধ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। মাইকের উচ্চ শব্দের কারণে বিরক্ত হয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেছে অতিথি পাখি।

এ বিষয়ে জানতে জাবি রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিককে ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

বিজ্ঞাপন

স্টেট অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুল আমিন বলেন, দর্শনার্থীদের অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে বিরক্ত হয়ে অতিথি পাখি চলে যাচ্ছে। দর্শনার্থীরা অনেক সময় কাঁটাতারের বেড়া টপকে ভেতরে গিয়ে ছবি তোলে। এটাও একটা বড় কারণ বলা যেতে পারে।

প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামরুল হাসান বলেন, অতিথি পাখি নিরিবিলি পরিবেশে থাকতে পছন্দ করে। ক্যাম্পাসে দর্শনার্থীদের উৎপাত বেড়ে গেছে। অতিথি পাখি বিরক্ত হয়ে অন্য লেকে স্থানান্তরিত হচ্ছে।

প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন বলেন, দর্শনার্থীরা অনেক সময় বিভিন্ন উচ্ছৃষ্ট অংশ লেকে ফেলে দিচ্ছে। একারণে পাখির বসবাসের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি দর্শনার্থীদের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করার অনুরোধ জানান।

এ বিষয়ে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, পাখিকে ভালবাসা, প্রকৃতিকে ভালবাসা আমাদের প্রাণের ভেতর থেকে আসতে হবে। ডোবাগুলোতে প্লাস্টিকের বাক্স পড়ে থাকে। বিকেলে যে ময়লা পড়ে মনে তাতে বোঝা যায় না লেকে পাখি আছে না ময়লা আছে। আমরা ময়লা ফেলার জন্য বাঁশের ঝুড়ি বানিয়েছি। ময়লা তাতে ফেলা উচিত।

সারাবাংলা/ এমএইচ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন