বিজ্ঞাপন

সুযোগ বাড়লো সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ার

September 2, 2018 | 8:56 am

।। জাকিয়া আহমেদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: আগামী ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির জন্য সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে মোট ৫০০ আসন বাড়িয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। গত ৮ আগস্ট আসন্ন শিক্ষাবর্ষের জন্য মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি সংক্রান্ত সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বর্তমানে ৩১টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ৩ হাজার ৩১৮টি আসন রয়েছে। বিগত প্রায় এক যুগ ধরে সরকারি কলেজগুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে কোনো আসন বাড়ানো হয়নি। নতুন করে এর সঙ্গে যোগ হলো ৫০০ আসন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘আসন সংখ্যা বাড়ানোর ফলে আরও বেশি সংখ্যক মেধাবীরা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে।’

বিজ্ঞাপন

গত ১৬ আগস্ট মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা-২০১৮ এর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে ভর্তি পরীক্ষার ন্যূনতম যোগ্যতা হিসেবে জিপিএ-৯ এবং উপজাতি ও পার্বত্য জেলার অধিবাসীদের জন্য জিপিএ-৮ রাখা হয়েছে।

গত ২৭ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার অনলাইন আবেদন এবং জমা দেওয়ার শেষ তারিখ আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর। আর বিডিএস ভর্তি অনলাইন আবেদনে করা যাবে ১৬ অক্টোবর থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। আর এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৫ অক্টোবর এবং বিডিএস (ডেন্টাল) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৯ নভেম্বর।

মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা বাড়ানো প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড, সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা এবং হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বিবেচনা করে গুণগত চিকিৎসা শিক্ষা এবং উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে জনগণের জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

মেডিকেল কলেজে আসন বাড়ানো বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. আব্দুর রশীদ বলেন, ‘শিক্ষার মান যেন বজায় থাকে সেজন্যই সরকারি আসন সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু বেসরকারি মেডিকেল কলেজে আসন বাড়ানো হবে না।’

তিনি জানান, কয়েক মাস আগে বেশ কিছু মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের আসন সংখ্যা বাড়ানোর জন্য আবেদন করে, কিন্তু সেখান থেকে ৪ থেকে ৫টি কলেজের আসন বাড়ানো হয়েছে।

অধিদফতর থেকে জানা যায়, সরকারি মোট ৩১টি মেডিকেল কলেজের মধ্যে রাঙ্গামাটি, হবিগঞ্জ ও পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে আসন বাড়ানো হয়নি। তবে বাকিগুলোর মধ্যে- আটটি মেডিকেলে ২৩টি, ৫টিতে ১৯টি, ৯টিতে ১৩টি, ৪টি মেডিকেলে ১৪টি, ১টিতে ১৫টি ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৩টি আসন বৃদ্ধি করা হয়েছে।

গতবছর এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় ৮৫ হাজার ২০৭ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে পাস করেছিলেন ২৯ হাজার ১৮৩ জন।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি সংক্রান্ত সভার অন্যতম সদস্য চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ইসমাইল খান বলেন, ‘সরকারি মেডিকেল কলেজে আসন বাড়ানো হয়েছে চিকিৎসা শিক্ষায় যেন কোনও অসঙ্গতি না থাকে। অপরদিকে, বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পর্যাপ্ত অবকাঠামো, প্রয়োজনীয় শিক্ষক ও শিক্ষা উপকরণ নেই, নেই রোগী। যার কারণে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের পড়ে একজন ভালো চিকিৎসক হওয়ার সম্ভব নয়।’

অপরদিকে, স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশীদ-ই মাহবুব সারাবাংলা’কে বলেন, ‘এই ৫০০ আসন বৃদ্ধির ফলে চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়বে। সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা একটি ‘বিগ এমাউন্ট’ বলেই আমি মনে করছি।’

‘চিকিৎসক তৈরির উদ্দেশ্য দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় ভূমিকা রাখা এবং সেখানে চিকিৎসকের সংখ্যা বেশি হবে। কিন্তু মেডিকেল শিক্ষা কোয়ালিটির জন্য উপযুক্ত শিক্ষক, ল্যাবরেটরি, হাসপাতাল, টেকনোলজি-কোনটাই বেশি নেই, হাতে গোণা কয়েকটি কলেজ ছাড়া। যদিও বিএমডিসি (বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল) স্বীকৃতি দিচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি দিচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে ঘাটতি কোথাও কোথাও থেকেই যাচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে দক্ষ জনশক্তি পাওয়া আমাদের সমস্যা হয়ে গেছে’, বলেন এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।

অধ্যাপক ডা. রশীদ-ই মাহবুব আরও বলেন, ‘তবে যেহেতু সরকার ৫০০ আসন বাড়িয়েছে, এর একমাত্র সুবিধা হচ্ছে এই ৫০০ মেধাবী শিক্ষার্থী পাবলিক মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পাবে। তাদের খরচ কম লাগবে। এছাড়া আর কোনও বেনিফিট আমি দেখছি না।’

সারাবাংলা/জেএ/এমও

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন