বিজ্ঞাপন

আরও ৯ পণ্য অফ-ডকে খালাস চায় বন্দর, কাস্টমসের ‘না’

September 21, 2018 | 4:17 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বেসরকারি কনটেইনার ডিপোতে (অফ-ডক) ৪৫ ধরনের আমদানি পণ্য খালাস করতে চায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে অফ-ডকে খালাস হচ্ছে ৩৭ ধরনের পণ্য। আরও ৯ ধরনের পণ্য খালাসের অনুমতি চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে বন্দর কতৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত আগস্টে ৯টি পণ্য খালাসের অনুমতি চেয়ে এনবিআর চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন বন্দর চেয়ারম্যান কমডোর জুলফিকার আজিজ। এর আগেও তিন দফায় চিঠি দিয়েছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে এনবিআরের সাড়া মেলেনি।

জাহাজ ও কনটেইনার জট কমাতে অফ-ডকে আরও ৯ ধরনের পণ্য খালাসের যুক্তি বন্দর দিলেও কাস্টমস বলছে, বেসরকারি ডিপোগুলোর সক্ষমতা না বাড়িয়ে নতুন ৯টি পণ্য খালাসের অনুমতি দিলে জটিলতা বাড়বে।

বিজ্ঞাপন

মূলত কাস্টমসের এই বিরোধিতার কারণেই চার দফা চিঠি দেওয়ার পরও এনবিআরের অনুমতি মিলছে না বলে জানিয়েছেন সূত্র।

চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (পরিবহন) গোলাম সরওয়ার সারাবাংলাকে বলেন, বেসরকারি ডিপোতে এখন ৩৭ ধরনের পণ্য খালাস হচ্ছে। আমরা চাই আরও ৯ ধরনের পণ্য সেখানে খালাস হোক। তাহলে মোট ৪৫ ধরনের পণ্য খালাস হবে অফ-ডকে। এতে বন্দরের ইয়ার্ডগুলোতে আরও বেশি কনটেইনার রাখা যাবে। তখন বহির্নোঙ্গরে আর জাহাজজট হবে না। ইয়ার্ডেও বেশি কনটেইনার রাখা যাবে।

সূত্রমতে, চট্টগ্রাম বন্দরে গম, চাল, সরিষা, ওয়েস্ট পেপার, ছোলা, ডাল, কাঁচা তুলা, পশুখাদ্য, স্ক্র্যাপ, হার্ড কোক, কার্বন ব্ল্যাক, মার্বেল চিপস, বল ক্লে, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, সার, সোডা অ্যাশ, পিভিসি রেজিন, স্টেপল ফাইবার, কন্টেইনারাইজড স্কয়ার বা রাউন্ড লগ, খেজুর, চিনি, বিটুমিন, বেভারেজের খালি ক্যান, মার্বেল পাথর, সোডিয়াম সালফেট, উড পাল্প, গ্লোবাল সল্ট, সয়াবিন মিল বা এক্সট্যাকশন, ডিডিজিএস, রাইস ব্রান, কর্ন গ্লুটেন মিল, র‌্যাপ সিড এক্সট্র্যাকশন, পাম কেমেলস, মেইজ, সয়াবিনসহ ৩৭টি পণ্য বেসরকারি ডিপো থেকে খালাস হয়।

বিজ্ঞাপন

আরও যে ৯টি পণ্য অফ-ডকে খালাস চায় চট্টগ্রাম বন্দর, সেগুলো হচ্ছে- পলিপ্রপিলিন, পেপার, আসবাবপত্র, স্কিমড মিল্ক পাউডার, ওয়ে মিল্ক পাওডার, আয়রন বা স্টিড পণ্য, সব ধরনের লবণ, টেলো ও টাইলস।

সূত্রমতে, এই ৯টি পণ্য খালাসের অনুমতি চেয়ে ২০১৫ সালের ২৯ আগস্ট প্রথম এনবিআরে চিঠি দেয় বন্দর কর্পক্ষ।

এরপর ২০১৬ সালের ২৫মে আরেক দফা চিঠি দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই ও সবশেষ গত ১৪ আগস্ট চিঠি দেওয়া হয়।

সূত্রমতে, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য আমদানিতে ব্যবহার হয় এলসিএল (লেস কনটেইনার লোড) ও এফসিএল (ফুল কনটেইনার লোড) এই দুই ধরনের কনটেইনার। এলসিএল কনটেইনারে আসা পণ্য অফ-ডকে এবং এফসিএল কনটেইনারে আসা পণ্য বন্দরের ইয়ার্ড খালাস হয়।

বিজ্ঞাপন

একটি ২০ ফুটের কনটেইনার থেকে খালাস হওয়া পণ্য পরিবহনে লাগে দুটি ট্রাক। আর ৪০ ফুটের কনটেইনার থেকে পণ্য নিতে তিনটি ট্রাকের প্রয়োজন।

চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বন্দরের অভ্যন্তরে পণ্যবোঝাই ট্রাক চলাচলের কারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়। স্বাভাবিক কনটেইনার পরিবহনে সমস্যা হয়।

আবার জাহাজ থেকে এলসিএল কনটেইনার নামানোর পর সেগুলো বন্দরের ইয়ার্ডে রাখা হয়। কিন্তু অনেক সময় আমদানিকারকরা সঠিক সময়ে পণ্য খালাস করেন না। এতে ইয়ার্ডে কনটেইনারের জট সৃষ্টি হয় বলে মত দিয়েছেন বন্দরের কর্মকর্তারা।

এই অবস্থায় বাইরে থেকে খালাস নিলে বন্দরের ভেতরে জট কমবে বলেও মত তাদের।

চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার ড. এ কে এম নুরুজ্জামান বলেন, বন্দরের চিঠির প্রেক্ষিতে এনবিআর আমাদের কাছে মতামত চেয়েছিল। আমরা বলেছি-বেসরকারি ডিপোগুলোর অধিকাংশই নীতিমালা মানে না। তাদের সক্ষমতার অভাব আছে। সুতরাং আরও ৯টি পণ্য খালাসের অনুমতি দেওয়া সমীচীন হবে না।

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন