September 28, 2018 | 1:49 pm
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা শাসকগোষ্ঠীর ‘মনের মানুষে’ পরিণত হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেন, ‘এবার নির্বাচনে না এলে নিবন্ধন ঝুঁকিতে পড়বে বিএনপি।’
সিইসির এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, কুমিল্লায় ডিসি থাকার সময় জনতার মঞ্চ তৈরি করেছিলেন এবং খালেদা জিয়ার ছবি ভাঙচুর করেছিলেন আজকের এই সিইসি। ক্ষমতাসীনদের সাথে মিশতে মিশতে, বাকশালী সংস্কৃতির স্পর্শ পেতে পেতে শাসকগোষ্ঠীর মনের মানুষে পরিণত হয়েছেন তিনি। সিইসি কে এম নুরুল হুদা একবোরেই খাঁটি বাকশাল মার্কা মুখপাত্রে পরিণত হয়েছেন।’
‘বিএনপি নিবন্ধন ঝুঁকিতে পড়বে’— প্রধান নির্বাচন কমিশনার এই কথা বলে বিএনপিকে ভয় দেখাচ্ছেন, যাতে শেখ হাসিনার অধীনেই একতরফা বাকশালী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিএনপি?— প্রশ্ন রিজভীর।
তিনি বলেন, ‘ভোট ডাকাতির নির্বাচনের পরও যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে দাবি করেন, সরকারি দলের ভোট নিয়ে অনাচারের বিষয়ে ‘স্পীকটি নট’ থাকেন, তিনি যে ক্ষমতাসীনদের ভাষাতেই কথা বলবেন— সেটাই স্বাভাবিক। তার কথা শুনে মনে হয়, পাতানো নির্বাচনের ব্যবস্থা করতেই সর্বশক্তি নিয়োগ করছেন তিনি।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ক্ষমতাসীনদের দাসত্ব করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘একটি জনসম্পৃক্ত রাজনৈতিক দলের অতীত অর্জন, কীর্তি, সংগ্রাম ও অঙ্গীকার রক্ষার মধ্য দিয়ে জনগণের ভেতরে যে মজবুত অবস্থান তৈরি হয়, সেই দলের রেজিষ্ট্রেশন থাকে জনগণের হাতে। জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলকে কাগুজে নিবন্ধনের ঝুঁকির কথা বলে লাভ হবে না।’
‘জনগণের বিচারই রাজনৈতিক দলের টিকে থাকার মাপকাঠি’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোনো আত্মা বিক্রি করা ব্যক্তির হুমকিতে নিষ্ঠুর স্বৈরশাসকের আক্রমণ উপেক্ষা করে লড়াইয়ে লিপ্ত সাহসী জাতীয়তাবাদী শক্তির নেতাকর্মীরা বিচলিত হবে না। বরং ভোটাধিকার হরণের জন্য দায়ি সিইসি ভোটারদের অভিশাপে নিজের আত্মপতনের অন্ধকার গহব্বরে হারিয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠূ নির্বাচন করাটা সিইসি কর্তব্য বলে মনে করেন না। আওয়ামী সরকারের প্রতি আনুগত্যই তাঁর শেষ কথা। আর এজন্যই তিনি ভোটকেন্দ্রে বেশিক্ষণ সাংবাদিকদের থাকতে দিতে চান না। ক্ষমতাসীনদের ভোট ডাকাতি, জালভোট প্রদান, বলপ্রয়োগ করে ভোটকেন্দ্র থেকে বিরোধী এজেন্টদের বের করে দেওয়া ও ভোটের ফল ছিনিয়ে নিতে সহায়তা করতেই এই পদক্ষেপের কথা বলছেন সিইসি।’
রিজভী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সম্মান রক্ষার্থে বিবেক বিকিয়ে দেওয়া এই সিইসি-কে পদত্যাগে বাধ্য করতে জনগণ এখন ঐক্যবদ্ধ। কে এম নুরুল হুদাদের মতো বিশ্বস্ত সেবকদের কারণেই শেখ হাসিনা পরীক্ষিত স্বৈরতন্ত্র কায়েম করতে পেরেছেন।’
‘আমি সিইসি-কে জানিয়ে দিতে চাই। বিএনপির নিবন্ধন নিয়ে কোনো অশুভ প্ল্যান থাকলে অবৈধ সরকারের পাশাপাশি সিইসিকেও পতনের ঝুঁকিতে পড়তে হবে’— বলেন রিজভী।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেটর রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহ-সাংগঠকিন সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/জেএএম
আরও পড়ুন