বিজ্ঞাপন

জন্ম নিয়েছিলেন বাংলাদেশের ‘ব্রাডম্যান’

September 29, 2018 | 6:42 pm

।। স্পোর্টস ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর ২০০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে যারা টেস্ট খেলেছেন তাদের মধ্যে একজনকে আলাদা করে রাখাই যায়। যাকে ডাকা হয় বাংলাদেশের ‘ব্রাডম্যান’। সমুদ্র উপকূলীয় জেলা শহর কক্সবাজারে ১৯৯১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর জন্ম নেওয়া মুমিনুল হক আজ ২৭ বছরে পা রাখলেন। দুবাই থেকে মুমিনুল আজই ফিরছেন এশিয়া কাপের মিশন শেষে।

২০১৩ সালের ৮ মার্চ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের ৬৭তম টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে মুমিনুলের সাদা পোশাকে অভিষেক হয়। তারও আগে ২০১২ সালের ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশের ১০৪তম ওয়ানডে ক্রিকেটার হিসেবে প্রথম মাঠে নামেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ‘টেস্ট স্পেশালিস্ট’ তকমাটা বেশ ভালোভাবেই গায়ে সেঁটেছে বাংলাদেশ দলের বাঁহাতি ব্যাটসম্যান মুমিনুল হকের। বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এক টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করার দারুণ কীর্তি আছে একমাত্র তার দখলে।

বাংলাদেশের একমাত্র ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেএসপির ছাত্র ছিলেন মুমিনুল। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই বয়সভিত্তিক ঘরোয়া ক্রিকেটে নির্ভরযোগ্য বামহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে আবির্ভূত হন তিনি। ২০০৮-০৯ মৌসুমে ঢাকা বিভাগীয় ক্রিকেট দলের হয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রিকেট দলের বিপক্ষে প্রথমশ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় মমিনুলের। ২০১০ সালে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য হন তিনি। ২০১১ সালে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যান। আর নিজের প্রথম ম্যাচেই ১৫০ রানের ইনিংস খেলে নিজের জাত চেনান মুমিনুল। শ্রীলঙ্কার গলেতে জাতীয় দলের হয়ে নিজের অভিষেক টেস্ট ম্যাচে ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন। সিরিজে ৫২.০০ রান গড়ে ১৫৬ রান সংগ্রহ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

২০১৩ সালে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টেস্টে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৭৪ বলে ১৮১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস উপহার দেন মুমিনুল। টাইগারদের হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ ৮টি সেঞ্চুরির মালিক তামিম ইকবাল। তার পরেই আছেন মুমিনুল। মোহাম্মদ আশরাফুলের সমান ৬টি সেঞ্চুরি করেছেন এই লিটল মাস্টার। সাকিব-মুশফিক করেছেন ৫টি করে টেস্ট সেঞ্চুরি। সাদা পোশাকে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রান করার দিক থেকে শীর্ষে সাকিব (২১৭)। দুইয়ে তামিম (২০৬), তিনে মুশফিক (২০০) আর চারে আশরাফুল (১৯০)। পরের দুটি জায়গা মুমিনুলের দখলে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করেছিলেন ১৮১ রান। আর চলতি বছরই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ১৭৬ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে করেছিলেন ১০৫ রান।

টেস্টে ধারাবাহিকভাবে হাফ-সেঞ্চুরি করার তালিকায় দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স এগিয়ে (১২টি)। মুমিনুল এই তালিকায় দুইয়ে। বাঁহাতি এই টাইগার মিডলঅর্ডার ছাড়াও টানা ১১টি করে ফিফটি করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভিভ রিচার্ডস, ভারতের গৌতম গম্ভীর, বীরেন্দ্রর শেওয়াগ, শচীন টেন্ডুলকার, ইংল্যান্ডের জন এডরিচরা।

২৭ বছরে পা রাখা মুমিনুল এখন পর্যন্ত ২৯টি টেস্টের পাশাপাশি খেলেছেন ২৮টি ওয়ানডে আর ৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। টেস্টে ৬ সেঞ্চুরি, ১২ হাফ-সেঞ্চুরিতে করেছেন ২১৭০ রান। ব্যাটিং গড় ৪৩.৪০। ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টিতে সেভাবে আলো ছড়ানোর সুযোগ পাননি বিভিন্ন কারণে। সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপের জন্য প্রথমে ডাক না পেলেও পরে দলের ১৬তম সদস্য হিসেবে জায়গা পান। ওয়ানডে একাদশে জায়গা পান সাড়ে তিন বছর পর। আবুধাবিতে খেলেছেন আফগানিস্তান আর পাকিস্তানের বিপক্ষে। তার আগে ২০১৫ বিশ্বকাপে মেলবোর্নে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সবশেষ ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলেন মুমিনুল। গত অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে তাকে ফেরানো হয়েছিল স্কোয়াডে। কিন্তু কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ তার হয়নি।

বিজ্ঞাপন

এশিয়া কাপের ঠিক আগে আয়ারল্যান্ডে লিস্ট ‘এ’র ৫০ ওভারের ম্যাচে আইরিশদের বিপক্ষে মুমিনুল খেলেছিলেন ১৮২ রানের ইনিংস। সেই সফরে চার ম্যাচে করেছিলেন ২৯৭ রান। ৫ ম্যাচে ৭৪.২৫ গড়ে ১০০ স্ট্রাইক রেটে ২৯৭ রান করে ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনিই।

সারাবাংলা/এমআরপি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন