বিজ্ঞাপন

যুদ্ধাপরাধী-ধর্মান্ধদের নির্বাচনে প্রত্যাখানের আহ্বান

December 16, 2018 | 9:51 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম ব্যুরো: নির্বাচনে স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী দল ও পরিবারের সদস্য এবং ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানিয়েছেন শহীদ জায়া বেগম মুশতারী শফি।

রোববার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর চেরাগি মোড়ে উদীচীর বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।

একাত্তরে স্বামী ও ভাই হারানো মুশতারী শফি বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন। জাতি হিসেবে আমরা খুবই সংকটময় সময় পার করছি। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে যাদের দণ্ড হয়েছে তাদের পরিবারের সদস্য, স্বাধীনতা বিরোধীদের আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে দেখছি। উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর প্রার্থীও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এটা আমাদের মধ্যে শঙ্কার সৃষ্টি করেছে।’

বিজ্ঞাপন

সমবেতদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী দল ও পরিবারের সদস্য এবং ধর্মান্ধ প্রার্থী যে দল থেকেই নির্বাচন করুক না কেন, তাদের প্রত্যাখ্যান করুন। আমি একাত্তরে আমার স্বামীকে হারিয়েছি, ভাইকে হারিয়েছি। অনেক রক্তের বিনিময়ে পাওয়া দেশটাকে আমরা যুদ্ধাপরাধী-ধর্মান্ধদের হাতে তুলে দিতে পারি না।’

‘মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনায় বিশ্বাসী, বাহাত্তরের সংবিধানে যারা বিশ্বাস করেন, গরীব-মেহনতী মানুষের জন্য যারা রাজনীতি করেন তাদের নির্বাচিত করুন, তাদের সংসদে পাঠান’- বলেন মুশতারী শফি।

উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক শীলা দাশগুপ্তার সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল মনসুর ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ডা. চন্দন দাশ।

বিজ্ঞাপন

আবুল মনসুর বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত যে চেতনা যদি প্রতিষ্ঠিত করা না যায়, তাহলে বিজয় দিবস পালন অর্থহীন হয়ে যায়। কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীকে ফাঁসি দেওয়া মানেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন নয়। যুদ্ধাপরাধীদের সহযোগী, আদর্শের অনুসারী যারা আছে তাদের সঙ্গে আদর্শিক লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। এই দেশকে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’

চন্দন দাশ বলেন, ‘শুধু যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসিতেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী নাগরিকদের সন্তুষ্ট হলে চলবে না। সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে আদর্শের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। নতুন প্রজন্মের নব্য রাজাকারদেরও আদর্শিকভাবে পরাজিত করতে হবে।’

সভা শেষে গণসঙ্গীত পরিবেশন করে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী এবং অভ্যুদয় সঙ্গীত অঙ্গণ। আবৃত্তি পরিবেশন করে প্রমা ও বোধনের শিল্পীরা।

এর আগে নগরীর চেরাগি চত্বরে দিনভর প্রদর্শিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দুর্লভ আলোকচিত্র। সকাল ৮টা থেকে এই আলোকচিত্র প্রদর্শনী সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। সেই আলোকচিত্রে উঠে এসেছে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের শুরু পর্যন্ত বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের পটভূমি। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং তাদের দেশিয় দোসর রাজাকার-আলবদরদের নির্মমতার চিত্রও ফুটে উঠেছে সেখানে।

বিজ্ঞাপন

আর দুর্লভ সেসব আলোকচিত্র দেখতে সকাল থেকে চেরাগিতে ভিড় জমায় বিভিন্ন বয়সী শত শত নারী-পুরুষ ও শিশুরা।

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন