বিজ্ঞাপন

১১৬ উপজেলায় ভোট শেষ, চলছে গণনা

March 18, 2019 | 4:38 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে দেশের ১১৬ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। সোমবার (১৮ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এই ভোট বিরতিহীনভাবে চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এখন চলছে ভোট গণনা। এবার মোট পাঁচ বিভাগের ১৬ জেলায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান এই তিনটি পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচন উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, এপিবিএনের পাশাপাশি বিডিআর ও সেনাবাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে।

ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। নির্বাচনে কোথাও কোনো রকম অনিয়ম হলে তাৎক্ষণিকভাবে সেই কেন্দ্রের নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া হবে। এবার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় বিভিন্ন উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অনেকে নির্বাচিত হচ্ছেন। কেউ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলে ইসির কোনো করণীয় নেই।’

বিজ্ঞাপন

নির্বাচনে কোথাও কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। তবে নওগাঁর মহাদেবপুরে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বপালনের সময় মাজেদুল ইসলাম (৫০) নামে একজন প্রিজাইডিং কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টায় উপজেলার পাঠাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বরত অবস্থায় তিনি মারা যান।

মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আজ সকালে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনের জন্য ওই ভোটকেন্দ্রে যান। এসময় হঠাৎ করে তার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। পরে চিকিৎসার জন্য মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

২৯ উপজেলায় সব প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত

এছাড়া রাঙামাটিতে বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর ও কাউখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পাঁচ চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। একইসঙ্গে সাত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীও তাদের ভোট বর্জনের খবর জানিয়েছেন। ভোট বর্জন করে নির্বাচন স্থগিতের আবেদন করেছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

দ্বিতীয় ধাপে মোট প্রার্থী ও ভোটার সংখ্যা: দ্বিতীয় পর্যায়ে পাঁচ বিভাগের ১৬ জেলার ১১৬টি উপজেলায় মোট ১ হাজার ৩২৫ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩৭৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৪৮ এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪০০ জন। এসব উপজেলায় মোট ভোটার এক কোটি ৭৯ লাখ ৯০০৬ জন। কেন্দ্র সংখ্যা ৭ হাজার ৩৯টি।

নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী: উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে করতে নির্বাচনের আগের দুইদিন, নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচনের পরের দুইদিনসহ মোট পাঁচদিন নির্বাচনি এলাকায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন থাকছে। নির্বাচনের দিন প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ১৪ জন এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৬ জন করে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ইতিমধ্যে কমিশন থেকে বেশ কিছু দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিয়েছে ইসি।

বিভিন্ন কারণে ১৩ উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে না: দ্বিতীয় ধাপের ১২৯টি উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও নির্বাচন হচ্ছে ১১৬টি উপজেলায়। এর মধ্যে গোপালগঞ্জের পাঁচটি উপজেলার নির্বাচন দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় এবং দিনাজপুর সদর উপজেলার নির্বাচন চতুর্থ ধাপে নেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নির্বাচন স্থগিত হয়েছে। অন্যদিকে নওগাঁ সদর, পাবনা সদর, ফরিদপুর সদর, নোয়াখালীর হাতিয়া, চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই ও রাউজান এই ছয়টি উপজেলায় সব পদে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। ফলে এই ছয় উপজেলায় কোনো নির্বাচন হচ্ছে না।

দ্বিতীয় ধাপে ৪৮ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত: দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে ইতিমধ্যে মোট ৪৮ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১২ জন প্রার্থী রয়েছেন। এছাড়াও দ্বিতীয় ধাপের ৬টি উপজেলায় সব প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। উপজেলা ছয়টি হলো, নওগাঁ সদর, পাবনা সদর, ফরিদপুর সদর, নোয়াখালির হাতিয়া এবং চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই ও রাউজান উপজেলা।

বিজ্ঞাপন

রংপুর বিভাগের চার জেলার যে ২৮ উপজেলায় ভোট: রংপুর বিভাগের ঠাকুরগাঁও জেলার ঠাকুরগাঁও সদর, পীরগঞ্জ, হরিপুর, বালিয়াডাঙ্গী, রানীশংকৈল উপজেলা। রংপুর জেলার গংগাচড়া, তারাগঞ্জ, পীরগাছা, বদরগঞ্জ, কাউনিয়া, পীরগঞ্জ উপজেলা। গাইবান্ধা জেলার গাইবান্ধা সদর, সাদুল্লাপুর, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও পলাশবাড়ি উপজেলা। দিনাজপুর জেলার কাহারোল, বোচাগঞ্জ, চিবিরবন্দর, ফুলবাড়ি, বিরামপুর, হাকিমপুর, বীরগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, বিরল, পার্বতীপুর, খানসামা ও ঘোড়াঘাট উপজেলা।

রাজশাহী বিভাগের তিন জেলার যে ৩০ উপজেলায় ভোট: বগুড়া জেলার বগুড়া সদর, নন্দীগ্রাম, সারিয়াকান্দি, আদমদিঘি, দুপচাঁচিয়া, ধুনট, শাজাহানপুর, শেরপুর, শিবগঞ্জ, কাহালু, গাবতলী ও সোনাতলা উপজেলা। নওগাঁ জেলার আত্রাই, নিয়ামতপুর, সাপাহার, পোরশা, ধামইরহাট, বদলগাজী, রানীনগর, মহাদেবপুর, পত্নীতলা ও মান্দা উপজেলা। পাবনা জেলার আটঘরিয়া, বেড়া, ভাংগুড়া, চাটমোহর, ফরিদপুর, ইশ্বরদী, সাথিঁয়া ও সুজানগর।

সিলেট বিভাগের দুই জেলার যে ১৯ উপজেলায় নির্বাচন: সিলেট জেলার সিলেট সদর, বিশ্বনাথ, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, কোম্পানিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানিবাজার। মৌলভিবাজার জেলার মৌলবীবাজার সদর, বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া, রাজনগর, কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল।

ঢাকা বিভাগের ফরিদপুর জেলার যে ৮ উপজেলায় ভোট: ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারি, চরভদ্রাসন, সদরপুর, সালথা আলফাডাঙ্গা, মধুখালি, নগরকান্দা ও ভাঙ্গা উপজেলা।

চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচ জেলার যে ৩১ উপজেলায় ভোট: চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড, সন্দ্বীপ, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী। রাঙ্গামাটি জেলার রাঙ্গামাটি সদর, লংগদু, নানিয়ারচর, কাপ্তাই, জুরাছড়ি, বাঘাইছড়ি, কাউখালি, বরকল, রাজস্থলী, বিলাইছড়ি। বান্দরবন জেলার বান্দরবন সদর, বোয়াংছড়ি, আলীকদম, থানচি, লামা, রুমা, নাইক্ষ্যংছড়ি। খাগড়াছড়ি জেলার খাগড়াছড়ি সদর, মানিকছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি, দীঘিনালা, মহালছড়ি, পানছড়ি, মাটিরাঙ্গা, রামগড় এবং কক্সবাজার জেলার চকোরিয়া উপজেলা।

সারাবাংলা/এমও

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন