বিজ্ঞাপন

চোখ ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

May 11, 2019 | 4:43 pm

নৃপেন রায়, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ১০ দিনের সফরে চোখের চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, আগে ঝাপসা দেখতে পেতাম, এখন চোখ ভালো হয়েছে। ইনশাল্লাহ, এখন অনেক ভালো দেখতে পাচ্ছি। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় ফণীতে বড় ধরনের ক্ষয়-ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ায় শুকরিয়া আদায় করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১১ মে) সকালে ১০ দিনের লন্ডন সফর শেষে দেশে ফিরলে গণভবনে স্বাগত জানাতে উপস্থিত নেতাদের সামনে তিনি এই অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। উপস্থিত একাধিক সূত্র সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শনিবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটের দিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট (বিজি ২০২) প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে লন্ডনে থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এরপর প্রধানমন্ত্রী গণভবনে পৌঁছালে উপস্থিত নেতারা তাকে স্বাগত জানান এবং চোখের চিকিৎসাসহ কুশলাদি জানতে চান। এসময় প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত নেতাদের বলেন, ‘চোখ এখন ভালো হয়েছে। আগে ঝাপসা দেখতে পেতাম। ইনশাল্লাহ, এখন অনেক ভালো দেখতে পাচ্ছি।’ এছাড়াও ফণী দুর্গত এলাকার খবর জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ফণীর আঘাতে উপকূলীয় কোনো অঞ্চল বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সেগুলো অবহিত করেন।

বিজ্ঞাপন

ফণী নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইনশাল্লাহ, তেমন কোনো বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি। সরকারিভাবে সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলাম। ফণী বড় ধরনের আঘাত হানলে বিশাল ক্ষতি হতে পারতো। কিন্তু আল্লাহর রহমতে, তেমন কোনো বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি। আর টুকটাক যেসব এলাকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদেরকে দ্রুত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসিত করা হবে।’

এছাড়া ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবেলায় বড় ধরনের ক্ষয়-ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে সরকারি ও দলীয় প্রস্তুতিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একান্তে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলেন। তবে এ ব্যাপারে উপস্থিত নেতাদের কাছে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

বিজ্ঞাপন

গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখা ও দলের সহযোগী সংগঠনগুলোর আয়োজনে লন্ডনের তাজ হোটেলে এক মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশের ডাক্তাররা মনস্তাত্ত্বিক কারণে ঝুঁকি নিতে রাজি না হওয়ায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও দেশে চোখের অস্ত্রোপচার করতে পারেননি। এর আগে ১৯ এপ্রিল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ রোগীদের মতো ১০ টাকায় টিকিট কেটে শের-ই বাংলা নগরের জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এছাড়া ২০১৫ সালের জুন মাসে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে ছয় দিনের ব্যক্তিগত সফরে চোখের চিকিৎসা করান প্রধানমন্ত্রী।

শুক্রবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম। এর আগে গত ১ মে দশ দিনের সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৯ মে, বৃস্পতিবার তিনি লন্ডনে তাজ হোটেলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর যুক্তরাজ্য শাখা আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন। আজ দশ দিনের সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরেন প্রধানমন্ত্রী। লন্ডনের একটি হাসপাতালে এই সফরে চোখের চিকিৎসা নেন তিনি।

গত ৪ মে সন্ধ্যায় লন্ডনে অবস্থানরত অবস্থায় ফণীদুর্গত এলাকায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার জন্য ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছিলেন তিনি। সেদিন প্রধানমন্ত্রীর দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের সঙ্গে ফোনে কথা বলে এমন নির্দেশনা দেন।

এব্যাপারে সেদিন জাহাঙ্গীর কবির নানক সারাবাংলাকে জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফণীর আঘাতে উপকূলীয় এলাকার ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন। ফণীর আঘাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হওয়ায় আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন। এছাড়াও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি না হওয়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও শুকরিয়া শুকরিয়া আদায় করেন। অন্যদিকে ঘুর্ণিঝড় ফণী মোকাবেলার সরকারি এবং দলীয়ভাবে ব্যাপক প্রস্তুতি জোরদার করা হয়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সমন্বয় টিম ও বিভাগীয় টিম গঠন করা হয়। পাশাপাশি ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির মনিটরিং টিমের ১৬ জন সদস্য সার্বক্ষণিক মনিটরিং করেন। পরবর্তীতে দুর্গত এলাকাগুলোতে সরকারিভাবে ত্রাণ তৎপরতা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের পাশাপাশি দলের পক্ষ থেকেও ত্রাণ বিতরণ ও ফণীর ক্ষয়ক্ষতি মনিটরিং করা হচ্ছে। আশঙ্কা অনুযায়ী ক্ষয়ক্ষতি না হওয়ায় সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

গণভবনে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুর, কৃষি সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, কার্যনির্বাহী সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, আনোয়ার হোসেন, যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওসার, যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সাবেক ছাত্রনেতা বলরাম পোদ্দার, হেমায়েত উদ্দীনসহ অনেকে।

সারাবাংলা/এনআর/এমআই

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন