বিজ্ঞাপন

ফেনী-নোয়াখালী ৪ লেন প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে ৫৩২ কোটি টাকা

October 5, 2019 | 10:07 am

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ, পিসি গার্ডার ও ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ, আরসিসি ড্রেন নির্মাণ, ইউটিলিটি শিফটিং ও সার্ফেসিং এবং আরসিসি কালর্ভাট নির্মাণসহ নয় কারণে ফেনী-নোয়াখালী ৪ লেন প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে। এই ব্যয় বৃদ্ধির পরিমাণ ৫৩২ কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি বাড়ছে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়ও।

বিজ্ঞাপন

এর আগে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯৬২ কোটি টাকা। নতুন করে ব্যয় বাড়ানোর পর এখন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন খরচ হবে ১ হাজার ৪৮৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। আর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময়কাল ছিল ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত। এখন সময় এক বছর বাড়িয়ে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত করা হচ্ছে।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, ফেনী-নোয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের বেগমগঞ্জ থেকে সোনাপুর পর্যন্ত ৪-লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাবটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির আগামী সভায় উপস্থাপনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য শামীমা নার্গিস সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নোয়াখালী জেলার সোনাপুর ও বেগমগঞ্জ থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লাসহ অন্যান্য জেলায় নিরাপদ ও যানজটমুক্ত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে। সেইসঙ্গে প্রকল্প এলাকার জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। তাই প্রকল্পটির সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদনযোগ্য।’

বিজ্ঞাপন

সংশোধনী প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ফেনী-নোয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা থেকে সোনাপুর পর্যন্ত সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ১৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। এর মধ্যে বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা থেকে মাইজদি পৌরসভা পর্যন্ত ৯ দশমিক ছয় কিলোমিটার সড়কের উভয়পাশে ধীর গতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেনসহ চারলেন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া মাইজদি পৌরবাজার থেকে সোনাপুর পর্যন্ত ৪ দশমিক ৩২ কিলোমিটার সড়কের উভয়পাশের এক সিটার প্রস্থ হার্ড সোল্ডারসহ চার লেনে উন্নয়ন করা হবে।

প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসাবে নতুন অঙ্গ অন্তভুক্তির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, প্রকল্পের আওতায় ধর্মীয় উপাসনালয় পুনঃনির্মাণ, কবরস্থান শ্মশান স্থানান্তর, বাস-বে নির্মাণ এবং ইউ ড্রেন নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে মূল অনুমোদিত ডিপিপিতে ভূমি অধিগ্রহণ ব্যয় মৌজা মূল্যের ১ দশমিক ৫ গুণ হারে প্রাক্কলন করা হয়। এছাড়া অবকাঠামো ও গাছপালা ফসলের ক্ষতিপূরণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ খাতে অতিরিক্ত ৪৫৮ কোটি ৯৮ লাখ ৮৩ হাজার টাকা ব্যয় বেড়েছে।

পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, মূল অনুমোদিত ডিপিপিতে চার লেন বিশিষ্ট আরসিসি ব্রীজ নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু চার লেন বিশিষ্ট ব্রীজ নির্মাণের জন্য ডাইভারসন সড়ক নির্মাণের জন্য ভূমির সংস্থান না থাকায় বিদ্যমান দুই-লেন বিশিষ্ট আরসিসি ব্রীজকে বিকল্প সড়ক হিসাবে ব্যবহার করে ডিজাইন ইউনিটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুই লেন বিশিষ্ট একটি পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করার পর পুরাতন ব্রীজের স্থলে আর একটি দুই লেন পিসি গার্ডার ব্যীজ নির্মাণ করা। মূল ডিপিপিতে আরসিসি ব্রীজ খাতে ৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকার স্থলে ৯ কোটি ৯৮ লাখ ৯৩ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ও সড়ক পারাপারের জন্য মূল ডিপিপিতে ৪টি ফুটওভার ব্রিজের কথা বলা আছে। কিন্তু এ মহাসড়কে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও হাট-বাজার বিদ্যমান থাকায় সড়ক নিরাপত্তা বিধানে সড়ক পারাপারে সুবিধার জন্য অতিরিক্ত ২টি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা জরুরি। মূল ডিপিপিতে ৪টি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে ৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারিত ছিল, সংশোধিত ডিপিপিতে ৬টি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে ৭ কোটি ৬৯ লাখ ৭৯ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া খোলা আরসিসি ড্রেনের ওপর স্ল্যাব নির্মাণ জরুরি হওয়ায় নতুন অঙ্গ হিসেবে প্রস্তাবিত সংশোধিত ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ খাতে ৮ কোটি ১২ লাখ ১৮ হাজার টাকার ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি নিচুভূমি ও ও ডোবার কাছের সড়ক প্রশস্তকরণের জন্য ব্যয় বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে ডিপিপিতে। এ খাতে ৭৯ লাখ ২২ হাজার টাকার পরিবর্তে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে।

সারাবাংলা/জেজে/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন