বিজ্ঞাপন

‘সরকার পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র’

October 12, 2019 | 5:26 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সরকার খাদে পড়ে গেছে। সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এ ধরনের সরকার জনগণ কখনো বরদাশত করে না। আবরারের রক্ত সরকার পতনের বীজ বপন করে গেছে।

বিজ্ঞাপন

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদ এবং দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত জনসমাবেশে বিএনপির শীর্ষ নেতারা এ সব কথা বলেন।

শনিবার (১২ অক্টোবর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর দেড়টায় শুরু হয়ে সভা শেষ হয় বিকেল পৌনে ৫টায়।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপির সভাপতি হাবীব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে সমাবেশ বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর (উত্তর) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুন্সি বজলুল বাছিত আনজু, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আলী আশফাক, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুসহ অন্যরা।

আবরার হত্যার প্রতিবাদে পূর্বঘোষিত এ সমাবেশ দুপুর ২টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১০টার মধ্যেই বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী সমর্থকরা নয়াপল্টনে এসে জড়ো হন। কিন্তু অনুমতি না থাকায় দুপুর ১টা পর্যন্ত পুলিশ সেখানে কাউকে দাঁড়াতে দিতে চায়নি। এ সময় বেশ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

দুপুর ১টা ২০ মিনিটে পুলিশের কাছ থেকে দুইটি শর্ত সাপেক্ষে জনসমাবেশ করার অনুমতি পায় বিএনপি। রাস্তার ওপর মঞ্চ তৈরি না করা এবং গাড়ি চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রাখার শর্ত মেনে নিয়ে দুপুর দেড়টায় সমাবেশ শুরু করে বিএনপি। দুপুর ২ টা নাগাদ এক পাশের রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস সমাবেশ স্থালে গাড়ি চলাচলের জন্য রাস্তা ছেড়ে দিতে বলেন দলের নেতাকর্মীদের।

এরপর নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ ও গণপরিবহন একসঙ্গে চলতে থাকে। টানা তিন ঘণ্টার সমাবেশে তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সমাবেশের আগে নয়াপল্টন থেকে আটক হওয়া নেতাকর্মীদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য পুলিশকে আহ্বান জানান বিএনপি নেতারা।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে ভারতে সঙ্গে করা চারটি চুক্তির কোনোটিই বাংলাদেশের স্বার্থে নয়। ফেনীর নদীর পানি, মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যাবহার, উপকুলে রাডার স্থাপন, এলপিজি গ্যাস রফতানি— সব চুক্তিই হয়েছে ভারতের স্বার্থে।’

তিনি বলেন, ‘গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকার জন্য এই দেশের মানুষকে আপনারা হত্যা করেছেন। ত্রিশ তারিখের নির্বাচন ২৯ তারিখ রাতে করেছেন। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দেশবিরোধী চুক্তি করেছেন। আমাদের অধিকার আছে এগুলোর প্রতিবাদ করার। সেই প্রতিবাদই করেছে আবরার। তার জন্য তাকে প্রাণ দিতে হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

ড. মোশাররফ বলেন, ‘আবরারের স্ট্যাটাস আবরারের ব্যক্তিগত কথা নয়, এ দেশের জনগণের কথা। আবরারের স্ট্যাটাস এ দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষার কথা। আবরারের স্ট্যাটাস এ দেশের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কথা। তাই আপনারা আবরারকে হত্যা করেন নাই। তাকে হত্যা করে বাংলাদেশের জনগেণর স্বার্থকে হত্যা করেছেন।’

‘তাই আজ সারাবাংলাদেশের মানুষ, ছাত্রসমাজ ফুঁসে উঠেছে। আমি বিশ্বাস করি, আবরার রক্ত দিয়ে সরকার পতন আন্দোলনের সূত্রপাত করে গেছে। তার রক্ত সরকার পতনের বীজ বপন করে গেছে’— বলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘দেশবাসী গত ১২ বছর ধরে আওয়ামী লীগের সোনার ছেলেদের তাণ্ডবলীলা দেখেছে। কিন্তু মানুষ এইবার অবাক হয়ে গেছে। ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের নেতৃবৃন্দ কীভাবে চাঁদাবাজি করে, জুয়ার আড্ডা বসিয়ে, ক্যাসিনো চালিয়ে এই দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা লুণ্ঠন করেছে। এই প্রেক্ষাপটে এই কথাই বলতে হয়, আওয়ামী লীগ এবং এই সরকার দুর্নীতিতে আকণ্ঠ ডুবে গেছে। তারা এমন খাদে পড়েছে, এই খাদ থেকে তাদের নিষ্কৃতি নাই। এই খাদ থেকে তারা উঠে আসতে পারবে না।’

‘আমি মনে করে এই সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এই দেশের মানুষ কখনই এই ধরনের সরকারকে বরদাশত করে না’— বলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

তিনি বলেন, ‘আবরারের ঘটনা সারাদেশের মানুষকে অবাক করে দিয়েছে। আমরা বলতে চাই, এ একজন আবরারকে হত্যা করে কোনো লাভ হবে না। বাংলাদেশে হাজার হাজার, লাখ লাখ আবরারের জন্ম হবে।’

ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, ‘ফেনী নদীর পানি, চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর এবং উপকূলে রাডার স্থাপনের ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে দেশবিরোধী চুক্তি করে এসেও প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ‘আমি দেশবিরোধী চুক্তি করিনি।’ বাংলাদেশে মানুষ এতো বোকা নয়। মানুষ ঠিকই বুঝেছে,  ভারতে গিয়ে বাংলাদেশের স্বার্থকে আপনি বিকিয়ে এসেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের জন্য আপনি কিছুই আনতে পারেননি।’

সারাবাংলা/এজেড/একে

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন