বিজ্ঞাপন

শেষ ইচ্ছা পূরণে খোকার মরদেহ দেশে আনতে চায় বিএনপি ও পরিবার

November 4, 2019 | 4:56 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জীবিত অবস্থায় দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। এখন তার মরদেহ দেশে আনার চেষ্টা করছে তার পরিবার। এ বিষয়ে দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক সহযোগিতা চাওয়া হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

সাদেক হোসেন খোকার পরিবারের বরাত দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেসউইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান সারাবাংলাকে এসব তথ্য জানান।

আরও পড়ুন- সাদেক হোসেন খোকা মারা গেছেন

শায়রুল বলেন, স্ত্রী ইসমত হোসেন ও ছেলে ইশরাক হোসেন চেষ্টা চালাচ্ছেন সাদেক হোসেন খোকার মরদেহ দেশে নিয়ে আনার। যেহেতু তাদের পাসপোর্ট নেই, সেহেতু নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশে ফেরার একমাত্র উপায় ট্রাভেল পারমিট। আর এই পারমিট দেওয়ার এখতিয়ার নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের দূতাবাস, তথা বাংলাদেশ সরকারের। সে কারণে সাদেক হোসেন খোকার পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের সহযোগিতা চাওয়া হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য তরিকুল ইসলামের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই মুহূর্তে যশোরে আছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে অনুষ্ঠান শেষে রোববার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা ফিরবেন তিনি।

জানা গেছে, সন্ধ্যায় ঢাকা ফিরেই দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বসবেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথা সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক সহযোগিতা চাইবেন সাদেক হোসেন খোকার মরদেহ দেশে আনার জন্য। বিএনপির প্রত্যাশা— এ বিষয়ে সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা পাবে তারা।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর শাহরিয়ার আলমের বক্তব্যও তাদের প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন, নিউইয়র্কে সাদেক হোসেন খোকার পরিবার ট্রাভেল পারমিটের জন্য আবেদন করলে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ মিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

বিজ্ঞাপন

সাদেক হোসেন খোকা জীবিত অবস্থায় দেশে ফেরার আকুতি জানালে শাহরিয়ার আলম তার ফেসবুকে লিখেন, ‘সাদেক হোসেন খোকা এবং তার স্ত্রীর নামে মামলা আছে, গ্রেফতারি পরোয়ানাও থাকতে পারে (আমি নিশ্চিত নই)। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে যা জেনেছি, তাদের আগমনের পর বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হবে।’

খোকাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে প্রতিমন্ত্রী লিখেছিলেন, ‘নিউইয়র্কে সাদেক হোসেন খোকার পরিবার ট্রাভেল পারমিটের জন্য আবেদন করলে আমাদের মিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তার নিজের এবং তার স্ত্রীর যেহেতু পাসপোর্ট নেই, সেহেতু আন্তর্জাতিকভাবে অন্য দেশ থেকে নিজের দেশে ফেরার এটাই একমাত্র ব্যবস্থা।’

গত ১৮ অক্টোবর নিউইয়র্কের স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টারে ভর্তি হওয়ার পর ২৭ অক্টোবর সাদেক হোসেন খোকার শ্বাসনালী থেকে টিউমার অপসারণ করা হয়। এরপর থেকেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সেখানেই সোমবার বাংলাদেশ স্থানীয় সময় দুপুরে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

একাত্তরের রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনীতিতেও আলোচিত চরিত্র। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাপের রাজনীতি থেকে তিনি একসময় বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হন। ক্রীড়া সংগঠক হিসেবেও ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক এই সভাপতির ব্যাপক পরিচিত রয়েছে। ১৯৯১ ও ২০০১ সালে ঢাকার সূত্রাপুর-কোতয়ালী আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

বিজ্ঞাপন

সাদেক হোসেন খোকা অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র এবং খালেদা জিয়ার মন্ত্রিসভার মৎস্য ও পশুসম্পদমন্ত্রী ছিলেন।

২০১৪ সালের ১৪ মে সাদেক হোসেন খোকা চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যান। সেখানে থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে দেশে কয়েকটি দুর্নীতি মামলা হয়। কয়েকটি মামলায় আদালত সাজাও দেন।

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন