বিজ্ঞাপন

ডিএসসিসি’র ১ নম্বর ওয়ার্ড: ‘মাদক বিক্রি হয় না, নেই কোনো মামলাও’

December 5, 2019 | 6:23 pm

উজ্জল জিসান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) খিলগাঁও থানার একাংশ নিয়ে এক নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে মাদকের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলেছে এলাকাবাসীর। আর এই সফলতার কৃতিত্ব কাউন্সিলর ওয়াহিদুল হাসান মিল্টনের।

বিজ্ঞাপন

এলাকাবাসী জানান, বহদিন ধরে এক নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় কোনো মাদক বিক্রি হচ্ছে না। ক্রেতা-বিক্রেতা কে কোথায় আছে তাও জানা নেই। এমনকি গত এক বছরে থানায় মাদকের মামলা হয়েছে, এমনটিও জানা নেই তাদের। মাদক বিক্রি না হওয়ার বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলরের সফলতা হিসেবে মনে করছেন এলাকাবাসী।

সম্প্রতি খিলগাঁওয়ের ১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা ঘুরে দেখা গেছে— প্রায় সবগুলো সড়কের উন্নয়ন কাজ চলছে। কোনোটির কাজ শেষ হয়েছে, আবার কোনোটির কাজ চলমান।

এলাকাবাসী জানান, সড়ক উন্নয়ন, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, মসজিদ, মন্দির, খেলার মাঠ, ঈদগাহ মাঠ, কালভার্ট, বিভিন্ন সমিতির উন্নয়ন করা হয়েছে। অনেকগুলোর উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। এর সবই বর্তমান কাউন্সিলর মিল্টনের কারণে সম্ভব হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

খিলগাঁও ১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দা সাইদুর রহমান খোকন সারাবাংলাকে বলেন, ‘এলাকায় পাঁচটি  সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আটটি উচ্চ বিদ্যালয়, পাঁচটি কলেজ, একটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও পাঁচটি মাদরাসা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। আগে খিলগাঁও এলাকার এই ওয়ার্ডের মূল সমস্যা ছিল মাদকবিক্রি আর ইভটিজিং। সেই সমস্যা এখন নেই। এলাকাবাসী নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারেন। মাদক বিক্রির পাশাপাশি আগে দুয়েকটি চুরি-ছিনতাই হতো, এখন সেটিও নেই।

আরেক বাসিন্দা আরিফুর রহমান জানান, এ এলাকায় ১৩টির মতো সমিতি আছে। আগে সমিতির সঙ্গে যুক্ত অনেকেই মাদক ব্যবসায় ছিলেন। তবে এখন আর মাদক বিক্রি হয় না। সমিতিগুলো খেলাধুলো আর সামাজিক কাজকর্ম নিয়ে আলোচনা হয়।

ওয়ার্ডের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ডিএসসিসি’র ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হাসনা হেনা বলেন, ‘আগে অনেক ইভটিজিং হতো। প্রায় প্রতিদিনই ছিনতাই হতো। এখন এসব কিছু চোখে পড়ে না।’

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, তার মেয়ে খিলগাঁও মডেল কলেজে একাই যাওয়া-আসা করেন। এখন কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

কাউন্সিলর মিল্টনের বিষয়ে হাসনা হেনা আরও বলেন, ‘এলাকার সমস্যা সমাধানে তিনি সবসময় ব্যস্ত থাকেন। সবাই তার কাছে যেতে পারেন, মন খুলে কথা বলেন। সবার সঙ্গে আলোচনা করে কাউন্সিলর সমস্যার সমাধান করেন। এই এলাকাতেই তার জন্ম, বেড়ে ওঠা, রাজনীতি করা এবং মানুষের পাশে থেকে তিনি কাজ করছেন। তাই সহজে তার পক্ষে ভালো কাজগুলো করা সম্ভব হচ্ছে।’

ডিএসসিসির ১ নম্বর ওয়ার্ডের মাদকের বিষয়ে জানতে চাইলে খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, ‘মাদক মামলা এমনিতেই আগের চেয়ে অনেক কমেছে। মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এর মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ডে অনেক দিন ধরেই মামলা হয়নি। তবে সেই সময়টি একবছর হবে কিনা তা জানা নেই।’

ওসি আরও বলেন, ‘১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওয়াহিদুল হাসান মিল্টন খুবই আন্তরিক। তিনি এলাকায় ঘোষণা দিয়েছেন তার এলাকায় কোনো মাদক থাকবে না।’

বিজ্ঞাপন

খিলগাঁওয়ের ১ নম্বর ওয়ার্ডে বাস করেন সিনিয়র সাংবাদিক সোহেল রানা। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘কাউন্সিলর ওয়াহিদ হাসান মিল্টন বেশ সহযোগিতা করছেন। এ জন্য এলাকায় মাদক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শুধু মাদক নয় অন্যান্য অপরাধও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কাউন্সিলরের এই উদ্যোগ অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে।’

জানতে চাইলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও খিলগাঁও থানা আওয়ামী লীগের সহ সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুল হাসান মিল্টন সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী জিরো টলারেন্স নীতিতে বঙ্গবন্ধুর একজন আদর্শের সৈনিক হিসেবে মাদককে আমার এলাকায় নিষিদ্ধ করেছি। সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে বুঝিয়েছি। তাদের সহায়তা চেয়েছি, তাদের সহযোগিতায় আজ আমার ওয়ার্ডে মাদক নেই। আমার এলাকায় মাদক নিয়ে থানায় গত এক বছরে একটি মামলাও হয়নি। এটি আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া।’

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের কথা উল্লেখ করে এই কাউন্সিলর বলেন, ‘১৯৯০ সালে খিলগাঁও মডেল কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও এজিএস পদে নির্বাচিত হই। ১৯৯১ সালে একই কলেজের ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হই। এরপর ১৯৯৯ সালে সবুজবাগ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হই। এরপর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের গবেষণা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করি। পর্যায়ক্রমে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে চলে আসি। ১৯৯৪ সালে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বেতার ও টেলিভিশনে প্রচারের জন্য আন্দোলনে গেলে পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হই এবং মিথ্যা মামলায় আমাকে কারাবরণ করতে হয়।’

নিজের স্বপ্ন নিয়ে কাউন্সিলর ওয়াহিদুল হাসান মিল্টন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার এলাকার বাসিন্দারা দিনে ও রাতে নির্বিঘ্নভাবে চলাফেরা করতে পারছে। মাদক ও ইভটিজিংমুক্ত সমাজ গড়ে উঠেছে, এই ধারাবাহিকতা আমরা ধরে রাখতে চাই। এলাকার মানুষের ভালোবাসা পাই। আগামীতে নির্বাচিত হলে বাকি যে সব কাজ রয়েছে সেগুলোও শেষ করতে চাই।’

সারাবাংলা/ইউজে/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন