বিজ্ঞাপন

হোটেল রেডিসন যেন এক টুকরো চবি ক্যাম্পাস

December 20, 2019 | 3:56 pm

চলন্ত চাকমা, চবি করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ২৫ বছর আগে যাত্রা করেছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ। আড়াই দশকে এই বিভাগ থেকে পাঠ চুকিয়ে সবুজ ক্যাম্পাস ছেড়েছেন অনেক শিক্ষার্থী। কাজের সূত্রে কেউ চট্টগ্রামে থিতু হয়েছেন। কেউ বা গেছেন ঢাকাসহ দূর-দূরান্তে, দেশের বাইরেও। কেউ গণমাধ্যমের তুখোড় কর্মী, কেউ প্রশাসনে, কেউ বা কর্পোরেট অফিসের বড় অফিসার কিংবা ব্যবসায়ী।

বিজ্ঞাপন

আড়াই দশক পূর্তির রজত জয়ন্তী উৎসব ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়া সবাইকে আবারও টেনে এনেছে চট্টগ্রামে। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সেই সবুজ ক্যাম্পাসে তুমুল আড্ডা, আনন্দ-উল্লাস, ছবি তোলা, ক্যাম্পাস মাতিয়ে তোলার সেই সোনালি দিনগুলোর স্মৃতিচারণে পার করেছেন উৎসবের প্রথম দিন। সমাপণী দিনে শুক্রবার সকাল থেকে সবাই আবারও এক হয়েছেন নগরীর হোটেল রেডিসন ব্লু চিটাগং বে ভিউতে।

শুধু কি সাবেকরা, উৎসবে আছেন বর্তমানরাও। নেই বয়সের কোনো ভেদাভেদ, বন্ধুত্বের আবাহনে সবাই মিলেছেন আনন্দ আয়োজনে। সাবেকরা বর্তমানদের সঙ্গে তাদের স্মৃতি বিনিময় করেছেন। বর্তমানরা সেই দিনগুলোর কথা শুনে আপ্লুত। সেলফি তোলা, গলা ছেড়ে গান গাওয়া, বন্ধুর কাঁধে হাত রাখা আর নেচে-গেয়ে একাকার সবাই। সাবেকদের মনে সেই সোনালী অতীতকে ফিরে পাওয়ার আকুলতা।

উৎসবের শেষ দিনেদিনে শুক্রবার রেডিসন হোটেলে সাবেক শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ, আমন্ত্রিত অতিথিদের শুভেচ্ছা বিনিময় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সকাল থেকে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক-বতমান শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পদচারণায় রেডিসন হোটেলই হয়ে উঠেছে চিরসবুজ একটুকরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

বিজ্ঞাপন

কথা হয় বেশ কয়েকজন বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও দৈনিক পূর্বকোণের সহ-সম্পাদক মু.মিজানুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন,‘বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও ২৫ বছর পেরিয়ে বর্তমানে এটি ডিজিটাল বিভাগে পরিণত হয়েছে। এটা দেখে সত্যিই ভাল লাগছে। আরেকটি ভাললাগার বিষয় হল, এই পুনর্মিলনের মাধ্যমে জুনিয়র সিনিয়রের মধ্যে যে সেতুবন্ধন সৃষ্টি হচ্ছে।’

বিভাগের ষষ্ঠ ব্যাচের ছাত্রী হেমা তঞ্চঙ্গ্যা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের বিভাগ অনেক এগিয়ে গেছে। পুরো বিভাগকে ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। সবকিছু মিলে আমার খুব ভালো লাগছে। এখানে এসে সহপাঠী, জুনিয়র-সিনিয়রদের সবার সঙ্গে দেখা হয়েছে। সবাই মিলেমিশে দুইটি দিন কাটালাম। আমাদের ব্যস্ত জীবনে এটাও অনেক বড় প্রাপ্তি।’

বিজ্ঞাপন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া থেকে ছুটে এসেছেন বিভাগের দ্বিতীয় ব্যাচের ছাত্রী ফারাহ্ নাজ মুসারাত। তিনি বলেন,‘যখন জানতে পারি যে আমাদের বিভাগের রজত জয়ন্তী অনুষ্ঠান হবে, তখন থেকেই আসলে আমি খুব এক্সাইটেড। মূলত এই রজত জয়ন্তীতে অংশগ্রহণ করার জন্যই বাংলাদেশে আসা। প্রিয় বিভাগের শিক্ষক – সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা হবে, ভাবতেই অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছিল। এখন দেখা হওয়ার পর যে অনুভূতি, সেটা আমি বলে বোঝাতে পারব না।’

সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে পড়ালেখা শেষ করে প্রথমদিকে গণমাধ্যমে যোগ দিলেও এখন সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা ইসমেত আরা ইশিতা। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার জীবনের সেরা সময়টুকু কেটেছে এই বিভাগে, ক্যাম্পাসে। দুইদিনে আমার মনে হয়েছে আমি আবারও সেই দিনগুলোতে ফিরে গেছি।’

সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক ছাত্র বিডিনিউজের প্রতিবেদক উত্তম সেন ‍গুপ্ত সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা রজত জয়ন্তী উৎসব করছি শুধুমাত্র আনন্দ উদযাপনের জন্য নয়। সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যাতে একটা বন্ধন তৈরি হয়, সেটাও আমাদের উদ্দেশ্য। এজন্য অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনও আছে। আমরা নিয়মিত বিভিন্ন আয়োজন করি।’

চলমান ২৩ তম ব্যাচের ছাত্র নূর নবী রবিন বলেন, ‘আমি এই বিভাগের শিক্ষার্থী হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। আশা করছি, সবার মধ্যে যে বন্ধন আছে এটা চিরঅটুট থাকবে। পারস্পারিক সহযোগিতা সহমর্মিতার মাধ্যমে আমাদের বিভাগ অনেকদূর এগিয়ে যাবে। বর্তমান ও প্রাক্তনদের মিলনমেলায় আমার অনেক ভাল লাগা কাজ করছে।’

বিজ্ঞাপন

২৫ তম ব্যাচের ছাত্রী পিংকী চাকমা বলেন, ‘পড়ালেখার শুরুতেই এমন একটা উৎসবে শামিল হতে পারব, ভাবিনি। সিনিয়র ভাইয়া-আপুদের সঙ্গে দেখা হয়েছে। আমরা নিজেরা বন্ধুবান্ধবীরা খুব মজা করেছি। দিনশেষে আমাকেও একদিন প্রাক্তন হতে হবে। হয়ত যেদিন সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব হবে, সেখানে প্রাক্তন হিসেবে আমিও যোগ দেব।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ এবং অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এই উৎসবের আয়োজন করেছে।

সারাবাংলা/সিসি/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন