বিজ্ঞাপন

দুদক কাগজে-কলমে স্বাধীন, বাস্তবে নয়: টিআইবি

February 25, 2020 | 3:01 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বাস্তবে নয়, কাগজে কলমে দুদককে স্বাধীন বললেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় টিআইবির সম্মেলন কক্ষে দুদকের ওপর এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। দুদকের ওপর একটি ফলোআপ গবেষণার ফলাফল প্রকাশের জন্য সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করা হয়।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজদের না ধরে, ছোটখাটো দুর্নীতি নিয়েই দুদকের কার্যক্রম চলে। আর বড় ধরনের দুর্নীতির ক্ষেত্রে দুদকের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। সেক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রীতার পরিচয় দেখা যায়। প্রভাবশালীদের ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ, এরপর তাদের আর কোনো কার্যক্রম দেখা যায় না।

সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ তে উল্লেখ রয়েছে, পূর্বানুমতি ছাড়া কোনো কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা যাবে না। এটা সম্পূর্ণ বৈষম্যমূলক এবং অসাংবিধানিক। একইসঙ্গে মানি লন্ডারিংয়ের ক্ষেত্রেও দুদকের সক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। অর্থাৎ সবদিক থেকে সরকারের সদিচ্ছা থাকতে হবে। জবাবদিহিতা করতেই দুদককে প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার। অথচ চর্চাটা সরকারের দিক থেকে যেমন নেই, তেমনি দুদকের দিক থেকেও নেই। একই সাথে দুদকের নিজস্ব আচরণ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আচরণ উদ্বেগজনক। দক্ষতা, স্বক্ষমতার দিক থেকে যেমন ঘাটতি, জাহালমের বিষয়, দুদক কর্মকর্তাদের একাংশের অবৈধ লেনদেন দুদকের ওপর আস্থা সংকটে ফেলছে।

বিজ্ঞাপন

দুদকের ক্ষমতা রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয় জানিয়ে ইফতেখার বলেন, বিরোধীদলের রাজনীতিকদের হয়রানি করা এবং ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিকদের প্রতি নমনীয়তা দেখায় দুদক। মোটকথা রাজনৈতিকভাবে দুদক প্রভাবিত হয় এবং নিজেকে প্রভাবিত করে। প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে দুদকের ওপর এসব নিয়ে চাপ সৃষ্টি হয়।

টিআইবি জানায়, গত তিন বছরে (২০১৬-১৮) নিস্পত্তি হওয়া ৮৫৭টি মামলার মধ্যে মোট ৪৯৫টি মামলায় সাজার রায় হয়েছে। এ ধরনের মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে দুদকের নিরপেক্ষতার বিষয়ে মানুষের ধারণা খুব ইতিবাচক নয়। দুদকের কর্মকর্তাদের ওপর আস্থার অভাব রয়েছে। বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজের সদস্য ও সাংবাদিকদের মতে, দুদককে দুর্নীতি দমনের জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষমতা অর্পণ করা হলেও একই ধরনের দুনীতির মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে এটি নিরপেক্ষ নয়।

ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, দুদক সরকারের দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে বেশ সক্রিয় হয়েছে। তবে মানুষের আস্থার ঘাটতি রয়েছে দুদকের ওপর। আর সত্যিকার অর্থে এই অভিযান থেকে কতটুকু সুফল পাওয়া যাবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। দুদকের হটলাইনে প্রচুর অভিযোগ আসে সেটি ইতিবাচক। তবে হটলাইন থেকে আসা প্রাপ্ত বা সরাসরি আসা প্রাপ্ত অভিযোগগুলো ব্যবস্থা নেওয়া সংখ্যার বিচারে খুবই কম। তবে বাকি অভিযোগগুলোর কেনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন, এ নিয়ে দুদকের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে গবেষণাপত্র তুলে ধরেন টিআইবির রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাম্মী লায়লা ইসলাম ও সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহজাদা এম আকরাম।

সারাবাংলা/এসজে/জেএএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন