বিজ্ঞাপন

‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এখনো আন্তর্জাতিক মানের হওয়া সম্ভব হয়নি’

July 18, 2020 | 8:13 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সিভিল অ্যাভিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান এয়ার কমডোর (অব) এম ইকবাল হোসেন বলেন, ‘মার্চ মাসে আমি এয়ারপোর্টে গিয়েছিলাম। স্বাস্থ্য অধিদফতরের লোক ছিল। তারা ডেস্কে ছিল কিন্তু ঘুমাচ্ছিল। আমি উঠে গিয়ে বললাম, আপনাদের দায়িত্ব তো যাত্রী আসলে তার তাপমাত্রা চেক করা এবং ফরম পূরণ করে দেওয়া। তখন তারা বললো স্যার ঠিক আছে, হবে। অর্থাৎ এখানে দায়িত্ববোধের অভাব রয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৮জুলাই) সারাবাংলা ফোকাস অনুষ্ঠানে তারা এসব কথা বলেন।

একই সঙ্গে সিভিল অ্যাভিয়েশনের বর্তমান চেয়ারম্যান মফিদুর রহমান বলেন, ‘বিমানযাত্রায় আমরা এখনো আন্তর্জাতিকমানের হতে পারিনি। বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক যে সেবা দেওয়া প্রয়োজন সেটা আমরা দিতে পারছি না। কারণ জনবল সংকট। এছাড়া বিমানবন্দর বা পোর্ট যেকোনো স্থানে স্বাস্থ্য বিষয়ে কাজ করবে স্বাস্থ্য অধিদফতর। অন্য কেউ করলে এটা গ্রহণযোগ্য হবে না।’

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন, সিভিল অ্যাভিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান এয়ার কমডোর (অব) এম ইকবাল হোসেন, সিভিল অ্যাভিয়েশনের বর্তমান চেয়ারম্যান মফিদুর রহমান ও বাংলাদেশ বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোকাব্বির হোসেন। আর অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সারাবাংলা.নেটের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট এম এ কে জিলানী।

বিজ্ঞাপন

সিভিল অ্যাভিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান এয়ার কমডোর (অব) এম ইকবাল হোসেন বলেন, ‘প্রথম যখন আন্তর্জাতিক ফ্লাইট শুরু হয় তখন কোভিড সার্টিফিকেটের প্রয়োজন ছিল না। ইতালিতে গিয়ে যখন ধরা পড়লো করোনা পজিটিভ তখন অন্যান্য দেশ ফ্লাইট বন্ধ করে দিল। এরপর থেকে সমস্যার সৃষ্টি। সিভিল অ্যাভিয়েশন যেভাবে কাজ করছে সেভাবে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। করোনার সার্টিফিকেট নিয়ে আমাদের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমাদের দোষের জন্য সার্টিফিকেট লাগছে। বিমানযাত্রীদের জন্য আলাদা ল্যাব থাকতে হবে। যাতে তারা বেশি অগ্রাধীকার পায়। নয়তো বিমানের ক্ষতি বাড়বে। সিভিল অ্যাভিয়েশনের বিমানযাত্রীদের দেখভাল করার জন্য আলাদা টিম থাকতে হবে। আর স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকতা‍র্দের আরও ব্যক্তি সচেতনতা বাড়াতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মার্চে যখন আমাদের দেশে করোনা আসলো তখন বলা হলো আমাদের সকল প্রস্তুতি রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল তার কিছুই নেই। আমাদের আরও বেশি সচেতন হওয়া দরকার।’

সিভিল অ্যাভিয়েশনের বর্তমান চেয়ারম্যান মফিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা বর্তমানে যে স্ক্রিনিং করছি সেটা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আওতায় পড়ে না। আমরা জানি আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমাদের জনবল কম। এটা নিয়ে আমাদের স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে অতিরিক্ত জনবল দেবে। আমাদের আরও বেশি সম্পৃক্ত হতে হবে। জনবল লাগবে। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মানের করতে আমাদের এখনো স্বল্পতা আছে। এটা মিটিয়ে আমরা কাজ করতে চাই। পুরো বিশ্বে অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিমানখাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘ইতালি থেকে অনুরোধ করা হয়েছে যাত্রী পাঠানোর জন্য আমরা চার্টার্ড ফ্লাইটে করে লোক পাঠিয়েছি। এখান থেকে স্ক্রিনিং করে তারা গিয়েছে। কিন্তু সমস্যা হয়েছে যারা প্রবাসী তারা দেশে এসেও ঠিকমতো কোয়ারেনটাইনে থাকেননি। এমনকি ইতালিতে যারা গিয়েছেন তারাও ঠিকমতো কোয়ারেনটাইন মানেননি। ফলে সেদেশের সরকার ভয় পেয়ে গেছে এবং বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে দিয়েছে। ইতালি ১৪টি দেশের ক্ষেত্রে নির্দেশনা দিয়েছে। মূলত প্রবাসী যাত্রীদের কারণেই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া আমাদের রাজস্ব ৪৫-৪৯ শতাংশ কমে যাবে। যার কারণে উন্নয়ন কাজ করতে সমস্যা হবে।’

বাংলাদেশ বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোকাব্বির হোসেন বলেন, ‘এপ্রিল, মে ও জুনে সব বন্ধ ছিল। শুধু চার্টার্ড ফ্লাইট চালু ছিল। জুনের ২১ তারিখ থেকে নিয়মিত ঢাকা লন্ডন ফ্লাইট চালু করেছি। আর কার্গো ফ্লাইট চালু করেছি এপ্রিল থেকে। বর্তমান দুবাই ও আবুধাবী ফ্লাইট চালাচ্ছি। ২৯১ সিটের যাত্রীর বিমানে এখন ১৮২ জন যাত্রী নিয়ে বিমান চালাতে হচ্ছে। আর করোনা টেস্টের জন্য সরকার ১৬টি হাসপাতাল সিলেক্ট করে দিয়েছেন। বিমানের যাত্রীদের ক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট দেবে।’

বিমানের অনিয়মের বিষয়ে বলেন, ‘যারা অনিয়ম করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে। ২০১৭ সালে সৌদিতে একটি ঘটনায় তারা জরিমানাও করেছে। আগে বিমানে অনেক ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা ছিল না। করোনার সার্টিফিকেটের মেয়াদ ৭২ ঘণ্টা। এরপর যে কারও যেকোনভাবে করোনা হতে পারে। তবে আমি বলব, যাত্রীদের কারণেই ইতালিতে সমস্যা হয়েছে। সেজন্য আমাদের আরও সচেতন হওয়া দরকার।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসজে/এমআই

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন