বিজ্ঞাপন

ডিজির অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন, ধান গবেষণার প্রতিবাদ

November 18, 2020 | 9:04 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. মো. শাহজাহান কবীরকে নিয়ে সারাবাংলা ডটনেটে প্রকাশিত তিনটি সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) প্রতিষ্ঠানটির প্রকাশনা ও জনসংযোগ বিভাগের প্রধান এবং প্রযুক্তি প্রযুক্তি সম্পাদক এম এ কাসেমের সই করা ওই প্রতিবাদলিপিতে প্রতিবেদনগুলোকে ‘মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন এবং ষড়যন্ত্রমূলক’ বলে দাবি করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্রি’র ডিজিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ আনা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এবং এর মহাপরিচালকের নামে যথাক্রমে ১. ‘বাড়ি-গাড়ি-ভবন নির্মাণে অনিয়ম: অভিযুক্ত ধান গবেষণার ডিজি’, ২. “আপ্যায়ন-অনুদানে ধান গবেষণার ডিজির ‘পরিশ্রমী’ লুটপাট!”, এবং ৩. “ডিজির অনিয়ম তদন্তের ‘বিরুদ্ধে’ ধান গবেষণায় ‘কৌশলী’ প্রতিবাদ!” শিরোনামে সিরিজ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, যা মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন এবং ষড়যন্ত্রমূলক বলে প্রতীয়মান হয় বিধায় ব্রির সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকরা এই অপপ্রচারের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বেনামী সূত্র ব্যবহার করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের তদন্তাধীন একটি বিষয়ে তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই অপ্রমাণিত তথ্য ও অভিযোগের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশ করায় ব্রি’র মতো একটি আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং এর মহাপরিচালকের সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বিধায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ করছি। একটি দায়িত্বশীল অনলাইন গণমাধ্যম হিসেবে এ ধরনের সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন- ধান গবেষণার ডিজিকে মন্ত্রণালয়ের জিজ্ঞাসাবাদ

দীর্ঘ প্রতিবাদলিপিতে ব্রি’র পক্ষ থেকে ৯টি পয়েন্টে দাবি করা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি করেননি। ব্রি’র প্রতিবাদলিপিটি এখানে তুলে ধরা হলো—

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদকের বক্তব্য

সারাবাংলার প্রতিবেদক কোনো বেনামি সূত্র ব্যবহার করে প্রতিবেদন তৈরি করেননি। মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটিতে জমা হওয়া অভিযোগের নথি ও ব্রি’র বিভিন্ন নথিপত্র বিশ্লেষণ ও যাচাই করে এবং সংশ্লিষ্ট একাধিক পক্ষের বক্তব্য নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনগুলোতে প্রতিবেদকের কোনো নিজস্ব অভিমত বা বক্তব্য নেই। তদন্ত কমিটির আহ্বায়কের বক্তব্যও রয়েছে প্রতিটি প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনগুলো তৈরির সময় ব্রি মহাপরিচালকের সঙ্গে প্রতিবেদকের কথা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম প্রতিবেদনটিতে তার বক্তব্যও রয়েছে। বাকি দু’টি প্রতিবেদনে উত্থাপিত অভিযোগ প্রসঙ্গে মন্তব্য জানতে তার সঙ্গে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবাদলিপিতে ব্রি’তে শ্রমিক ও কর্মসূচি পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। দুইটি বিষয়েই মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রসঙ্গটি এসেছে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে। এখানে সারাবাংলার নিজস্ব কোনো বক্তব্য নেই।

প্রতিবাদলিপিতে ব্রি বলছে, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই প্রতিষ্ঠানটির মূল ফটক নির্মাণের কাজ করানো হয়। সারাবাংলার প্রতিবেদনে কোথাও উল্লেখ করা হয়নি যে ফটকটি দরপত্র আহ্বান না করেই নির্মাণ করা হচ্ছিল। একই ফটক নির্মাণে একাধিক উদ্যোগের ফলে সরকারি অর্থ অপচয়ের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে শুধু।

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, ব্রি’র মহাপরিচালকের বাসভবনটি ভেঙে পরিচালকের জন্য একটি বাসভবন তৈরি করা হচ্ছে। অথচ ব্রি’তে পরিচালকের জন্য আগে থেকেই একটি বাসভবন রয়েছে। সেক্ষেত্রে মহাপরিচালকের বাসভবনটি ভেঙে পরিচালকের বাসভবন তৈরি করলে ব্রি’র মহাপরিচালকের জন্য কোনো বাসভবন থাকে না, যা অসঙ্গতিমূলক। ব্রি মহাপরিচালকের গাড়ি কেনার অভিযোগটিও মন্ত্রণালয়ের জমা হওয়া অভিযোগের মধ্যেই রয়েছে। এছাড়া প্রকাশিত প্রতিবেদনেও বলা হয়নি যে তিনি একই সময়ে একাধিক গাড়ি ব্যবহার করেছেন।

মহাপরিচালকের দফতরের অতিথি আপ্যায়ন বিষয়ক তথ্যগুলো সংশ্লিষ্ট নথি থেকে নেওয়া হয়েছে। ওই তথ্যে দেখা যায়, দেশের প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল যে মার্চ মাসে, ওই মাসেই ওই পাঁচটি খরচের প্রতিটি তালিকা হুবহু একই পাওয়া গেছে, শুধু ভিন্ন ভিন্ন তারিখ দেখানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলার প্রতিবেদনে ২০১৮ সাল থেকে ২০২০ সালের প্রথম দিক পর্যন্ত ব্রি মহাপরিচালকের ভাতা গ্রহণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এসব ভাতার বিষয়ে কিছু উল্লেখ না করে প্রতিবাদলিপিতে করোনাকালীন একটি বিভাগের ভাতা উত্তোলনের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে, যেটি সারাবাংলার প্রতিবেদনে উল্লেখ নেই।

প্রতিবাদলিপিতে ‘টেন্ডার ছাড়া স্কুল ভবন নির্মাণ’ বিষয়ক তথ্যের প্রতিবাদ জানানো হলেও সারাবাংলার প্রতিবেদনে এ ধরনের কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, ৩ নভেম্বরের সমাবেশটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক, কর্মচারী ও বিজ্ঞানীরা আয়োজন করেছে। অথচ বিজ্ঞানী সমিতির সভাপতি ড. আমিনা খাতুন এবং ধান গবেষণা শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ— দু’জনই সমাবেশ আয়োজনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। এছাড়া ওই সমাবেশে অংশ নিতে কয়েকজনকে বাধ্য করা হয়েছে বলেও তথ্যপ্রমাণ রয়েছে সারাবাংলার কাছে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন