বিজ্ঞাপন

অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে বৈশ্বিক উদ্যোগে কো-চেয়ার প্রধানমন্ত্রী

November 21, 2020 | 8:51 am

সারাবাংলা ডেস্ক

অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স, তথা মানবশরীরে রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীবদের ওষুধ প্রতিরোধে হয়ে ওঠার বিষয়টি মোকাবিলায় নতুন একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ গড়ে উঠেছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), বিশ্ব প্রাণী সংস্থা (ওআইই) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা— জাতিসংঘের এই তিনটি সংস্থার প্রধানদের নেতৃত্বে এই উদ্যোগটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ওয়ান হেলথ গ্লোবাল লিডারস গ্রুপ অন অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স’।

বিজ্ঞাপন

ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে ওঠা অণুজীবদের মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে বিশ্বব্যাপী প্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে গঠিত প্ল্যাটফর্মটির কো-চেয়ারের দায়িত্ব পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সঙ্গে কো-চেয়ার হিসেব থাকছেন বার্বাডোজের প্রধানমন্ত্রী মিয়া মোত্তেলি। বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান, মন্ত্রী এবং বেসরকারি খাত ও নাগরিক সমাজের শীর্ষ ব্যক্তিত্বরাও এই উদ্যোগে সদস্য হিসেবে থাকছেন।

জাতিসংঘ বলছে, রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীবদের বিরুদ্ধে লড়াই করার উপযোগী ওষুধ তথা অ্যান্টিবায়োটিক সংরক্ষণের মাধ্যমে অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্সের মারাত্মক প্রভাব মোকাবিলা হবে ওয়ান গ্লোবাল লিডারস গ্রুপের অন্যতম কাজ। এই গ্রুপের সদস্যরা নিজেদের পরিচিতি ও প্রভাব কাজে লাগিয়ে এই বিষয়টিতে বিশ্ববাসীর মনোযোগ আকর্ষণ করবেন এবং প্রয়োজনীয় কাজ এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।

বিজ্ঞাপন

‘ওয়ান হেলথ গ্লোবাল লিডারস গ্রুপ অন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে ‘অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স’ ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তে থাকায় আশঙ্কা প্রকাশ করেন। বিশ্বজুড়ে সবার জন্য নতুন প্রজন্মের অ্যান্টিবায়োটিকের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিকভাবে সমন্বিত গবেষণা এবং বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি। এটি না করতে পারলে বিশ্বকে করোনা মহামারির চেয়েও মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের কাছে যেসব অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে, আমরা অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্সের কারণে তার আওতার বাইরে চলে যাচ্ছি। এর ফলে শিগগিরই আরেকটি বৈশ্বিক জরুরি অবস্থার মুখে পড়তে হতে পারে, যেটি হবে বর্তমান কোভিড-১৯ মহামারির চেয়েও মারাত্মক।

গণভবন থেকে দেওয়া ভিডিওবার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স মানুষ ও প্রাণী উভয়ের জন্য একটি বিশ্ব স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিপজ্জনক খাদ্য উৎপাদন আমাদের বিপজ্জনক ফলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। জনগণের স্বাস্থ্য, প্রাণি এবং নিরাপদ খাদ্য ও ফসলের উৎপাদন এবং পুরো পরিবেশের জন্য ঝুঁকির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের একযোগে কাজ করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

কো-চেয়ার হিসেবে অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স সম্পর্কিত আন্তঃসংস্থা সমন্বয় গ্রুপের সুপারিশগুলো কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের পক্ষে সমর্থন, কারিগরি এবং আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে সময়োপযোগী এই উদ্যোগটিকে সফল করার জন্যও বৈশ্বিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আশাবাদ জানান, বিশ্বনেতারা অ্যান্টিবায়োটিকের অশুভ বিকাশের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী সংঘবদ্ধ লড়াইয়ের প্রচেষ্টায় অবদান রাখবেন।

‘অ্যান্টিবায়োটিকের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার, ভুল ডোজ এবং সামগ্রিকভাবে দুর্বল সংক্রমণ প্রতিরোধ ক্ষমতার ফলে মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। তবে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। আমাদের সবার জন্য নতুন প্রজন্মের অ্যান্টিবায়োটিকের সাশ্রয়ী মূল্যে প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে,’— বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, ২০১৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যান দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশ ‘অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স কনটেইনমেন্ট ২০১৭-২০২২’-এর জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। এএমআর মোকাবেলায় সার্বজনীন স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য এটি বাংলাদেশের প্রচেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ছিল।

প্রধানমন্ত্রী নতুন প্রজন্মের অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের জন্য আরও গবেষণায় আন্তর্জাতিকভাবে সমন্বিত বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান। ডব্লিউএইচও, এফএও এবং ওআইই’কে এই সমন্বিত গ্রুপটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ এবং অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল প্রতিরোধের গুরুতর সমস্যা সমাধানের জন্য সম্মিলিত বৈশ্বিক উদ্যোগের জন্যও ধন্যবাদ জানান।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন