বিজ্ঞাপন

বিজিএমইএ ভবনের মতো সেতু ভবনও সরাতেই হবে: ডিএনসিসি মেয়র

December 15, 2020 | 11:08 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে যেভাবে বিজিএমইএ ভবন সরাতে হয়েছিল, একইভাবে বনানীতে ‘নিয়ম বহির্ভূতভাবে’ নির্মিত সেতু ভবনও সরাতেই হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, বনানী সড়ক সংলগ্ন খালি জায়গায় সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূতভাবে সেতু ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সেতু ভবন বিজিএমইএ ভবনের মতো সমস্যার কারণ। এটি এ সড়কের জন্য বড় সমস্যা তৈরি করেছে। আজ না হয় কাল এখান থেকে সেতু ভবন সরিয়ে নিতেই হবে।

মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশে (পিআইবি) তিন দিনব্যাপী ‘গণপরিবহন পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা’ বিষয়ক রিপোর্টিং প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।

পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ রাজধানীর হাতিরঝিলে সুউচ্চ একটি ভবন তৈরি করেছিল। তবে ভবনটি নির্মাণে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমতি ছিল না। বিষয়টি উচ্চ আদালতের নজরে এনে ২০১০ সালে রিট করলে ২০১১ সালে হাইকোর্ট ভবনটি ভাঙার নির্দেশ দেন। এরপর আপিল ও রিভিউয়ে ভবনটি ভাঙার সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে দফায় দফায় সময় প্রার্থনা করে বিজিএমইএ। শেষ পর্যন্ত এ বছরের জানুয়ারিতে ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়। এই ভবনের উদাহরণ দিয়েই ডিএনসিসি মেয়র বনানীর সেতু ভবনটিও ভেঙে ফেলার কথা বলেছেন, যিনি নিজে একসময় বিজিএমই সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন।

বিজ্ঞাপন

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি সংলগ্ন সেতু ভবনের ওই খালি জায়গায় গাছপালা ছিল। কংক্রিটে আচ্ছাদিত এ শহরের ওই গাছগুলো ‘অক্সিজেন হাব’ ছিল। কিন্তু সেতু কর্তৃপক্ষ সেখানকার গাছ কেটে এ ভবন তৈরি করায় এ এলাকার পরিবেশ ও যোগাযোগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ ধরনের সড়কের পাশে এমন একটি খালি জায়গা থাকাও খুবই জরুরি।

মেয়র বলেন, সেতু ভবনের পাশের ২০ ফুট রাস্তা। এই রাস্তায় এখনই লোড নিতে পারে না। ওদিকে পূর্বাচলে ১০ লাখ মানুষের বসবাস হবে। ওরা যদি ঢাকায় আসতে চায়, তখন কী অবস্থা হবে? তাই এটা ভাঙতেই হবে। এখানে কেন সেতু ভবন হলো, সে বিষয়ে সড়ক পরিবহনমন্ত্রীর কাছে আমি জানতে চেয়েছি। এখন আবার বনানী এলাকায় রাস্তার পাশে বড় বড় ভবন হচ্ছে। প্রয়োজনে সাংবাদিকদের নিয়ে আমি সেখানে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করব। এখানে ভবন রাখা যাবে না। এ শহরকে বাসযোগ্য করতে হলে সুষ্ঠু পরিকল্পানামাফিক ভবন তৈরি করতে হবে।

আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীকে সেতু ভবনের বিষয়ে আমি আপত্তি জানিয়েছি। সেতু ভবন বিজিএমইএ ভবনের মতো সমস্যার কারণ। ফলে বনানীকে সেতু ভবন থাকতে পারে না। সরাতেই হবে। বিল্ডিং করার জন্য অনেক জায়গা আছে। মূল সড়কে আর কোনো বিল্ডিং যেন না করা হয়, এগুলো পরিকল্পনার ব্যাপার। পরিকল্পনাগুলো বাস্তবসম্মতভাবে করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের ব্যাপক উন্নতি হচ্ছে উল্লেখ করে আতিকুল ইসলাম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন। তার সময়ে তিনি যেসব পরিকল্পনা নিয়েছিলেন, সেগুলো বাস্তবায়ন করতে পারেননি। এরপর দীর্ঘ সময়ে যারা দায়িত্বে ছিলেন, তারা এ শহরের পরিকল্পিত উন্নয়নে ভূমিকা রাখেননি। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের ব্যাপক উন্নতি হচ্ছে। তিনি ১০০ বছর মেয়াদি ডেল্টা প্ল্যান করেছেন। এর সুফল জাতি অবশ্যই পাবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা সচল ও বাসযোগী করতে নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ প্রদান করেছেন। তারই অংশ হিসেবে রামপুরা থেকে কালাচাঁদপুর পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে ওয়াটার ট্যাক্সি চলাচল করতে ৯টি ব্রিজ উঁচু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ডিএনসিসির ফুট ওভারব্রিজগুলোতে এস্কেলেটার সংযুক্ত করা হবে। সে লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে।

গণপরিবহন ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ঢাকা সম্পূর্ণ অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। ট্রাক টার্মিনাল নেই, শহরের ভেতরে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল গড়ে তোলা হয়েছে। এসব চিত্র পৃথিবীর কোথাও নেই। এছাড়া বাসের রুট পারমিটেও চরম নৈরাজ চলছে। আমরা দুই মেয়র এ বিশৃঙ্খলা বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি, এ প্রক্রিয়াটি মেয়রদের নেতৃত্বে পরিচালনা করার জন্য। তিনি আশ্বস্ত করেছেন। আশা করি এ সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান মিলবে।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। এ উন্নয়নকে টেকসই করতে সব পেশাজীবীর মধ্যে সমন্বয় সাধন করে কাজ করতে হবে। সাংবাদিকদের সঙ্গে সমন্বিতভাবে পেশাজীবীরা কাজ করতে সম্মত আছে।

বিজ্ঞাপন

সভাপতির বক্তৃতায় পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেন, ঢাকা শহরের অনেক সমস্যা রয়েছে। সেসব সমস্যার সমাধানে সাংবাদিকরা ভূমিকা রাখতে পারে। সে জন্য পিআইবি থেকে সাংবাদিকদের নগর সাংবাদিকতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ প্রশিক্ষণ সাংবাদিকদের পেশাগত মানোন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

সারাবাংলা/এসবি/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন