বিজ্ঞাপন

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে তাগিদ সংসদে

January 20, 2021 | 5:17 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছে। এ জন্য দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে তাগিদ দিয়েছেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা। তারা বলেন, ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে ক্লাস হলেও তা যথেষ্ট নয়। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২০ জানুয়ারি) রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তব নিয়ে আলোচনায় তারা এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে এই আলোচনায় অংশ নেন বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, সরকারি দলের সদস্য মো. মোতাহের হোসেন, সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার, আনোয়ার আবেদীন খান, ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, মো. আব্দুল আজিজ, এম এম শাহাজাদা ও খালেদা খানম এবং স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু।

প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, করোনাকালে বিমান ও পর্যটন খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে করোনা মোকাবিলা করে এই খাতকে সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমরা অন্যান্য দেশের তুলনায় ভালো আছি। করোনার সময় সারাবিশ্বেই বিমান বন্ধ ছিল। তারপরও আমরা বিমানকে সচল রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা চেষ্টা করেছি ক্ষতিটা কিছুটা পুষিয়ে নেওয়ার। এখনো অনেক দেশে বিমান বন্ধ আছে। কিন্তু আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিমান চালিয়ে যাচ্ছি।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বিমানবহরে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন উড়োজাহাজ। বিমানবন্দরগুলো আধুনিকায়নের কাজ চলছে। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে কাজ চলছে। ফলে এই খাতের দ্রুত উন্নয়ন সম্ভব হবে। করোনার প্রভাবে যেখানে সারাবিশ্বে মন্দা দেখা দিচ্ছে, তখন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখা সম্ভব হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোতাহের হোসেন বলেন, শিক্ষার উন্নয়নে এই সরকার অভূতপূর্ব পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশ ডিজিটাল হওয়ার কারণে অনলাইনে ক্লাস চলছে। ভার্চুয়াল ক্লাস হলেও গ্রামের শিক্ষার্থীরা খুব বেশি উপকৃত হতে পারছে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই যত দ্রুতসম্ভব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হোক।

তিনি আরও বলেন, তিস্তা নদী তার এলাকার দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদীতে পানি নেই। হেঁটেই নদী পার হওয়া যায়। ভারত থেকে যে পানি আসে, তা খুব সামান্য। এতে আবাদের কাজ হয় না। তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন হলো না। দ্রুত এই চুক্তি বাস্তবায়ন করা গেলে ওই অঞ্চলের মানুষ যথেষ্ট উপকৃত হবে।

করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার জবাবে সাবেক হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার বলেন, এখনো ভ্যাকসিন আসেনি। এরই মধ্যে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ করা হচ্ছে। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যারা দেশ চায়নি, তারা দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির বিরুদ্ধে সমালোচনা ও ষড়যন্ত্র করবে— এটাই স্বাভাবিক। জনগণকেই এর বিরুদ্ধ রুখে দাঁড়াতে হবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।

সরকারী দলের সামিল উদ্দিন শিমুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সমৃদ্ধ দেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দেশের বড় রাজনৈতিক দল স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তিকে সহযোগিতা করে দেশকে অস্থির করার অপচেষ্টা করছে। এই অপচেষ্টাকে প্রতিহত করে সারাদেশের মানুষের কাছে শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও ভালোবাসা পৌঁছে দিতে হবে।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বগুড়াতে বিমানবন্দর স্থাপনের দাবি জানান স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু। তিনি বলেন, বগুড়ায় পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। সরকার চাইলেই উত্তরবঙ্গের জনগণের এই দাবি পূরণ করা সম্ভব। তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পাশাপাশি মসজিদের ইমামদের ভাতা বাড়ানো ও বিদ্যুৎ বিল মওকুফের দাবি জানান।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদিন খান বলেন, ২০১৯ সালে সংসদে পরিবেশবান্ধব ইট ব্যবহার নিয়ে একটি আইন পাস হয়েছিল। কিন্তু আইন পাসের পর তা যদি বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে এটি করার অর্থ কী? সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

একই দলের আরেক সদস্য আব্দুল আজিজ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের কারণে এই করোনাকালেও দেশের অর্থনীতি সচল রাখা সম্ভব হয়েছে। নানামুখী যড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবিলা করে সরকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য খালেদা খানম বলেন, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রকল্পগুলো এই সরকার গ্রহণ করেছে। পদ্মাসেতু তৈরির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববাসীতে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলসহ সরকারের নেওয়া ২৪টি মেগা প্রকল্পের বাস্তবায়ন শেষ হলে দেশের অর্থনীতি বদলে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন