January 27, 2021 | 3:40 pm
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে কোহিনুর বেগম ওরফে মালা নামে ছিনতাইকারীদের এক আশ্রয়দাতাসহ ২৪ ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি (ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গ্রেফতার মালা রাজধানীর মুগদা এলাকায় একটি বাসা ভাড়া করে থাকতেন। তিনি রাজধানীর ডাকাত দলের সর্দার। মালার বাসায় বিভিন্ন ডাকাত ও ছিনতাইকারী ছিনতাই শেষে আশ্রয় নিত। তার বাসায়ই ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের বিভিন্ন মালামাল ভাগ-বাটোয়ারা হয়। এমনকি কোনো ডাকাত কিংবা ছিনতাইকারী গ্রেফতার হলে এই মালাই আদালত থেকে ছাড়িয়ে আনতে টাকা-পয়সা খরচ করে তদবির করে।
মো. মাহবুব আলম বলেন, ডাকাতির প্রস্তুতিকালে মালাসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা রমনা বিভাগ। মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) মুগদা থানা এলাকা থেকে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, কোহিনুর বেগম ওরফে মালা (আশ্রয়দাতা), রাসেল মাহমুদ, মো. মাসুদ মিয়া, শামীম, মো.আমিনুল ইসলাম হৃদয়, পারভেজ, শহিদুল, বাবু ওরফে ব্লেড বাবু, ও মো. জয় মিয়া। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি চাপাতি ও দুইটি ছোরা উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, মালার নামে একাধিক ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে। এমনকি শাহবাগে ডাকাতির পর হত্যার ঘটনাতেও মালার নাম উঠে আসে।
তিনি বলেন, মালা ও তার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে ডাকাত দলের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছিল। তারা ডাকাত দলের কোনো সদস্য কখনও গ্রেফতার হলে বা কোনো বিপদে পড়লে তাদের জামিন করার ব্যবস্থাসহ সব ধরনের সহযোগিতা করে থাকে। তাদের এই সহযোগিতার জন্য তারা লুট করা মালামালের একটি বড় অংশের ভাগ নেয়।
ডাকাতির ঘটনায় প্রভাবশালীরা ডাকাতদের পৃষ্ঠপোষকতা করতো কি না এবং তারা আইনের আওতায় আসবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবি কর্মকর্তা বলেন, ডাকাতদের প্রভাবশালী কেউ পৃষ্ঠপোষকতা করতো না। তবে কয়েকজনকে পেয়েছি যারা তাদেরকে বিভিন্নভাবে সহয়তা করত। তাদেরকে আমরা আইনের আওতায় আনবো।
যাত্রীদের চোখে-মুখে মলম বা স্প্রে দিয়ে অজ্ঞান করে ছিনতাই করত তারা:
রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকা থেকে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে অজ্ঞান পার্টির ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (রমনা )।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. মোজাম্মেল হোসেন ওরফে মুজা, মো. কালু, মো. ইলিয়াস, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. সুমন হোসেন, মো. ইকবাল হোসেন, মো. মিটন, মো. রবি আউয়াল ও মো. হেলাল। এসময় তাদের কাছ থেকে অজ্ঞান করার ৫টি স্প্রে, ৪টি মোস্তফা গুল, ৪টি জাম-বাগ মলম, ৪টি পাগলা মলম ও জিপারে ৩ প্যাকেটে মরিচের গুড়া জব্দ করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, ঢাকা শহরের বিভিন্ন মার্কেট- শপিংমল, বাসস্ট্যান্ড, সদরঘাট ও রেলস্টেশন এলাকায় ব্যক্তিদের টার্গেট করত তারা। টার্গেটকৃত ব্যক্তি যখন বাসে উঠতে যায় তখন তারা সুযোগ বুঝে কৌশলে তাদের চোখেমুখে মলম বা স্প্রে দিয়ে অজ্ঞান করে তাদের সঙ্গে থাকা সবকিছু নিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।
বাসে যাত্রীরা মোবাইলে কথা বলতে গেলে মোবাইল ছিনতাই করত তারা:
বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধ মোবাইল চোরাকারবারি দলের ৬ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মতিঝিল গোয়েন্দা বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ টিম। ছিনতাইকারীরা টার্গেট করে বাসের যাত্রীদের থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নিতো। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩০টি চোরাই মোবাইল উদ্ধার করা হয়। বুধবার (২৭ জানুয়ারি) তেজগাঁওয়ের টিসিবি কার্যালয়ের সামনে থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. রবিন ওরফে নবী, মো. ছাঈদ, মোছা. রুনা ওরফে রোজিনা, মনোয়ার, মো. রুবেল মিয়া ওরফে হাসান ও আলআমীন।
যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, আসামিরা পেশাদার সংঘবদ্ধ চোরাই চক্রের সক্রিয় সদস্য। এ বিষয়ে তেজগাঁও থানায় নিয়মিত মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন।
সারাবাংলা/ইউজে/এসএসএ