বিজ্ঞাপন

এক মানিকের দণ্ডে অন্য মানিক কারাগারে, আদেশ রোববার

March 3, 2021 | 10:50 am

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা:

বিজ্ঞাপন

শুধু নামের সঙ্গে মিল থাকায় মো. মানিকের মিয়ার স্থলে জেল খাটছেন শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জের মানিক হাওলাদার। এ বিষয়ে আদেশের দিন পিছিয়ে আগামী রোববার (৭ মার্চ) ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওইদিন এ বিষয়ে তদন্ত করে শরীয়তপুর জেলার পুলিশ সুপারকে (এসপি) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (৩ মার্চ) বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে গতকাল (২ মার্চ) শুনানি শেষে আজ (৩ মার্চ) আদেশের জন্য রেখেছিলেন হাইকোর্ট।

আদালতে নির্দোষ মানিকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী পার্থ সারথী রায়। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

বিজ্ঞাপন

আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করে আবেদনের পক্ষের আইনজীবী পার্থ সারথী রায় সারাবাংলাকে বলেন, মাদকের মামলায় কারাগারে থাকা নির্দোষ মানিক হাওলাদারের স্ত্রী সালমার আবেদনের শুনানি শেষে আদালত আগামী ৭ মার্চ (রোববার) আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন। এই সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে তদন্ত করে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপারকে (এসপি) হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে মাদকের দ্রব্য আইনের মামলায় চার বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত মো. মানিক মিয়ার পরিবর্তে বর্তমানে কারাগারে থাকা নির্দোষ মানিক হাওলাদারের মুক্তি চেয়ে তার স্ত্রী সালমা গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আবেদন করেন।

আদালতে নির্দোষ মানিকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী পার্থ সারথী রায়। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

বিজ্ঞাপন

মানিকের স্ত্রী সালমার আবেদনে মানিককে স্বশরীরে আদালতে হাজির করা, তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া এবং এ ঘটনায় মানিককে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

আইনজীবী পার্থ সারথী রায় জানান জানান, এর আগে ২০০৯ সালে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানায় দায়ের করা একটি মাদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত মো. মানিক মিয়ার স্থলে মানিক হাওলাদারকে শরীয়তপুর থেকে গত ১৩ জানুয়ারি গ্রেফতার করে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ। গ্রেফতারের পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। তাই তার স্ত্রী সালমা স্বামী মানিক হাওলাদারের মুক্তির নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। সাথে সাথে তাকে যাতে আদালতে স্বশরীরে উপস্থিত করার জন্যেও নির্দেশনা দেওয়া হয় সেটির আর্জিও জানানো হয়েছে এবং বিনা দোষে কারাগারে যাওয়ার জন্যে যে ক্ষতি হয়েছে সেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্যে নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।

২০০৯ সালে একটি গাড়িতে ৬৬৮ বোতল ফেনসিডিল পাওয়া যায়। এর মধ্যে আসামি আল আমিন মিয়ার কাছে ১০ বোতল ফেনসিডিল পাওয়া যায় বলে ২ জুন সিরাজগঞ্চের সলঙ্গা থানায় করা মামলায় অভিযোগ আনা হয়। মামলায় গাড়িতে থাকা চার জনকে আসামি করা হয়। পরে ওই মামলার আসামি মো. মানিক মিয়াকে ২০০৯ সালের ৩ জুন গ্রেফতার করেন পুলিশ। পরে তিনি প্রায় ছয় মাস কারাভোগের পর একই বছর হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।

মামলার দায়েরের দীর্ঘ ১০ বছর পর ২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জ দায়রা জজ আদালতের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক ফাহমিদা কাদের ওই মামলার রায় ঘোষণা করেন।

বিজ্ঞাপন

রায়ে চার আসামিকে চার বছরের কারাদণ্ডের রায় দেন। আসামিরা হলেন, ফরিদপুরের আলফা ডাঙ্গার মন্টু শেখ ওরফে জামাল উদ্দিন ও সোহরাব হোসেন। পটুয়াখালী বাওফল থানার মো. জামাল হোসেন ও শরীয়ত পুর জেলার সখিপুর থানার পলাতক মো. মানিক মিয়া।

কিন্তু গত ১৩ জানুয়ারি সাজাপ্রাপ্ত মো. মানিক মিয়ার স্থলে শুধু নামের মিল থাকার কারণে মানিক হাওলাদারকে শরীয়তপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

মানিক হাওলাদারের ছোট ভাই রতন হাওলাদার বলেন, আমি ঢাকায় কাজ করি। মানিক আমার বড় ভাই। সে গ্রামে মাছ বিক্রি করে সংসার চালাতো। তার চারটি ছেলে মেয়ে। কষ্ট করে সংসার চলতো। কিন্তু আমার বাবার নাম নজরুল ইসলাম আর মায়ের নাম রেজিয়া বেগম। গ্রাম আলম চাঁন ব্যাপারী কান্দী। ওয়ার্ড নং- ৯। ডাকঘর ও থানা: সখিপুর, উপজেলা: ভেদরগঞ্জ, জেলা: শরীয়তপুর। জন্ম তারিখ ১৯৭৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর।

অন্যদিকে মামলার যে প্রকৃত আসামি মো. মানিক মিয়া। তার বাবার নাম ইব্রাহিম মৃধার স্থলে খালু নজরুল হাওলাদার, মায়ের নাম: লুতফার স্থলে খালা অরুনার নাম ব্যবহার করেছেন। বাকি সবকিছু একই রেখেছেন।

শুধু দুজনের নামের মিল থাকায় আমার ভাইকে আসামি করা হয়েছে। ভাইকে বিনাদোষে পুলিশ ধরে নিয়ে কারাগারে দিলো আমরা ভাইয়ের মুক্তি চাই। ভাই কারাগারে থাকায় তার সংসার ভালোভাবে চলছে না এর জন্যে ক্ষতিপূরণ চাই।

মামলার প্রকৃত আসামি মানিক মিয়ার বাবার নাম ইব্রাহিম মৃধা, মাতা: লুতফা, গ্রাম: মালত কান্দী, ওয়ার্ড- ৬, ডাকঘর ও থানা: সখিপুর, উপজেলা: ভেদরগঞ্জ, জেলা শরীয়তপুর।

এ বিষয়ে আইনজীবী পার্থ সারথী রায় বলেন, এ ঘটনায় হাইকোর্টে করা আবেদনে নির্দোষ মো. মানিককে সশরীরে আদালতে উপস্থিত করার আর্জি, নাম-পরিচয় যাচাই করে মুক্তির নির্দেশনা এবং ক্ষতিপূরণের আবেদন করা হয়েছে।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এনএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন