বিজ্ঞাপন

সড়কে মোটরসাইকেলের মহড়া নিয়ে বিরোধে খুন, আটক ২৪

March 17, 2021 | 2:11 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় সড়কে সাউন্ডবক্স বাজিয়ে মোটরসাইকেলের মহড়া নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে হাশেম খান (৩৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেম কমপক্ষে দুই জন।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৭ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ জাম্বুরি পার্কের পাশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ২৪ জনকে আটক করেছে।

নিহত হাশেম খান (৩৫) আগ্রাবাদের রঙ্গীপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তার বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়। তিনি সাউন্ডবক্সের মেকানিক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

ওসি মহসীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘রঙ্গীপাড়া থেকে জাম্বুরি মাঠের দিকে মোটরসাইকেলের মহড়া দিয়ে একদল তরুণ-যুবক আসছিল। সামনে-পেছনে মোটরসাইকেল নিয়ে পিকআপ ভ্যানে উচ্চস্বরে সাউন্ডবক্স বাজিয়ে তারা যাচ্ছিল। এসময় মহসীন নামে স্থানীয় এক যুবক রিকশায় করে যাচ্ছিল। এই মহড়া অতিক্রমের সময় তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হলে মহসীনের ডাকে এলাকার লোকজন জড়ো হয়। পরে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।’

ওসি জানান, সংঘর্ষের মধ্যে বুকের বামপাশে ছোরা অথবা ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হাশেম আহত হন। তাকে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া আরও দু’জন আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

আহত ‍দু’জনের নাম— ফাহিম ও রবিউল। তাদের বয়স ২০ থেকে ২২ বছরের মধ্যে বলে জানিয়েছেন চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম।

আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল থেকে দুপুর ২টার দিকে নিহত হাশেমের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ হয়ে মর্গে নেওয়া হয়। হাসপাতালে জরুরি বিভাগের সামনে যান হাশেমের স্বজন, সাউন্ডবক্সের মালিকসহ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন।

রঙ্গীপাড়ার বাসিন্দা সাউন্ডবক্সের মালিক রোমেন চৌধুরী সারাবাংলাকে জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রঙ্গীপাড়ার একটি ক্লাবের পক্ষ থেকে সাউন্ডবক্স এবং ৭০টি মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেল নিয়ে র‌্যালি বের করা হয়। পিকআপে নেওয়া এক জোড়া সাউন্ড বক্স ভাড়া নেওয়া হয় রোমানের কাছ থেকে। রোমানের কর্মচারী হিসেবে হাশেম ও সাইফুল ছিল সাউন্ডবক্সগুলোর দায়িত্বে।

প্রত্যক্ষদর্শী সাইফুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘সাউন্ডবক্স বাজানো হচ্ছিল। আগ্রাবাদ জাম্বুরি পার্কের সামনে রাস্তায় মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেল দিয়ে কসরত দেখানো হচ্ছিল। এসময় গাড়ি আটকে যায়। একটি রিকশা থেকে নেমে একজন তাদের সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু করে। সেখানে হাতাহাতি হয়। পরে আবার সে লোকজন ডেকে আনে। তখন মারাামরি শুরু হলে আমি পালিয়ে যায়। পরে এসে দেখি, হাশেম ভাইকে ছুরি মেরেছে।’

বিজ্ঞাপন

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন হাশেমের স্ত্রী জরিনা বেগম ও ১১ বছর বয়সী মেয়ে সুমাইয়া ইসলামসহ স্বজনরা।

হাশেমের স্বজনরা জানান, আগ্রাবাদ মালিপাড়ায় হাশেমের টেলিভিশন মেরামতের দোকান ছিল। হাশেম টেলিভিশন মেরামতের পাশাপাশি সাউন্ডবক্সের মেকানিক হিসেবে কাজ করত।

কান্নায় ভেঙে পড়ে জরিনা বেগম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার স্বামী সকাল ৯টায় বাসা থেকে বের হয়। ২টায় বাসায় ফিরবে বলেছিল। আমাকে বলেছিল ভাত রান্না করতে। আমি রান্না করেছি। দুপুর ১টার দিকে শুনতে পাই, হাশেমকে মেরে ফেলেছে। আমার মা-বাবা কেউ নাই। আমার স্বামীকেও মেরে ফেলেছে। আমার তো আর কেউ থাকল না। আমার স্বামীকে যারা মেরেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই।’

সারাবাংলা/আরডি/এসএসএ/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন