বিজ্ঞাপন

ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে ঋণের নামে ২১ লাখ টাকা হাতিয়ে ধরা

June 20, 2021 | 10:22 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে তথাকথিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুলে ঋণ দেওয়ার নামে জামানত হিসেবে প্রায় ২১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৯ জুন) রাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার মো. মনজিল (৩৮) নগরীর শেখ মুজিব রোডের আগ্রাবাদ সেন্টারের চতুর্থ তলায় বিএসএম বিজনেস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল লজিস্টিকস কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতেন। তবে প্রতিষ্ঠানটির কোনো বৈধ নিবন্ধন পায়নি পুলিশ। এরপরও কারও যাতে সন্দেহ না হয়, সেজন্য প্রতিষ্ঠানের বোর্ড মেম্বার ও অর্গানোগ্রাম নির্ধারণ করেন। সেই অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী সাইফুল ইসলাম নামে একজনকে চেয়ারম্যান, মামুনুর রশিদ চৌধুরীকে মহাব্যবস্থাপক, নাহিদুল ইসলামকে উপ-মহাব্যবস্থাপক এবং মোছাম্মৎ সাগরিকাকে অডিট অফিসার হিসেবে দেখানো হয়।

ওসি মহসীন সারাবাংলাকে জানান, শুধু চেয়ারম্যান কিংবা এমডি নন, ওই ভুয়া প্রতিষ্ঠানটি মাঠ পর্যায়ে সদস্য সংগ্রহ ও ঋণ বিতরণের জন্য নিয়োগ দেয় এরিয়া ম্যানেজার। তাদের অধীনে নিয়োগ দেওয়া হয় প্রায় অর্ধশত মাঠকর্মী। তারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মানুষের কাছ থেকে ঋণের নামে জামানত সংগ্রহ করে। পাঁচ লাখ টাকা ঋণের জন্য ১০ হাজার, দশ লাখের জন্য ১৫ হাজার এবং এগার লাখ থেকে ত্রিশ লাখের জন্য ২৩ হাজার টাকা ও ৫০ লাখের জন্য ৪৩ হাজার টাকা জামানত নির্ধারিত ছিল। এছাড়া ৫১ লাখ থেকে এক কোটির জন্য ৮২ হাজার টাকা জামানত নির্ধারণ করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। কেউ ঋণ নিতে চাইলে তাকে আলাদা ফি দিয়ে সদস্যপদ সংগ্রহ ও জামানত দিতে হতো।

বিজ্ঞাপন

২০২০ সালের ১ জুন থেকে ২১ জুলাইয়ের মধ্যে এই প্রতারক চক্র কয়েকশ মানুষের কাছ থেকে মোট ৩২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা বলে ২০ লাখ ৫১ হাজার টাকা নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে যায় বলে জানান ওসি মহসীন।

পুলিশ জানায়, সিলেটে গিয়েও একই কায়দায় প্রতারণা শুরু করে। চট্টগ্রামে বিভিন্নজনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে তথাকথিত চেয়ারম্যান সাইফুলসহ চারজনকে গ্রেফতার করে ডবলমুরিং থানা পুলিশ। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মনজিলকে গ্রেফতার করা হয়। এ সংক্রান্ত একটি মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

প্রতারণার জগতে মনজিলের উত্থানের বর্ণনা দিয়ে ওসি মহসীন বলেন, ‘মনজিল পঞ্চম শ্রেণি পাস। ডবলমুরিং এলাকায় একটি মুদির দোকান ছিল। লোকসানে পড়ে সেটি বন্ধ হয়ে গেলে ঢাকায় গিয়ে চাকরি নেয় একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে। সেখানে একটি মানব পাচারকারী চক্রের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তাদের বুদ্ধিতে কিছুদিন বিভিন্ন জেলায় ঘুরে অনলাইন কোম্পানিতে চাকরি দেওয়ার নামে অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। পরে চট্টগ্রামে এসে তথাকথিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুলে নিজে সেজে বসেন এমডি। এভাবেই প্রতারণার জাল বিস্তার করে নগরীর বিভিন্ন এলাকায়।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন