বিজ্ঞাপন

ঈদের ছুটিতেও কঠোর থাকছে বিধিনিষেধ!

July 7, 2021 | 9:34 pm

ঝর্ণা রায়, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এক মাসে করোনা সংক্রমণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মৃতের সংখ্যা। মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা গেলে করোনা সংক্রমণ কমে আসবে বলে মনে করছে করোনা মোকাবিলার দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্তৃপক্ষ।

বিজ্ঞাপন

সে লক্ষ্যে সারাদেশে কঠোর বিধিনিষেধ চলমান রয়েছে। কোরবানি ঈদেও এই সিদ্ধান্ত অব্যাহত থাকবে নাকি বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে— তা নিয়ে আলোচনা চলছে। করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকলে কঠোর বিধিনিষেধ অব্যাহত থাকবে, এমন আভাস পাওয়া গেছে সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকদের কথায়।

এর আগে, ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া কঠোর বিধিনিষেধ প্রথম পর্যায়ে সাত দিনব্যাপী কার্যকর করার কথা থাকলেও সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায়, আরও সাতদিন বাড়িয়ে বিধিনিষেধের মেয়াদ ১৪ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত টেনে নেওয়া হয়। জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রণে এই সময়ের মধ্যে গণপরিবহন এবং দাফতরিক কার্যক্রম বন্ধ রাখারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সব রেকর্ড ভেঙে একদিনে ২০১ মৃত্যু

এদিকে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০ বা ২১ জুলাই বাংলাদেশে মুসলিমদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে। ১১ জুলাই চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক থেকে কোরবানি ঈদের তারিখ জানা যাবে।

বিজ্ঞাপন

এরই মধ্যে, ঈদ ২১ জুলাই ধরে নিয়ে সরকারি ছুটি ২০-২২ জুলাই (মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতি) এই তিন দিন প্রস্তাব করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শুক্রবার-শনিবার মিলে মোট পাঁচ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হবে। এই ছুটিতে কর্মস্থল ত্যাগ করা যাবে কি না, তা নিয়েও আলোচনা চলমান রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, গত ঈদে মানুষ যেভাবে গাদাগাদি করে বাড়িতে গেছে তার বিরূপ প্রভাব সবাই দেখেছে, এবারের ঈদটা বড় চ্যালেঞ্জ। এবার কী পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে এবং সংক্রমণ কিভাবে কমিয়ে আনা যায় — তা নিয়ে সরকার পরিকল্পনা করছে।

ঈদের সময়ও চলমান কঠোর বিধিনিষেধ জারি থাকবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সবকিছু নির্ভর করবে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির ওপর। ঈদের সময় নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া কী হবে সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। কারণ, সংক্রমণ যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে তাতে চিন্তার বিষয়। তৃতীয় সপ্তাহটা গুরুত্বপূর্ণ। ১৪ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটা পর্যায় পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ চেষ্টা চলবে। পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে, পরিস্থিতি বুঝে সর্বজনের কল্যাণের কথা বিবেচনা করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

সরকারি নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমিয়ে আনতে জন-যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই। বিধিনিষেধই সবচেয়ে বেশি কার্যকর পদক্ষেপ।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানাচ্ছে, ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ প্রতিপালন করে তার পর্যালোচনা হবে। সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসলে ঈদকে সামনে রেখে বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করা যায় কি না? সেদিকটিও ভেবে দেখা হচ্ছে।

কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল হয়ে কেমন হতে পারে ? এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সারাবাংলাকে জানান, সবকিছুই এখনো আলোচনা পর্যায়ে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, নানান দিক থেকে আলোচনা হচ্ছে। সংক্রমণ কমে আসলে গণপরিবহন, শপিংমল শর্ত দিয়ে খুলে দেওয়া যায় কি না কিংবা অন্যকোনো উপায় আছে কি না? যদি বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয় তাহলে, স্বাস্থ্যবিধি কিভাবে নিশ্চিত করা হবে? এসব দিক নিয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে। সবকিছু সংক্রমণ পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে, এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় ৫ এপ্রিল স্বাস্থ্যবিধি পালনের ওপর জোর দিয়ে প্রথম বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। যা ধারাবাহিকভাবে ১৫ জুলাই পর্যন্ত বহাল রাখা হয়। এরপর করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ১ জুলাই থেকে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়। যা ১৪ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এই সময়ের মধ্যে জরুরি সেবার বাইরে থাকা সব ধরনের যানবাহন চলাচল এবং দাফতরিক কার্যক্রম রাখার ব্যাপারে সরকারি নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

সারাবাংলা/জেআর/একেএম

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন