বিজ্ঞাপন

ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতা তিতাসের বিরুদ্ধে

September 17, 2021 | 9:57 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তিতাস উদ্দিন গিয়াসের বিরুদ্ধে আবাসিক হোটেলে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ ও বিয়ের নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মামলাও করেছেন ভুক্তভোগী এক তরুণী।

বিজ্ঞাপন

ছাত্রলীগ নেতা তিতাসের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

ধর্ষণের অভিযোগ এনে ভুক্তভোগী তরুণী যশোরের কোতয়ালী থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলার পর অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা তিতাস উদ্দিন গিয়াস ওই তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে মামলা উঠিয়ে নিতে বলেন।

ভুক্তভোগী তরুণীর সঙ্গে বিয়ে হলে সেই মামলায় আপস হয় তাদের মধ্যে। তবে তরুণীর অভিযোগ— ভুয়া কাবিননামায় বিয়ে করে কয়েকমাস সংসারের নাটক করেছেন তিতাস। মামলা থেকে বাঁচার জন্য তার সঙ্গে বিয়ের নামে প্রতারণা করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ভুক্তভোগী তরুণী সারাবাংলাকে বলেন, যশোর সদর উপজেলার সুলতানপুর মধ্যপাড়ার শাহ আলমের ছেলে তিতাস উদ্দিন গিয়াসের সঙ্গে ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মোবাইল ফোনে পরিচয়। এরপর প্রায়ই আমাদের কথাবার্তা হতো। একপর্যায়ে আমাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। কথা বলার কয়েকদিন পর তিতাস আমাকে দেখা করতে বলে ও বিয়ের প্রস্তাব দেয়।

তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তিতাস আমাকে যশোর দড়াটানা মোড়ে দেখা করতে বলেন। এরপর দেখা করার নাম করে তিতাস আমাকে যশোর হোটেল নামে একটি আবাসিক হোটেলের ৪১৪ নম্বর রুমে নেয়। সেখানে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে আমাকে ধর্ষণ করা হয়।

তরুণী বলেন, ‘ওইদিন রাগারাগির একপর্যায়ে তিতাস সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। আমি মামলা করতে গেলে তিতাস আমাকে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল করে এবং কয়েকদিন পর আমাকে বিয়ে করবে বলে জানায়।’

বিজ্ঞাপন

ওই তরুণীর দাবি— ২০১৯ সালের ১৩ জানুয়ারি একই হোটেলে নিয়ে তিতাস তাকে ফের ধর্ষণ করে। বিয়ের জন্য ওই তরুণী চাপ দিলে তিতাস তালবাহানা করতে থাকে।

ওই তরুণী ২০১৯ সালের ১ জুলাই যশোর কোতোয়ালি থানায় তিতাসের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। মামলা নং- ৫।

মামলার হাত থেকে বাঁচার জন্য ২০১৯ সালের ২ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে তিতাস বিয়ের এফিডেভিট করে তা আদালতে জমা দেয়। এরপর ওই মামলার মীমাংসা হয়।

ওই তরুণী বলেন, ‘তিতাসকে বিয়ের পর আমি তার ভয়ঙ্কর রূপ দেখতে পাই। আমাকে ঢাকার সাভারে নিয়ে একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে রাখে। সেখানে নিয়ে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা শুরু করে। একপর্যায়ে তিতাস জানায়, তার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়নি। সব ডকুমেন্টস ভুয়া। তিতাস আমাকে বাসা থেকে বের করে দেয়। আমি প্রতারণার শিকার হয়ে ঢাকার নারী ও শিশু আদালতে মামলা করি। মামলাটি এখন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করছে।’

বিজ্ঞাপন

ওই তরুণীর অভিযোগ— মামলা করার পর ছাত্রলীগ নেতা তিতাস তাকে গুম-খুনের হুমকি দিচ্ছে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তিতাস উদ্দিন তিতাসের মোবাইল ফোনে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ছাত্রলীগ নেতা তিতাসের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে পিবিআইয়ের এসআই শামীম হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘তদন্তের প্রয়োজনে উভয়পক্ষের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। ওই তরুণী তার স্বপক্ষে কাগজপত্র আমাদের কাছে দিয়েছেন। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।’

পিবিআইয়ের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ওই তরুণীর সঙ্গে আগে নাকি তিতাসের পরিচয় ছিল না। মোবাইল ফোনে পরিচয়ের সূত্র ধরে মাঝেমধ্যে কথাবার্তা হতো। তবে ধর্ষণ ও বিয়ের নামে প্রতারণার বিষয়টি সত্য নয় বলে তিতাস পিবিআইয়ের কাছে দাবি করেছেন।’

তদন্ত শেষে শিগগিরই আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে জানান পিবিআইয়ের এসআই শামীম হোসেন।

সারাবাংলা/ইউজে/একে

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন