বিজ্ঞাপন

‘বিএনপির কিছু লোক জাতিসংঘ মহাসচিবকে চিঠি দিয়েছে’

January 26, 2022 | 6:20 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপি-জামায়াতের যুক্তরাষ্ট্রে লবিষ্ট নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য সংসদকে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এই সংসদকে অবৈধ প্রমাণ করতে বিএনপির কিছু লোক জাতিসংঘ মহাসচিবকে চিঠি দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সংসদে ৩০০ বিধিতে দেওয়া বিবৃতিতে এ তথ্য জানান।

এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির লবিস্ট নিয়োগ নিয়ে রোববার জাতীয় সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেছিলেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ এবং জাতীয় পার্টির এমপি মুজিবুল হক। এই প্রেক্ষাপটে বুধবার জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে এ বিষয়ে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ করা সে দেশের আইনে বৈধ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ভারত-পাকিস্তান-কাতার -সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও প্রতিষ্ঠান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কোন্নয়নে লবিস্ট নিয়োগ দিয়ে থাকে। কিন্তু, লবিস্ট নিয়োগের উদ্দেশ্য কী সেটা হল মুখ্য।

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত যুক্তরাষ্ট্রে মোট আটটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে। ২০১৪ সালে জামায়াত একটি ফার্ম নিয়োগ করে যুদ্ধাপারাধীদের বিচার বন্ধ করার জন্য। এজন্য তারা দেড় লাখ মার্কিন ডলার দেয়। বিচার বন্ধে তারা আরেকটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে তারা যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে প্রভাবিত করার জন্য পিস অ্যান্ড জাস্টিস নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ৩২ হাজার ডলার দিয়ে নিয়োগ করে। বিএনপি ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ২৭ লাখ ডলার প্রতি বছর প্রতিমাসে রিটেইনার ফি এক লাখ ২০ হাজার ডলার ব্যয় করেছে। এই তথ্যগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিএনপি ২০১৭ সাল পর্যন্ত চারটি এবং ২০১৯ সালে একটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে। আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে জামায়াত-বিএনপি তিনটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে।

মন্ত্রী বলেন, দুঃখের বিষয় লবিস্টরা এমন সব বক্তব্য তুলে ধরেছেন যেগুলো দেশের মানুষ জানলে ধিক্কার দেবে। লবিস্ট চিঠি দিয়ে বলেছে, বাংলাদেশে সাহায্য সহায়তা বন্ধ করে দিতে, উন্নয়ন যাতে ব্যাহত হয় সে জন্যই এমন দাবি।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, মাঠে ময়দানে যারা বিএনপির কর্মী আছেন তারা কেউ চাইবেন না দেশে ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাক। তাদের কিছু নেতৃস্থানীয় মানুষ তাদের অগোচরে এমন কাজ করেছেন। বিএনপি সদস্যরাও নিশ্চয় চান না দেশ রসাতলে যাক। তাদের নেতারা কীভাবে এসব লিখতে পারেন।

সরকারের লবিষ্ট নিয়োগ প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার লবিস্ট নিয়োগ করেনি। পিআর ফার্ম নিয়োগ করেছে। একটা হচ্ছে সিনেট, স্টেট ডিপার্টমেন্টে গিয়ে লবি করে তদ্বির করে, সরকার সে ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করেনি। সরকার যেটা করেছে অপপ্রচার, মিথ্যা তথ্য যেগুলো ছড়ানো হয় তার বিপরীতে সত্য তথ্যগুলো জানানোর জন্য। বিজিআর নামের একটি প্রতিষ্ঠান ২০১৪-১৫ সালে নিয়োগ দেওয়া হয়। সে সময় যুদ্ধাপারাধীদের বিচার বন্ধে বানোয়াট তথ্যের বিরুদ্ধে যেন বলা হয়। বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা বন্ধের জন্য বিজিআরকে নিয়োগ দেওয়া হয়। দেশের জন্য, দেশের জনগণের জন্য, দেশের মঙ্গলের জন্য এবং বিদেশে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধের জন্য, অপপ্রচারের বদলে সত্য কথা বলার জন্য বাংলাদেশ সরকার জনগণের মঙ্গলের জন্য যে ধরনের ব্যবস্থা প্রয়োজন তা নেওয়া হবে। তার একটি নমুনা হচ্ছে বিজিআর। তারা অসত্য তথ্য দিচ্ছেন তখন বিজিআরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপির কিছু কিছু লোক জাতিসংঘের মহাসচিবকে চিঠি দিয়েছেন সংসদকে অবৈধ ঘোষণা করার জন্য। এ ধরনের কাজ যারা করে তাদের প্রতি ধিক্কার। বিএনপি যে এতগুলো ফার্মে রাষ্ট্রবিরোধী কাজে এত টাকা ব্যয় করলেন তারা কি তাদের দলের আয় ব্যয়ের হিসাবে দেখিয়েছেন? তারা কি তাদের সব নেতার সঙ্গে আলোচনা করে এই কাজগুলো হয়েছে?

সরকার ও বিএনপির মধ্যে মতামতের ভিন্নতা থাকতে পারে কিন্তু তাই বলে দেশের অনিষ্ট করা যাবে না মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে কোথায় যান কী করেন সে খোঁজ নেওয়ার জন্য এফবিআইয়ের প্রতি এপ্রোচ করে বিএনপি নেতার ছেলে সিজার। তারা জয়কে অপহরণের ষড়যন্ত্র করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে সিজার ও তার সহযোগীদের সাজাও হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এএইচএইচ/একেএম

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন