বিজ্ঞাপন

সিপিবির ‘চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচি যেকোনো দিন

February 22, 2022 | 3:28 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, দেশ আজ গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত। এই অন্ধকার থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষার জন্য ‘চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বামগণতান্ত্রিক ধারার সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করে চলতি বছরের যেকেনো দিন এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর পুরানা পল্টনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে দলটির দ্বাদশ কংগ্রেস সফল করার লক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলটির নেতা আবদুল্লাহ আল কাফি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, দলটির নেতা লক্ষ্মী চক্রবর্তী, সাজ্জাদ জহির চন্দন ও শাহীন রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে মুজাহিদ ইসলাম সেলিম বলেন, ‘মানুষের মধ্যে দেশ প্রেম এখনো আছে। এই দেশপ্রেমের বিস্ফোরণ যেকোনো সময় হবে।’ তিনি বলেন, ‘এই কংগ্রেসের মধ্যে দিয়েই জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই শুরু হবে।’

বিজ্ঞাপন

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘রাজনীতি আজ লুটেরাদের হাতে চলে গেছে। এই লুটেরা গোষ্ঠীর ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখলে তাদের-ই লাভ হয়। সেজন্যই তারা লাভজনক অবস্থাকে চিন্তা-ভাবনায় রেখে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। এরশাদও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য ক্ষমতা কুক্ষিগত করে পুলিশি লাঠিয়াল দিয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় ছিল। সেই স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে লড়াই করে পতন ঘটিয়েছে। এবারও আমাদের লড়াই বিফলে যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘২৫, ২৬, ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে। এই কংগ্রেস সফল করার জন্য তিন মাস ধরে দলটির নেতাকর্মীরা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক রণকৌশলের দলিল করে গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য শত শত সংশোধনী পাঠিয়েছে। কংগ্রেসে সংশোধনী নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘একটি লাউ গাছ রোপন করলে শিগগিরই ফল দেয়। আর একটি তাল গাছ রোপন করলে সেই গাছটি যুগের পর যুগ ফল দিয়ে থাকে। কমিউনিস্ট পার্টি দেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য এমনই পদক্ষেপ নিয়েছে। এজন্য আমাদের কংগ্রেসের স্লোগান হচ্ছে- দুঃশাসন হটাও, ব্যবস্থা বদলাও, বিকল্প গড়ো। লুটপাটতন্ত্র, গণতন্ত্রহীনতা, সাম্প্রদায়িকতা, সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক। সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে বিপ্লবী গণতান্ত্রিক পরিবর্তন সাধন এবং আওয়ামী বিকেন্দ্রীকরণের বাইরে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তোলা হবে। কাঙ্ক্ষিত প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের দিকে দেশকে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতির একটি পদক্ষেপ সিপিবি দ্বাদশ কংগ্রেসে নিয়েছে।’

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে সিপিবিকে মিলিয়ে বিএনপি বানানো যাবে না। আবার সিপিবিকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলিয়ে আওয়ামী লীগ বানানো যাবে না। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি দেশ ও জাতির স্বার্থ রক্ষার জন্য নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করে আসছে। ভবিষ্যতেও একই ধারায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতি অব্যাহত থাকবে।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকাল ১০টায় ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে সারাদেশ থেকে আগত প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে যুবকদের নিয়ে কংগ্রেসের উদ্বোধনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। শুরুতেই দ্বাদশ কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির সংস্কৃতি পরিষদ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে। জাতীয় পতাকা ও কাস্তে-হাতুড়ি ঘোষিত পার্টির লাল পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে কংগ্রেসের উদ্বোধন ঘোষণা করা হবে। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম যথাক্রমে জাতীয় পতাকা ও পার্টির পতাকা উত্তোলন করবেন।

এর মধ্য দিয়ে কংগ্রেসের সাংগঠনিক অধিবেশন শুরু হবে এবং চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল পর্যন্ত। কংগ্রেসের অধিবেশনে আগামী চার বছরের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটি ও কমিশন নির্বাচন করা হবে এবং জাতীয় পরিষদ ঘোষণা করা হবে। এবারের কংগ্রেসে বিদেশি অতিথি সশরীরে উপস্থিত না থাকলেও এখন পর্যন্ত ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, ইরান, ফিলিস্তিন, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, পর্তুগাল, ইতালি, স্পেন, যুক্তরাষ্ট্র, কুর্দিস্তান, কানাডা, চিলি, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ভেনেজুয়েলা, ব্রিটেন, আয়ারল্যান্ড চীন প্রভৃতি দেশের ভ্রাতৃপতিম পার্টিগুলোর উদ্দেশে আমন্ত্রণ বার্তা পাঠানো হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন