বিজ্ঞাপন

‘২৬ ফেব্রুয়ারির পরেও চলবে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ’

February 22, 2022 | 4:59 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলছে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম। এই কার্যক্রমে ২৬ ফেব্রুয়ারির পরে আর ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ প্রয়োগ করা হবে না— এমনটি জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর। তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানালেন, ২৬ ফেব্রুয়ারির পরেও অন্যান্য ডোজের পাশাপাশি ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ প্রয়োগ কর্মসূচি চলমান থাকবে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মহাখালীতে বিসিপিএস ভবনে ‘২৬ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য একদিনে এক কোটি ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম’ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘২৬ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। সবাইকে আহ্বান করব ভ্যাকসিন নেওয়ার। আমরা সবাইকে ভ্যাকসিন দেব। এরপর থেকে দ্বিতীয় ডোজ ও বুস্টার ডোজের কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত থাকব। তবে সাময়িকভাবে প্রথম ডোজে একটু দৃষ্টি কম থাকলেও কার্যক্রম চলমান থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বিশেষ এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচিতে এক কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি। প্রয়োজনে দেড় কোটি ডোজ দেব। দশ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন আমাদের হাতে রয়েছে। আমরা এর আগেও একদিনে ৮০ লাখের বেশি ভ্যাকসিন দিয়েছি। আমাদের সক্ষমতা রয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘বিশেষ এই কর্মসূচির বিষয়ে অনেকের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বাস, ট্রাক, দোকান মালিক সমিতির সঙ্গে কথা বলেছি। সবার সহযোগিতা পেলে আমরা অবশ্যই সফল হব।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ‘২৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম ডোজের গতি বাড়াতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মাঠকর্মীরা সেভাবে কাজ করছেন। সেদিন প্রতিটি ইউনিয়নে তিনটি করে কেন্দ্র করা হবে। এছাড়া উপজেলার নির্ধারিত হাসপাতালের সব টিকাকেন্দ্র চালু থাকবে। প্রতিটি উপজেলায় পাঁচটি অতিরিক্ত টিম কাজ করবে।’

তিনি বলেন, ‘তারা যেসব জায়গায় মানুষের সমাগম বেশি সেখানে ভ্যাকসিন দেবেন। একইভাবে আমাদের জেলা পর্যায়ে যেসব টিকাদান কেন্দ্র রয়েছে, সেগুলোর পাশাপাশি প্রতিটি জেলায় আরও ২০টি করে টিম থাকবে। এ ছাড়া ওয়ার্ড পর্যায়ে আরও তিনটি করে টিম কাজ করবে ওই দিনের জন্য।’

বিজ্ঞাপন

জাহিদ মালেক বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে আমরা করোনা মোকাবিলা করছি, সফলও হয়েছি। সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ব্লুমবার্গও আমাদের প্রশংসা করেছে। সাধারণ মানুষও ভ্যাকসিন কার্যক্রমে সন্তুষ্ট।’

দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে আছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে একটু ভালো অবস্থানে আছি। গতকাল সংক্রমণ ও মৃত্যু গত এক-দেড় মাস আগের চেয়ে কমেছে। দেশে প্রতি ১০ লাখে ১৭০ জন মারা গেছেন। সবার প্রচেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আজ থেকে বিধিনিষেধ উঠেছে, আমদানি-রফতানি, কলকারখানা চালু আছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ১০ কোটি ৩৩ লাখ মানুষকে প্রথম ডোজের আওতায় এনেছি, যা ৮৬ শতাংশ। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৬৫ শতাংশ। সর্বমোট আমরা ২৮ কোটি ভ্যাকসিন পেয়েছি, দেওয়া হয়েছে সাড়ে ১৮ কোটি।’

তিনি আরও বলেন, ‘জার্মানিতে ১৭ কোটি, রাশিয়ায় ১৬ কোটি, তুরস্কে ১৪ কোটি, থাইল্যান্ডে ১২ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় দেওয়া হয়েছে মাত্র ৩ কোটি ডোজ। সেদিক থেকে আমরা ভ্যাকসিন প্রয়োগে অনেক এগিয়ে আছি।’

বিজ্ঞাপন

প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের টিকাদানের ব্যাপারে জাহিদ মালেক বলেন, ‘তাদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যাপারে এখনো ডব্লিউএইচও কিছু বলেনি। তাই স্কুলের শিক্ষার্থীরা মাস্ক পরবে, তবে শিক্ষকদের অবশ্যই ভ্যাকসিন নিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, ‘আমরা ওইদিন এক কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি। এ লক্ষ্যে আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করেছি। ওয়ার্ড কমিটি, জেলা ও সিটি কমিটির সঙ্গে কথা বলেছি। সবার সহযোগিতা চাই।’

তিনি বলেন, ‘শ্রমিক কর্মচারীরা যখন স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে ভ্যাকসিন নেবেন, সেটি তার কর্মঘণ্টার মধ্যেই যুক্ত হবে। এনিয়ে আমরা সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, স্বাস্থ্য অধিদফতরের টিকা কর্মসূচির পরিচালক ডা. শামসুল হক প্রমুখ।

এর আগে, ১৫ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম জানান, প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে।

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন