বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ‘উদ্বেগজনক’, ৪৮ ঘণ্টায় ৩ জনের মৃত্যু

September 22, 2022 | 7:44 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ৪৮ ঘণ্টায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এক মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছরে চট্টগ্রামে ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিউলী রাণী (৪০) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তার বাসা নগরীর পাহাড়তলী এলাকায়।

বৃহস্পতিবার আরও দুইজনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে আছে- নগরীর পাহাড়তলীর খুরশিদা বেগম (৭০) এবং মোগলটুলীর দিলআরা বেগম রেশমী (৫০)। খুরশিদার চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। দিলআরা বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এ বছরের পরিস্থিতি একটু খারাপ। গত মাসে পরিস্থিতি বেশি খারাপ ছিল। এখন আস্তে আস্তে স্থিতিশীল হচ্ছিল। তবে ৪৮ ঘণ্টায় তিনজনের মৃত্যু হওয়ায় পরিস্থিতি আবার অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে আমরা মনে করি। এ অবস্থায় এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে আরও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। না হলে, ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। আমরা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এবং সকল উপজেলাকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছি।’

বিজ্ঞাপন

জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত মোট ৪০২ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নগরীর বাসিন্দা। মৃত্যু হয়েছে তিন নারীর, তারাও নগরীর বাসিন্দা। মৃত তিনজনসহ হিসেব করলে মোট আক্রান্ত ৪০৫ জন।

আক্রান্ত ৪০৫ জনের মধ্যে ৩৩৩ জন নগরীর, ৬৬ জন বিভিন্ন উপজেলার এবং ৬ জন অন্য জেলা থেকে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামে চিকিৎসার জন্য এসেছেন। এদের মধ্যে পুরুষ ১৮৪ জন, মহিলা ১১৩ জন এবং শিশু ১০৮ জন।

বিজ্ঞাপন

উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে পটিয়া উপজেলায়, ১৪ জন। সাতকানিয়ায় ১৩ জন, সীতাকুণ্ডে ৯ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৭ জন, কর্ণফুলীতে পাঁচজন, বাঁশখালীতে চারজন, বোয়ালখালীতে তিনজন, রাউজান, ফটিকছড়ি ও হাটহাজারীতে দুইজন করে এবং সন্দ্বীপে একজন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। মীরসরাই, আনোয়ারা ও চন্দনাইশে এখনও ডেঙ্গু আক্রান্তের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে চট্টগ্রামে পাঁচজন ও ফেব্রুয়ারিতে একজন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়। মার্চ-এপ্রিলে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হওয়ার কোনো তথ্য পায়নি জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়। তবে জুন থেকে পরিস্থিতির অবনতি শুরু হয়। জুনে ১৩ জন, জুলাইয়ে ৪৬ জন, আগস্টে ৬৮ জন এবং ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২০০ জন আক্রান্তের তথ্য দিয়েছে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়। জেলা কীটতত্ত্ববিদ এনতেজার ফেরদাওছকে প্রধান করে তিনজন সদস্য এই দায়িত্ব পালন করছেন।

জেলা কীটতত্ত্ববিদ এনতেজার ফেরদাওছ সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত বছরের পরিস্থিতি তুলনা করলে এ বছর চট্টগ্রামের পরিস্থিতি খারাপ। এটা উদ্বেগজনক পর্যায়ে যেতে পারে। গত এক মাসেই ২০০ জনের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। সামনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/ইআ

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন