বিজ্ঞাপন

২৫ বছর ধরে তালাবদ্ধ টাঙ্গাইলের ১৫টি কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়

October 23, 2022 | 10:15 am

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

টাঙ্গাইল: ভবন আছে, ছাত্র-ছাত্রী আছে, নেই শুধু শিক্ষক, তাই ঝুলছে তালা। এমনই অবস্থা বিরাজ করছে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নির্মিত ১৫টি কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

বিজ্ঞাপন

স্থাপনের পর থেকে হাতেগোনা কয়েকটিতে পাঠদান চললেও বাকিগুলোর কোনো গতি হয়নি। আগাছা ও ঝোঁপঝাড়ে ছেয়ে গেছে ভবন। আসবাবপত্র জায়গা করে নিয়েছে প্রভাবশালীদের ঘরে। পরিত্যক্ত ভবন ব্যবহৃত হচ্ছে বসত-বাড়ি ক্লাব, গোয়ালঘর ও জুয়া খেলার আসর হিসেবে। কোথাও কোথাও চলছে অসামাজিক কার্যকলাপও।

এসব বিদ্যালয় বছরের পর বছর এভাবে পড়ে থাকলেও সচল করার কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট  কর্তৃপক্ষ।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৬ সালে নির্মিত এসব বিদ্যালয়ে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী স্কুল চালু করার সময় স্থানীয়দের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিধান ছিল। সেই অনুসারে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তখন উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় বিধি মোতাবেক যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক পাওয়া যায়নি। যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল বেতন কম থাকায়, তারা শিক্ষকতা বাদ দিয়ে অন্য পেশায় চলে যান। তখন থেকেই এসব বিদ্যালয়ের ভবন হয়ে পড়েছে পরিত্যক্ত।

বিজ্ঞাপন

যেসব এলাকায় সরকারি বা বেসরকারি বিদ্যালয় নেই সেই সব এলাকায় সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে বেগবান করার জন্য ২৫ বছর আগে এ সব কমিউনিটি বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাসাইলের বিভিন্ন স্থানে ৩৬টি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে। এরমধ্যে ২১ টি বিদ্যালয় বিভিন্ন ধাপে সরকারিকরণ হলেও আলোর মুখ দেখেনি বাকি ১৫টি বিদ্যালয়। এগুলো বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার উন্নয়নে তেমন কোনো ভূমিকা পালন করতে পারছে না ।

বাসাইল সদরের পালপাড়া বিদ্যালয়ের জমিদাতা বিজয় কান্তি চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের গ্রামে বিদ্যালয় হবে ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করবে, এই আশায় আমরা জমি দিয়েছিলাম। ভবন হলো ঠিকই কিন্তু বন্ধ থাকায় তা আমাদের কোনো কাজে আসছে না। যদি চালু থাকত তাহলে আমাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করতে পারতো। তাদের আর দূরের বিদ্যালয়ে যেতে হতো না।

বিজ্ঞাপন

বাসাইল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সদানন্দ পাল জানান, ‘আমি এগুলোর খোঁজ খবর নিয়েছি। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আলোচনাও হয়েছে। এগুলো চালু করার আপাতত কোন সিদ্ধান্ত সরকারের নেই। তবে যদি পরবর্তী কোনো নির্দেশনা পাই তাহলে সে অনুসারে কাজ করবো।’

বাসাইল উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম জানান, ‘১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে তখন যে গ্রামগুলোতে স্কুল নাই সেই গ্রামে কমিউনিটি বিদ্যালয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। বাসাইলের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এ সব বিদ্যালয় করার জন্য জমি দেন। তখন ৩৬টি বিদ্যালয়ের কাজ সমাপ্ত হয়। এরমধ্যে ১৫টি বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হয়নি বিধায় সরকারিকরণ করতে পারিনি। ১৫টির মধ্যে সাতটি বিদ্যালয় পুনরায় চালু কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তা পাঠানো হয়েছে।’

সারাবাংলা/ইআ/এমও

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন