বিএনপি অত্যাচারী দল, জোটের প্রশ্নই আসে না: রওশন এরশাদ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ দেশে ফিরেই জাতীয় পার্টির ঐক্য চেয়েছেন। তবে বিএনপিকে অত্যাচারী দল আখ্যা দিয়ে, এই দলের সঙ্গে জোট করার প্রশ্নই আসে না বলে জানিয়েছেন তিনি।

রোববার (২৭ নভেম্বর) বেগম রওশন এরশাদ দেশে ফিরে বিমানবন্দরে বসে সাংবাদিক ও দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন।

রওশন এরশাদ বলেন, ‘পার্টিকে বিভক্ত করতে চাই না। আমি ঐক্য চাই, যারা দলের পেছনে গত ৩২ বছর সময় দিয়ে জাতীয় পার্টির জন্য কষ্ট করেছেন, জেল খেটেছেন এবং জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাদের সবার নিকট আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।’

একইসঙ্গে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, নাজিউর রহমান মঞ্জু, কাজী জাফর আহমেদসহ যারা দল ছেড়ে চলে গেছেন এবং নিস্ক্রিয় রয়েছেন, তাদের দলে ফিরে আসার জন্য আহ্বান জানান রওশন এরশাদ। তিনি বলেন, ‘১৯৯১ হতে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত জাতীয় পার্টির কঠিন ও প্রতিকূল সময়ে, যারা আমাদের সঙ্গে ছিলেন; তাদের আমরা অবশ্যই যথাযথ স্বীকৃতি দিতে চাই।’

আগামী নির্বাচনী জোট প্রসঙ্গে রওশন এরশাদ বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে জাতীয় পার্টির ঐক্য বা জোট হতে পারে না। কারণ বিএনপি জাতীয় পার্টির অনেক ক্ষতি করেছে। তাই জাপার সঙ্গে বিএনপির জোটের প্রশ্নই আসে না।’

চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলেন রওশন এরশাদ

তিনি বলেন, ‘বিএনপির অধীনে জাতীয় পার্টি খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের নেতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং আমি ও আমার নাবালক সন্তানসহ দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জেলে পাঠিয়েছে। তখন আমাদের জনসভাও করতে দেওয়া হয়নি। ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে অনেক জনসভায় হামলা চালিয়ে শত শত নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। সেই অন্ধকার দিনগুলো আমরা ভুলবো কি করে? তাছাড়া আমরা তাদের শাসনামলে হাওয়া ভবনের দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও অপতৎপরতা দেখেছি।’

বেগম রওশন এরশাদ আরও বলেন, ‘আমি আবারও বলছি, পার্টিকে বিভক্ত করার প্রশ্নই উঠে না। আমি ঢাকায় ফিরে এসেছি, দলের সব এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং অন্যদের সঙ্গে যেকোনো বিভ্রান্তি ও ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে বসবো। আমি নিশ্চিত, ভুল বোঝাবুঝি দূর করে ঐক্যবদ্ধভাবে শিগগিরই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ফিরতে পারবো।’

রংপুর সিটি করপোরেশনে মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফাকে লাঙ্গল প্রতীকে মনোনয়ন বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মনে রাখবেন, রংপুর জাতীয় পার্টির প্রাণ। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসইেন মুহম্মদ এরশাদের বাড়ি। তাই আসনটি যেকোনো মূল্যে ধরে রাখতে হবে। এজন্য সব নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

বেগম রওশন এরশাদ নিজের স্বাস্থ্য সর্ম্পকে বলেন, ‘আমি এখন ঠিক আছি। আমার পায়ে কিছু সমস্যা আছে এবং ফিজিওথেরাপি দিচ্ছি। কোনো অসুবিধা নেই। আমার সুস্থতা কামনায় দোয়া করার জন্য পার্টির নেতাকর্মী এবং দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানাই।’ একইসঙ্গে ব্যাংককে চিকিৎসার সময় সহযোগিতা এবং খোঁজখবর নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

এসময় বেগম রওশন এরশাদের মুখপ্রাপ্ত কাজী মামুনুর রশিদ, দলটির সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, মসিউর রহমান রাঁঙ্গা, গোলাম মসীহ, ইকবাল হোসেন রাজুসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমও