বিজ্ঞাপন

‘অসাম্প্রদায়িকতা কেবল মুখে নয়, অন্তরে ধারণ করতে হবে’

December 19, 2022 | 9:24 pm

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: অসাম্প্রদায়িকতার কথা কেবল মুখে বললে হবে না, এটি চর্চা করতে হবে। চর্চা মানে কেবল বারবার বলা নয়। ধর্মের যে পবিত্র বাণীগুলো আমরা বলি তা কেবল মুখের বুলি হলে চলবে না। এ বিষয়গুলো অন্তরে ধারণ করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার আর্টস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সম্প্রীতি সম্মিলনে বক্তারা এ সব কথা বলেন।

অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকা উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্বসভ্যতায় যা কিছু অর্জন হয়েছে তা মানবিক মূল্যবোধকে কেন্দ্র করেই হয়েছে। নিজের ধর্মের প্রতি যে ব্যক্তি শ্রদ্ধাশীল সে অন্যের ধর্মকেও শ্রদ্ধা করতে জানে। অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধকে উপজীব্য করেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে এবং দেশের সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখতে সব অপশক্তিকে সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

উপাচার্য আর বলেন, ‘বিশ্বসভ্যতায় যা কিছু মহান, যা কিছু অর্জন হয়েছে তা ধর্মকে আবর্তন করে নয়, বরং মানবিক মূল্যবোধকে কেন্দ্র করেই হয়েছে। অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধকে উপজীব্য করেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে এবং দেশের সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখতে সকল অপশক্তিকে সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে।’

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মু. আ. আউয়াল হাওলাদার বলেন, ‘সম্প্রীতির শুরু হয় পরিবার থেকে। তারপর যায় প্রতিবেশীর কাছে, সমাজে। মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার অনেক সমস্যাকে সূচনাকেই প্রতিরোধ করে। মানুষের সবচেয়ে বড় সম্পদ তার মুচকি হাসি। এ জন্য সব ধর্ম ভালো ব্যবহারের কথা বলে। মানুষের কল্যাণ করার চেয়ে বড় ধর্ম আর নেই।’

এ দেশে বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী মানুষই সংখ্যাগরিষ্ঠ উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সম্প্রীতি বিনষ্টের পাঁয়তারা, ষড়যন্ত্র হয়। তবে আমি আশ্বস্ত করতে চাই এটি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সারাদেশ ঘুরে, তৃণমূল মানুষের সঙ্গে মিশে আমরা দেখেছি এদেশের মানুষ সংখ্যাগরিষ্ঠ তারাই, যারা অসাম্প্রদায়িক। তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী। অসাম্প্রদায়িকতার কথা কেবল মুখে বললে হবে না, এটি চর্চা করতে হবে। চর্চা মানে কেবল বারবার বলা নয়। ধর্মের যে পবিত্র বাণীগুলো আমরা বলি তা কেবল মুখের বুলি হলে চলবে না। এ বিষয়গুলো অন্তরে ধারণ করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাদার তপন ডি রোজারিও বলেন, ‘সম্প্রীতি আমাদের গর্বের ঐতিহ্য। এ ঐতিহ্য তুচ্ছ কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে। ডিজিটাল জগত, পত্র-পত্রিকার সংবাদ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণে আমরা সেসব দেখছি। এসব বিষয়ে আমরা সোচ্চার হচ্ছি, নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সব ধর্মের মূল কথা হচ্ছে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। ন্যায়বিচার বিঘ্নিত হলে মানুষ তার প্রাপ্য বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে। আমাদের উপমহাদেশ সম্প্রীতির ধারক ও বাহক। আমাদের ৬৫ শতাংশ যুবশক্তি। সম্প্রীতির সহাবস্থানে তাদের এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের পাঠ কার্যক্রমে, গণমাধ্যমে সর্বধর্মের মর্ম কথা প্রকাশ করতে হবে। আমরা সবাই যেন নিজের ধর্মকে ভালোভাবে জানি ও অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকি।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন সম্প্রীতি বাংলাদেশ-এর সদস্য-সচিব অধ্যাপক ড. মামুন আল মাহতার স্বপ্নীল, বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাদার তপন ডি রোজারিও, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নভিক্ষু সুনন্দপ্রিয় এবং রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বামী দেবধ্যানানন্দ পালিসহ অনেকে।

সারাবাংলা/আরআইআর/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন