বিজ্ঞাপন

দেশে বাড়ছে নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব, মৃত্যু ৫

January 29, 2023 | 9:28 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশে নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, এ বছর দেশে আটজন ব্যক্তি নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজনই মারা গেছেন। এজন্য দেশবাসীকে শীতকালীন খেঁজুরের রস খাওয়ার ব্যাপারে আরও বেশি সচেতন হতে হবে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব তথ্য জানান। এর আগে, মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সারাদেশের বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ক্যাটাগরি নির্ধারণ বিষয়ে পর্যালোচনা সভায় হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত আটজন রোগী পাওয়া গেছে। এর মধ্যে পাঁচজন মারা গেছেন। এ ভাইরাসে ৭০ শতাংশ মারা যায়। কাঁচা রস ও পাখিদের খাওয়া ফল খেলে এ রোগ হয়।’

বাদুড় এ ভাইরাস বহন করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাদুড়ের পান করা খেজুরের রস যদি কোনো ব্যক্তি পান করেন, তাহলে তিনি এ ভাইরাসে আক্রান্ত হবেন। অসুস্থ মানুষের সংস্পর্শে গেলেও দ্রুত এ ভাইরাস ছড়ায়। তখন মাল্টিপল সংক্রমণ হয়।’

বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নিপাহ ভাইরাস থেকে রক্ষায় মানুষকে সচেতন করতে পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা টিভিসি (সচেতনতামূলক ভিডিও) করেছি। সংক্রমণ ব্যাধি হাসপাতালে আলাদা ইউনিট করে চিকিৎসা দিচ্ছি। নিপাহ ভাইরাসের কোনো ভ্যাকসিন নেই। আমাদের সচেতন থাকতে হবে। এজন্য কাঁচা রস পান করা যাবে না। পাখিদের খাওয়া ফল কোনো খাওয়া যাবে না।’

এদিন বৈঠকে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ফি নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও অন্যান্য সেবা খাতের একেক রকমের চার্জ, টেস্ট ফিস সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এজন্য প্রাইভেট স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সরকারিভাবে একটি গাইডলাইন তৈরি করা হবে। হাসপাতালগুলোর মান অনুযায়ী ক্যাটেগরি তৈরি করে ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। এ সংক্রান্ত একটি কমিটি করে এক মাসের মধ্যেই একটি সিদ্ধান্ত নেব। এতে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি পাবে, যত্রতত্র ফি দিয়ে দেশের জনগণের অযাচিত অর্থ ব্যয় হবে না।’

বেসরকারি হাসপাতালগুলোর ক্যাটাগরি নির্ধারণের বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেসরকারি হাসপাতালের বেড সংখ্যা, যন্ত্রপাতি, অবস্থান, লোকবল, সুযোগ-সুবিধা ভেদে বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ, বি, সি ও ডি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে দেওয়া হবে। ‘এ’ ক্যাটেগরির এক রকম সুবিধা, ‘বি’ ক্যাটেগরির এক রকম সুবিধা এবং ‘সি’ ক্যাটেগরি হাসপাতালগুলো মান ভেদে এবং সুযোগ-সুবিধা উল্লেখসহ সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট ফি নির্ধারণ করা থাকবে। এতে মানুষ আগে থেকেই জানতে পারবে কোন হাসপাতালে গেলে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে এবং কত চিকিৎসা বাবদ ব্যয় হবে।’

বিজ্ঞাপন

বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সেবার মানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সারাদেশে বর্তমানে অলিতে-গলিতে ক্লিনিক হয়ে গেছে। কিছু ক্লিনিক মান-সম্মত সেবা দিলেও অধিকাংশেরই সেবার মান ভালো না। ‘ফি’ও নেওয়া হয় ইচ্ছে মতো। স্টান্ডার্ড ও নিয়ম অনুযায়ী যন্ত্রপাতি নাই। কিন্তু মেশিন যেগুলো আছে, সেগুলোও ঠিক মতো কাজ করে না। সিট অনুযায়ী অন্যান্য বিষয়গুলো অনুপস্থিত রয়েছে। মান-সম্পন্ন চিকিৎসক থাকে না, অথচ ফি নেওয়া হয় অনেক বেশি। এসব অনিয়ম আর চলতে পারবে না।’

সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিব) সভাপতি অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলন, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল এসোসিয়েশনের সভাপতি মুবিন খান, মহাসচিব ও সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খান, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. সাইদুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য অনুবিভাগ) সৈয়দ মজিবুল হক ও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিরা।

সারাবাংলা/এসবি/এনএস

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন