বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন— বৈশ্বিক ব্যবসায়ী নেতাদের প্রধানমন্ত্রী

March 11, 2023 | 12:56 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বৈশ্বিক ব্যবসায়ী নেতা ও বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উচ্চ আয়ের উন্নত সমৃদ্ধ এবং উদ্ভাবনী স্মার্ট বাংলাদেশ হিসাবে বিনির্মাণের জন্য আমাদের অভিযাত্রায় যুক্ত হতে আপনাদের উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আপনারা আসুন বিনিয়োগ করুন, বাংলাদেশ সবসময় প্রস্তুত আপনাদের আগমনের জন্য। বাংলাদেশকে নিজের দেশ মনে করেই, আপনারা এখানে বিনিয়োগ করুন।’

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১১ মার্চ) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) উদ্যোগে দেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে তিনদিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, চীন, ভুটান, সংযুক্ত আরব আরিরাতসহ ১২টি আন্তর্জাতিক সংস্থার সিইও এবং ২শ’র বেশি বিদেশি বিনিয়োগকারী, বিশ্বের ১৭টি দেশের ব্যবসায়ী নেতারা সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। স্বাধীনতার ৫০ বছরে অর্থনীতিতে বাংলাদেশের অর্জন এবং রফতানি ও স্থানীয় ভোক্তা বাজারের পাশাপাশি বিনিয়োগ সক্ষমতা বিদেশিদের কাছে তুলে ধরা হবে।

সরকারি-বেসরকারি খাতসহ এবারের সম্মেলনে ১৭টি দেশের ২শতাধিক ব্যবসায়ী নেতারা অংশ নেবেন। এর মধ্যে বিশ্বের নামকরা ১২টি কোম্পানির সিইও কিংবা শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধিরাও রয়েছেন। আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে ১২টি দেশের মন্ত্রীরাও অংশ নিচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনসহ সামিটে অংশগ্রহণকারী কয়েকটি দেশের মন্ত্রীরা বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশে সম্ভাবনাময় বিনিয়োগ খাতগুলোর প্রসঙ্গ তুলে ধরে ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এফডিআই এবং স্থানীয় বেসরকারি বিনিয়োগ; উভয়ের জন্য ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। বিডা এখন বাংলাদেশের জাতীয় ব্যবসায়িক পরিবেশ কর্মসূচি, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ক্লাইমেট ইমপ্রুভমেন্ট প্রোগ্রাম (বিআইপি) বাস্তবায়ন করছে। এর আওতায় আগামী ৫০ সপ্তাহে ৫০টি সংস্কার এবং আগামী তিন বছরে ১০০টি বিনিয়োগ পরিবেশ সংস্কার করা হবে। যেন এই লাল ফিতার দৌরাত্ম না থাকে। সেটা সরিয়ে দেওয়া হবে। সিদ্ধান্ত হবে সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবায়ন হবে।’

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বেজা ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের লক্ষ্যে অঞ্চল কাজ করছে। এইসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা এবং প্রণোদনাও দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এখন ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য ৫ বছরের প্রস্তুতিমূলক সময় পার করছি। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ একইসঙ্গে অবারিত সুযোগ সৃষ্টি করবে আবার অনেকগুলি চ্যালেঞ্জও আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি যে, আমরা কঠোর বাণিজ্য প্রতিযোগিতাসহ নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সক্ষমতাও অর্জন করবো।’

দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে এসব সুযোগ কাজে লাগাতে এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে কোনো হতাশার কথা শুনতে চাই না। এখন থেকে নিজেদের তৈরি করতে হবে। যেসব চ্যালেঞ্জ সামনে আসবে সেগুলি আমরা কিভাবে মোকাবিলা করতে পারি আমরা তা ইনশাআল্লাহ পারবো। উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলায় আমাদের সরকার আপনাদের সব ধরনের সহযোগিতা করে যাবে, সেটা আমি কথা দিচ্ছি।’

কোভিড-১৯ এর অভিঘাত রাশিয়া ইউক্রন যুদ্ধ বাণিজ্যকি অবরোধ, পাল্টা অবরোধ বাংলাদেশের মতো উন্নয়নকামী দেশগুলোকে কঠিন সমস্যার সম্মুখীন করেছে বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘শুধু আমাদের মতো দেশ না উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিসহ মূল্যস্ফীতির চাপে সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। ব্যবসায়ী নেতাদের সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে জিনিসপত্রের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসার পন্থা খুঁজে বের করতে হবে এবং সেই পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে নিজেরা নিজেদের বাজার হারাবেন।’

সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে আমরা আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছি দাবি করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘সমৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত রাখতে হলে আমাদের বর্তমান প্রচেষ্টাকে আরও জোরদার করতে হবে। এখানে ব্যর্থতার চিন্তা করার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে আমরা কোনমতেই ব্যর্থ হবো না। আমরা আমাদের যেকোনো ক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই সমর্থ হবো।’

বিজ্ঞাপন

আমরা বিজয়ী জাতি। বিজয়ী জাতি হিসেবে দেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ করে মাথা উঁচু করে চলতে চাই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা বিদেশ থেকে আমাদের দেশে এসেছেন বাংলাদেশকে তারা আপন দেশ হিসাবেই মেনে নেবেন, এটা সবার জন্য। আপনারা আমাদের অতিথি। আপনারা ভাল থাকেন সুস্থ থাকেন। আর বাংলাদেশকে নিজের দেশ মনে করেই আপনারা এখানে বিনিয়োগ করুন।’

এসময় এফবিসিসিআই সংশ্লিষ্ট নেতাদের প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন জানান এবং সামিটের সার্বিক সফলতা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

সারাবাংলা/এনআর/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন