বিজ্ঞাপন

অর্থনৈতিক অগ্রগতির সুফল সমানভাবে পৌঁছায়নি: হ্যান্স টিমার

May 15, 2023 | 7:18 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জন করেছে। কিন্তু সবার কাছে সমানভাবে এর সুফল পৌঁছায়নি। সুযোগের বৈষম্য রয়েছে। ফলে অর্থনীতিতে যে সাফল্য এসেছে তা কেন্দ্রীভূত হয়ে আছে।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় প্রধান অর্থনীতিবিদ হ্যান্স টিমার এসব কথা বলেছেন। সোমবার (১৫ মে) বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) আয়োজিত এক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তিনি।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘যেমন শিক্ষার ক্ষেত্রে বড় বৈষম্য আছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে ভালো হলেও উচ্চ শিক্ষায় দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের বেশি দেখা যায় না। যারা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে তারা ভালো চাকরিতে নিজেদের নিয়োজিত করে ভালোভাবে জীবন গড়ে নিচ্ছে। কিন্তু যারা সুযোগ পাচ্ছে না, তারা অপেক্ষাকৃত খারাপ পেশায় যুক্ত হয়ে পড়ে। ফলে ভালোভাবে জীবন গড়তে পারে না।’

রাজধানীর আগারগাঁও এ অবস্থিত বিআইডিএস সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সেমিনারের বিষয় ছিল ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট স্টোরি: রোল অব সার্ভিস এন্ড ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরস ইন ড্রাইভিং ডাইভারসিফিকেশন এন্ড ইনক্লুসিভ গ্রোথ’। এতে সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন।

বিজ্ঞাপন

হ্যান্স টিমার বলেন, ‘বাংলাদেশে সুযোগের বৈষম্য রয়েছে। সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত হয়নি। বিশেষ করে শিক্ষাক্ষেত্র এবং শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণে ব্যাপক বৈষম্য আছে। কর্মসংস্থানে নারীর অংশগ্রহণে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারত,পাকিস্তান, শ্রীলংকার চেয়ে এগিয়ে থাকলেও বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশর শ্রম শক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ ৪৩ শতাংশ হলেও অন্যান্য অঞ্চলে তা ৫৭ শতাংশ। এক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতির সুযোগ আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ রফতানি পণ্য বহুমুখীকরণ হয়নি। রফতানি খাত শুধুমাত্র পোশাক খাত নির্ভর। বিশ্বে পোশাক রফতানিতে চীনের অংশগ্রহণ ৩৩ শতাংশ। সেখানে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ মাত্র ৬ শতাংশ। এখানেও বহুমুখীকরণ করে উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ শিল্পে ভালো করেছে। কিন্তু এটি দেশেই সীমাবদ্ধ। দেশের উন্নয়নের আরেক ধাপে যেতে হলে এই শিল্প উন্নয়ন দিয়ে সম্ভব হবে না। এক্ষেত্রে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আনতে হবে। সেই সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।’

হ্যান্স টিমার বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় সুযোগের বৈষম্য দূর করা এবং অর্থনৈতিক গতিশীলতা বৃদ্ধি করা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গতিশীলতার প্রতিবন্ধকতা দূর করা নিছক একটি দীর্ঘমেয়াদী এজেন্ডা নয়, তবে বর্তমান সংস্কার কর্মসূচির একটি কেন্দ্রীয় অংশ হওয়া উচিত এটি। যার লক্ষ্য আর্থিক দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও টেকসই করা এবং দক্ষিণ এশিয়াকে তার পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জনে সহায়তা করা।’

বিজ্ঞাপন

এক প্রশ্নের জবাবে বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় প্রধান অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন অন্যতম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অর্থনীতিকে টেকসই করা। এছাড়া আরও আছে রেমিটেন্স কম আসা, উচ্চ সুদহার, ব্যালেন্স অব পেমেন্টের সমস্যা, মূল্যস্ফীতি, অর্থপাচার , রিজার্ভ ধরে রাখা এবং কম রাজস্ব আদায় হওয়া।’

ড. বিনায়ক সেন তার বক্তব্যে বলেন, ‘দরিদ্র বিমোচনে বাংলাদেশ অনেক ভালো করেছে। অতিদরিদ্র এখন ৫ শতাংশ। এক্ষেত্রে সাফল্য আছে। সেই সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তি এবং জেন্ডার সমতা নিশ্চিত হয়েছে। মাধ্যমিকেও ভালো হচ্ছে। সমস্যা হলো উচ্চশিক্ষায়। তবে দেশের সব শিক্ষা মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। আয় বৈষম্যসহ সুযোগের বৈষম্য আছে। সেগুলো দূর করতে কাজ করে যেতে হবে।’

সারাবাংলা/জেজে/আইই

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন