বিজ্ঞাপন

রিজার্ভ সংকট নেই, চিন্তাও নেই: প্রধানমন্ত্রী

May 15, 2023 | 11:36 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ডলার আর রিজার্ভ নিয়ে বেশি বেশি কথা বলতে বলতেই সবার মাথায় ওই রিজার্ভই ঢুকে গেছে। আমাদের রিজার্ভ এখনও যা আছে, তাতে অন্তত এটুকু বলতে পারি, আমাদের এমন কোনো সংকট এভাবে নেই। আমাদের সেইটুকু থাকা দরকার, যদি কোনো আপৎকালীন সময় হয়, আমাদের যদি খাদ্য কিনতে ঘাটতি দেখা দেয়, সেই খাদ্য তিন মাসের খাদ্য কেনার মতো ডলারটা যেন আমাদের হাতে থাকে। ওইটা নিয়েই রিজার্ভের জন্য চিন্তা, এ ছাড়া রিজার্ভ নিয়ে এত চিন্তা নেই।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৫ মে) বিকেলে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

জাপান সফর, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে রিফ্লেকশন অন ৫০ ইয়ারস অব ওয়ার্ল্ড ব্যাংক-বাংলাদেশ পার্টনারশিপ (বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে ৫০ বছরের অংশীদারত্ব) শীর্ষক অনুষ্ঠান এবং যুক্তরাজ্যের রাজা-রাণীর রাজ্যাভিষেক উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান যোগদান শেষে দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

শুরুতে প্রধানমন্ত্রী তার সফর নিয়ে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডলার সংকট এখন পুরো বিশ্বব্যাপী, এটি শুধু বাংলাদেশে না। কারণ প্রথম গেল করোনা অতিমারি, আর তারপর ইউক্রেইন-রাশিয়া যুদ্ধ, আর সেই যুদ্ধের সাথে স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশন। যার ফলে আজকে সারা বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি যেভাবে বেড়ে গেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনা অতিমারির মধ্যে যেটা হয়েছিল যে আমদানি রফতানি বন্ধ, বিদেশে যাতায়াত বন্ধ, সবকিছু বন্ধ থাকাতে খরচও আমাদের কম ছিল, ভ্যাকসিন কিনতেই যা ডলার লেগেছিল, বাকি আমরা খুল ভালোভাবে একটি রিজার্ভ রাখতে পেরেছিলাম।’

‘কিন্তু এরপর যখন আবার অর্থনীতি উন্মুক্ত হলো, খুব স্বাভাবিকভাবেই সেই সুযোগটা থাকেনি, ডলার খরচ হচ্ছে এবং হবে। তার থেকেও বড় কথা, মানুষকে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিচ্ছি, গ্যাস দিয়ে নানারকম ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে, বিনিয়োগ হচ্ছে, উৎপাদন বাড়ছে। কাজেই ডলারের ওপর চাপ পড়বে।’

বিজ্ঞাপন

ডলারের চাপের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একটা কথা বলি, আমরা তো আগেও সরকারে এসেছি, যখন ৯৬ সালে এসেছিলাম, তখন কতটুকু ছিল আমাদের রিজার্ভ? আমাদের সেইটুকু থাকা দরকার, যদি কোনো আপৎকালীন সময় হয়, যেমন এই ঝড়ঝঞ্ঝা বা কোন কিছু ক্ষেত্রে, আমাদের যদি খাদ্য কিনতে ঘাটতি দেখা দেয়, সেই খাদ্য কেনার মতো অর্থাৎ তিন মাসের খাদ্য কেনার মতো ডলারটা যেন আমাদের হাতে থাকে। ওইটা নিয়েই রিজার্ভের জন্য চিন্তা। এছাড়া রিজার্ভের এত চিন্তা না।’

‘জাতির পিতা যখন যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়তে শুরু করেন, তখন তো এক পয়সাও রিজার্ভ ছিল না। আমরা কি চলি নাই, আমরা কি এগোতে পারিনি’ এমন প্রশ্ন তোলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রথমবার ক্ষমতায় আসে, সেই সময়ের কথা স্মরণ করে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন বিএনপি ক্ষমতায়, তখন রিজার্ভ কত ছিল? ০.৭৪৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার, মানে এক বিলিয়ন ডলারের চেয়ে কম। আর এখন আমাদের আছে ৩১.২২ বিলিয়ন ডলার। কাজেই এটা নিয়ে দুশ্চিন্তর খুব বেশি একটা কারণ নেই। যে কারণে আমরা বলছি যে আমাদের দেশের যত অনাবাদি জমি, ফসল ফলাব, নিজের খাবার খাব, অন্যের ওপর আর নির্ভরশীল হব না। কারো কাছে হাত পেতে চলব না। কারো কাছে ভিক্ষা আনব না। নিজের উৎপাদন করে আমরা নিজেরাই চলব। আমাদের খাবারের অভাব হবে না।’

আর যে কোনো দুর্যোগ মোকাবেলার সরকারের প্রস্তুতি তো থাকেই রসিকতা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এমন প্রস্তুতি নিলাম যে ঘূর্ণিঝড় চলেই গেল, আঘাত হানতেই সাহস পেল না। তবে আবার আসবে। একটি নিয়ম আছে, একটার পর পরই আরেকটা আসে, সে জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। সেই প্রস্তুতি আমাদের আছে। সেটি কোনো অসুবিধা হবে না।’

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর দুই পাশে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও অতিথি হিসাবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

গত মঙ্গলবার (৯ মে) রাষ্ট্রীয় সফর শেষে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সারাবাংলা/এনআর/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন