বিজ্ঞাপন

‘তাপদাহ চললেও স্কুল-কলেজ এখনই বন্ধ নয়’

June 4, 2023 | 6:35 pm

চবি করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দেশে তীব্র তাপদাহ চললেও সরকার এখনই স্কুল-কলেজ বন্ধ করার কথা ভাবছে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে দেশে খুব গরম পড়ছে। তবে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কথা এখনই ভাবছি না। করোনা মহামারিতে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এখন শিক্ষকদের বলছি, যতটুকু পারেন, সেটা এগিয়ে নিয়ে যান।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৪ মে) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের এক কর্মশালায় যোগদান শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলও উপস্থিত ছিলেন। মাতৃভাষা পিডিয়া সংকলন প্রকাশের উদ্যোগ হিসেবে ‘মাতৃভাষা পিডিয়াভুক্তি লিখন’ বিষয়ে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

তাপদাহ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘শিক্ষকদের বাচ্চাদের প্রতি যত্নশীল হতে বলব। স্কুলে তাদের যত্ন নিতে হবে। বাচ্চা যাতে রোদে বাইরে যেতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তীব্র গরমে বেশি বেশি পানি পান করার পরামর্শ দিতে হবে। যতকুটু সম্ভব শ্রেণিকক্ষের মধ্যে যেন বাচ্চারা থাকে। যদি বাইরে যায়ও, তারা যেন গাছের নিচে কিংবা ছায়ার মধ্যে থাকে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক সংঘাতের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অস্থিরতা চলছে, সেটা যদিও সাময়িক, তবুও কোনোভাবেই কাম্য নয়। শিক্ষার্থীদের কাজ পড়ালেখা করা। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট না করে তাদের উচিত গবেষণায় মনযোগ দেওয়া।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অস্ত্রের ঝনঝনানি কমে গেছে। ক্যাস্পাসগুলো এখন আগের মতো নেই। শান্তিশৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন গবেষণা হচ্ছে।’

এদিকে, দুপুরে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মণি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শুধু ‘ফিজিক্যাল মাস্টারপ্ল্যান’ বা অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিকে মনযোগ না দিয়ে ‘একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান’ প্রণয়নেরও তাগিদ দেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কী বৈশিষ্ট্য থাকবে, কেন শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পড়তে আসবে? শুধু এর মায়াময় পরিবেশের জন্য? নাকি আমি কি পড়াচ্ছি, কোন ধরনের মানবসম্পদে পরিণত করছি, কোনদিকে শিক্ষার ঝোঁকটা বেশি- তার জন্যে ?’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজের বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে। একটা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের কাছে নিজেকে কীভাবে উপস্থাপন করবে, তা তারা নিজেরা ঠিক করুক। আপনারা আজ থেকে ১০ বছর পর নিজেদের কোথায় দেখতে চান, এসব মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলো অর্জনের জন্য যা যা করা দরকার সেগুলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কেও করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান সৃজনের জায়গা। এখানে অবশ্যই গবেষণা থাকতে হবে।’

সেমিনারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকরা এখন চাকরি করেন, শিক্ষকতা করেন না। আমরা শিক্ষকতা করেছি, চাকরি করিনি। চাকরি করলে ছাত্রদের শ্রদ্ধা অর্জন করা যায় না। রাজনীতিবিদদের শ্রদ্ধা অর্জন করা যায় না। বঙ্গবন্ধু শিক্ষকদের কাছে গেছেন, শিক্ষকেরা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কাজ করেছেন। আজকাল আমাদের শিক্ষকেরা রাজনীতিবিদদের দ্বারে গিয়ে বসে থাকেন। এটা শিক্ষকসুলভ আচরণ নয়।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষকরাই তো আদর্শ। কিন্তু ক্ষমতার বদলে তাদের আদর্শ বদলে যায়। যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়, তখন তারা সবাই আওয়ামী লীগ। যখন বিএনপি ক্ষমতায়, তখন তার বিএনপি। আমি অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। প্রতিটি জায়গায় দেখেছি যেসব শিক্ষকেরা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছেন, তারা একসময় যারা বিএনপি ছিল, শিবির ছিল তাদের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন।’

সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার, উপ-উপাচার্য বেনু কুমার দে, প্রক্টর নুরুল আজিম শিকদার, শিক্ষক সমিতির সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন মোহাম্মদ মাহবুবুল হক। সেমিনার শেষে শিক্ষামন্ত্রী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নবনির্মিত মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদ ভবন উদ্বোধন করেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এইচএফ/আরডি/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন