বিজ্ঞাপন

বিনিয়োগ বাড়াতে সুইস প্রেসিডেন্টকে শেখ হাসিনার অনুরোধ

June 14, 2023 | 9:13 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সুইজারল্যান্ডকে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালেইন বারসেটকে অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৪ জুন) জেনেভায় প্যালাইস ডেস ন্যাশন্সে সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে শেখ হাসিনা এ অনুরোধ করেন। সুইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাতে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। এই সাক্ষাতের পর তাদের দুই জনের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে ‘জ্ঞানের অংশীদারিত্ব এবং দক্ষতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।

পরে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সফরকালীন আবাসস্থল ‘প্রেসিডেন্ট হোটেলে’ সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন- পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো হচ্ছে। প্রায় ১ বিলিয়নের ওপর ব্যবসা হচ্ছে। আমরা যথেষ্ট রফতানি করছি, মূলত গার্মেন্টস পণ্য রফতানি করি। নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সুইস প্রেসিডেন্টকে বলেছেন, আমাদের দেশে আপনারা আরও বিনিয়োগ করুন। বাংলাদেশে যথেষ্ট সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের জন্য বাংলাদেশকে অতিরিক্ত ৩ বছর সহায়তা করতে সুইজারল্যান্ডকে অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুইস প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে তিনি বাংলাদেশ আসবেন বলে জানান।

প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “১৯৭৫ সালে জাতিকে হত্যার পর ৬ বছর নির্বাসিত জীবন কাটানো এবং পরে দেশে ফিরে গণতন্ত্রের জন্য, মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের জন্য যে সংগ্রাম করেছেন প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) তা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তার পিতার যে স্বপ্ন ছিল সেটি বাস্তবায়নের কাজটাই তিনি এখন করে যাচ্ছেন’।”

সাক্ষাতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলাপের কথা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সুইস প্রেসিডেন্ট ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সফর এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের কথা স্মরণ করেন। সুইজারল্যান্ড রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে সহায়তা করে যাচ্ছে। তারা সেই সহায়তা অব্যহত রাখবে।

বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গা বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সব সময় বলছি মিয়ানমার ঐতিহাসিকভাবে মাঝে মধ্যে এই রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করে। ১৯৭০ সালে করেছে, ১৯৮০ দশকে করেছে, ১৯৯০ সালে করেছে। পরবর্তীতে মোটামুটি ভাবে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে। এবারও তারা ১১ লাখ রোহিঙ্গা বিতাড়িত করে, যারা আমাদের এখানে আশ্রয় নিয়েছে।’

মোমেন বলেন, ‘মিয়ানমার সরকার অঙ্গীকার করেছে তারা রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাবে এবং তাদের সুরক্ষা দিবে। সেখানে গিয়ে রোহিঙ্গারা যেন ভালোভাবে থাকতে পারে সেই ব্যবস্থাও তারা করছে। কিন্তু ৬ বছর হলো এখনও তারা রোহিঙ্গাদের নিয়ে যায়নি।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অগ্রাধিকার রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো। রোহিঙ্গারাও চায় তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে। আমাদের পক্ষে তাদের আর রাখা সম্ভব না। সেজন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে মোমেন বলেন, ‘মিয়ানমার তো রাজি আছি, তাদের একটু পুশ (চাপ) করেন তাহলে এটার একটা সমাধান হবে। রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করতে ওদের স্বদেশে ফিরে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে।

বিজ্ঞাপন

যুক্তরাষ্ট্রের এক লক্ষ রোহিঙ্গা নেওয়ার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকা বলেছিল ১ লাখ রোহিঙ্গাকে তাদের দেশে নিবে, এখন পর্যন্ত মাত্র ৬২ জন নিয়েছে। বলছে প্রসেসিংয়ে আছে। কবে প্রসেস হবে সৃষ্টিকর্তা জানেন।’

এর আগে, সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সফরকালীন আবাসস্থল ‘প্রেসিডেন্ট হোটেলে’ সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্র্যান্ডি।

এবিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ফিলিপো গ্র্যান্ডিকে বলা হয়েছে, তারা যাতে মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করে যাতে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফিরে যেতে চায়। সম্প্রতি কিছু রোহিঙ্গা ওখানে গিয়েছিল দেখতে তারাও সন্তুষ্ট, তারা ফিরে যেতে চায়। তো প্রক্রিয়াটা শুরু হওয়া উচিত।’

ফিলিপো গ্র্যান্ডি বলেছেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি। আমাদের মিয়ানমারে প্রবেশের সুযোগ আছে মিয়ানমারে, তবে আমাদেরও সীমাদ্ধতা আছে।’

এরপর পর ‘প্রেসিডেন্ট হোটেলে’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রিন্স রহিম আগা খান সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

সারাবাংলা/এনআর/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন