বিজ্ঞাপন

ঢাকার সব প্রবেশমুখে শনিবার অবস্থান কর্মসূচি গণতন্ত্র মঞ্চের

July 28, 2023 | 6:34 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সরকার পতনের এক দফা দাবিতে যুগপৎ ধারায় বৃহত্তর গণআন্দোলন জোরদার করতে রাজধানীর সব প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২৮ জুলাই) বিকেল ৪টায় গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে মৎস্য ভবনের সামনে সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন, সংবিধান সংস্কার করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ১ দফা দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে কর্মসূচি ঘোষণা করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার পতনের এক দফা দাবির আন্দোলন ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকবে।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এই শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে বাধা দিলে গণপ্রতিরোধ গড়ে উঠবে। এর সব দায় দায়িত্ব সরকারকে বহন করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২৮ জুলাই) বিকেল ৪টায় সেগুনবাগিচা মৎস্যভবনের সামনের সড়কে অনুষ্ঠিত গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেএসডির সভাপতি আ. স. ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহামুদর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাষানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহামুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লা কাওসার, গণসংহতির নেতা আবুল হাসান রুবেল, ভাষানী অনুসারী পরিষদের নেতা হাবিবুর রহমান রিজু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেত্রী বহ্নিশিখা প্রমুখ।

সমাবেশে আ.স.ম আব্দুর রব বর্তমান সরকারকে ফেরাউন এবং নমরুদ সরকারের সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারও সেরকম। ফেরাউন ও নমরুদ সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছে, আপনি শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না অচিরেই বিদায় নিতে হবে। আপনার বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘শেখ হাসিনার বাবা শেখ মুজিব বলতেন সোজা আঙুলে ঘি ওঠে না। ঘি তুলতে হলে আঙুল বাঁকা করতে হবে। এবার ঘি তুলতে আঙুল বাঁকা করা হয়েছে। আগে যেমন বিরোধীদল কর্মসূচি দিলে লঞ্চ, বাস, ট্রেন সব কিছু বন্ধ করে দিতেন। এবার একটি গরুর গাড়িও বন্ধ করতে পারেনি শেখ হাসিনা।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলে, ‘বাংলাদেশ বদলে যেতে শুরু করেছে। এই শাসক আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।’

মাহমুদর রহমান মান্না বলেন, ‘শেখ হাসিনা সব সময় মিথ্যা কথা বলে। তার মন্ত্রিসভার সবাই মিথ্যা বলে। শেখ হাসিনার শরীরে মিথ্যার রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে।’

সাইফুল হক বলেন, ‘শুধু সরকার পরিবর্তন করলেই হবে না। সরকারের পতন ঘটিয়ে বর্তমান সংবিধান সংস্কার করতে হবে। কারণ এই সংবিধান স্বৈরতান্ত্রিক সৃষ্টির উৎস।’

শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ‘যারা দেশের সম্পদ লুট করেছে। বিদেশে টাকা পাচার করেছে তাদের বিচার বাংলার মাটিতে করা হবে।’

বিজ্ঞাপন

বাবলু বলেন, ‘এ অবৈধ সরকার আবারো বিনাভোটে ক্ষমতায় আসতে চায়। এ সরকার দেশকে ফোকলা বানিয়ে ফেলেছে। ব্যাংক খালি, দ্রব্যমূল্য লাগামহীন। সরকারি সিন্ডিকেট আজ লুটেপুটে খাচ্ছে। শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের মুখে। দলীয়করণ করা হয়েছে বিচার বিভাগ। বিরোধীমত তার মত প্রকাশ করলেই গুম হতে হচ্ছে। এভাবে একটি রাষ্ট্র চলতে পারে না। এজন্য দলমত নির্বিশেষে সবাইকে একজোট হয়ে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। আর সেই পতনের সুচনা হলো আজ থেকে। ২৮ জুলাই ২০২৩ ইতিহাসে ঐতিহাসিক দিন।’

আ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘বর্তমান হাসিনা সরকারকে পতন ঘটিয়ে রাষ্ট্র সংস্কার করা হবে। কারণ সংবিধানে অনেক ধারা অনুচ্ছেদ আছে যা সঠিক নয়।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের প্রথম অংশে ‘রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি’ নামে যে অধ্যায়টি আছে- সেখানে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ- অর্থাৎ সাধারণ মানুষের কাছে যেগুলো চার মূলনীতি বলে পরিচিত; এর পাশাপাশি আরও অনেক বিষয় বা নীতি আছে। বাংলাদেশের সংবিধানের সমস্যা হচ্ছে, এ মূলনীতিগুলো বাস্তবায়নে যে ধরনের ক্ষমতা কাঠামো থাকা দরকার; রাষ্ট্রের ক্ষমতা যেভাবে বিন্যাস হওয়া দরকার, তা ওইভাবে না হয়ে ব্রিটিশ আমলে যেমনটা ছিল; পাকিস্তান আমলে যেমন ছিল তার চেয়েও খারাপভাবে বিধিবদ্ধ আছে। আমরা বলছি, সংবিধানের ‘রাষ্ট্র্র পরিচালনার মূলনীতি’ অংশের সঙ্গে ক্ষমতা কাঠামো অংশের যে দ্বন্দ্ব বা বৈপরীত্য আছে, তা দূর করতে সাংবিধানিক ক্ষমতা কাঠামোর পরিবর্তন বা সংস্কার করতে হবে। এ ছাড়া রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য আরও অনেক আইনকানুন আছে। সেগুলোকেও মূলনীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করার জন্য সংস্কার করতে হবে।’

সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন