বিজ্ঞাপন

১০ লাখ টাকা ও অলংকার নিয়ে দেড় মাস ধরে ‘উধাও’ স্ত্রী

November 22, 2023 | 6:51 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক প্রবাসীর নগদ প্রায় ১০ লাখ টাকা এবং দেড় ভরি ওজনের সোনার অলংকার নিয়ে তার স্ত্রী পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্ত্রী জেসমিন খাতুন ও শ্বশুর-শাশুড়িকে আসামি করে আদালতে মামলা করেছেন প্রবাসী শরিফুল ইসলাম।

বিজ্ঞাপন

প্রবাসী শরিফুল ইসলামের অভিযোগ, পাঁচ বছর বয়সী ছেলেকেও সঙ্গে নিয়ে গেছেন তার স্ত্রী জেসমিন খাতুন। দেড় মাস ধরে কোনো যোগাযোগ করছেন না তিনি। অথচ এর মধ্যেই তিনি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে সব টাকা তুলে নিয়েছেন, তালাক নোটিশও পাঠিয়েছেন। অর্থ আত্মসাৎ করতেই তিনি এমন করেছেন বলে অভিযোগ শরিফুলের।

অন্যদিকে শুরুতে জেসমিনের মা-বাবার ভাষ্য ছিল, জেসমিন ও তার ছেলে নিখোঁজ হয়েছেন। পরে তারা বলেছেন, জেসমিন ও তার ছেলেকে যেন শরিফুলের পরিবার নিয়ে যেতে না পারে, সে কারণেই তারা তাদের লুকিয়ে রাখা হয়েছে। কোনো ধরনের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তারা।

সদর উপজেলার অনুপনগর ইউনিয়নের চর বাসুদেবপুর গ্রামের মৃত তরিকুল ইসলামের ছেলে প্রবাসী শরিফুল ইসলামের বাড়ি থেকে গত ১০ অক্টোবর ছেলেকে নিয়ে বেরিয়ে যান জেসমিন। খোঁজ নিতে যোগাযোগ করলে তার মা-বাবা জানান, জেসমিন নিখোঁজ রয়েছেন। শরিফুলের অভিযোগ, কথিত এই নিখোঁজ থাকার দেড় মাসেই জেসমিন তার অ্যাকাউন্টে থাকা প্রবাস থেকে শরিফুলের পাঠানো প্রায় সাত লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন। বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কয়েকদিন পর তালাকের নোটিশও পাঠিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

মামলার এজাহার, ভুক্তভোগী শরিফুল ও তার পরিবার এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে ছিলেন শরিফুল ইসলাম। সেখান থেকে সব টাকা তিনি পাঠিয়েছেন স্ত্রী জেসমিনের অ্যাকাউন্টে। সম্প্রতি দেশে ফিরে আসেন শরিফুল। তিনি স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে পাঠানো টাকা ‍তুলতে চাইলে তা নিয়ে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্য ও কথা কাটাকাটি হয়। এরই মধ্যে গত ১০ অক্টোবর টাকা ও অলংকার নিয়ে ছেলেসহ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান জেসমিন।

শরিফুল বলেন, একটি কাজে শহরে গিয়েছিলাম। বাসায় ফিরে দেখি আলমারি ভেঙে নগদ ১০ লাখ টাকা ও সোনার অলংকারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে জেসমিন বাড়ি থেকে চলে গেছে। শ্বশুরবাড়িতে যোগাযোগ করলে তারা উল্টাপাল্টা কথা বলে, ভয়ভীতি দেখায়। তখনই থানায় জিডি করেছিলাম। কিন্তু কোনো উপায় না পেয়ে আদালতে মামলা করেছি।

শরিফুল আরও বলেন, টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়ে উল্টো বলছে নিখোঁজ হয়েছে। অথচ এই সময়েই ব্যাংক থেকে সব টাকা তুলে নিয়েছে। আমাকে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছে। আমার নগদ ও ব্যাংকে থাকা সব টাকা আত্মসাৎ করেছে। এমনকি আমার ছেলেটিকেও দেখতে দিচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

শরিফুলের মা নাসিমা বেগম বলেন, আমাদের সঙ্গে জেসমিনের কোনো বিরোধ ছিল না। ছেলে দেশে আসার পর ব্যাংকে পাঠানো টাকা তোলা নিয়ে ওদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। এরপর জেসমিন বাড়িতে থাকা টাকা ও গয়না নিয়ে পালায়। তাদের বাসায় একাধিকবার যোগাযোগ করে বউ ও নাতির সন্ধান চাইলেও নিখোঁজ রয়েছে বলে জানায়। তারা উল্টো নানারকম ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে।

জেসমিনের মা জাকিয়া বেগম ও বাবা আনারুল ইসলাম প্রথমে মেয়ে ও নাতির কথা জানেন না বলে এড়িয়ে যেতে চান। পরে বলেন, ‘জামাইয়ের পরিবার একাধিকবার বাসায় এসে মেয়ে ও নাতিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। তাই তাদের থেকে আড়াল করতেই দূরে রেখেছি।’ তবে টাকা আত্মসাৎ ও ব্যাংক থেকে টাকা তোলার কথা তারা অস্বীকার করেন।

এ ঘটনায় আদালতে দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। জেলা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আসগর আলী বলেন, আদালতের নির্দেশে মামলার নথিপত্র পাওয়া গেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন