বিজ্ঞাপন

স্বতন্ত্রে তটস্থ জোট শরিকরা চায় ২০ আসন

December 5, 2023 | 8:54 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটযুদ্ধে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে আসন সমঝোতার ভিত্তিতে এবারও জোটবদ্ধ হয়ে নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করবে জোট শরিক নেতারা। তবে একাদশের চেয়ে দ্বাদশের ভোটযুদ্ধে তারা দ্বিগুণ আসন দাবি করেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রাপ্তরা যেভাবে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন, তেমন স্বতন্ত্রে তটস্থ জোট শরিকরাও। এমনকি জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হাইকমান্ডের হস্তেক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে ইস্কাটনের বাসভবনে ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর সঙ্গে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের কয়েকজন নেতার বৈঠক হয়। বৈঠকে জোট শরিক নেতাদের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আকতার উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘এই মুহূর্তে ১৪ দলের ১০ জন সংসদ সদস্য আছেন। আমরা আশা করছি, ১০ দ্বিগুণ হয়ে ২০ জন হবে। বাকিটা জোট নেত্রী শেখ হাসিনা এবং ওনার দল সবকিছু মিলিয়ে বিবেচনা করবেন।’ তিনি বলেন, ‘বিষয়টি সম্মানজনকভাবে আমরা নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হব এবং জোটের ভিত্তিতেই নির্বাচন করতে আমরা মাঠে নামব।’

আপনারা কত জনের তালিকা দিয়েছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে ইনু বলেন, ‘যেকোনো লেনদেনে দর কষাকষি হবে, মন কষাকষি হবে। বন্ধুদের মধ্যে দর কষাকষি ও মন কষাকষি হয়; শেষ বিচারে হাসিমুখে উঠে যাব।’ আওয়ামী লীগ ২৯৮ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে? এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবসময় আমরা যার যার দলের প্রার্থী দিই। তারপর আমরা সমন্বয় করি। সুতরাং যেখানে জোটের প্রার্থী আসবে, সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেবে।’

বিজ্ঞাপন

স্বতন্ত্র প্রার্থীর ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কাছে আপনারা কী বার্তা দিয়েছেন? এমন প্রশ্নের ইনু বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর ব্যাপারে কী কৌশল গ্রহণ করা হবে সেটা জোটনেত্রী শেখ হাসিনাকে আমরা বিবেচনা করতে বলেছি। এ ব্যাপারে আরও সময় আছে আলোচনা করার জন্য।’ জোটের প্রার্থীরা সবাই নৌকা মার্কায় নির্বাচন করবে বলেও জানান তিনি।

স্বতন্ত্র প্রার্থীকে প্রত্যাহার করতে বলা হলে সেটা নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গের শামিল হবে- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ইনু বলেন, ‘কেউ প্রত্যাহার করে নিলে নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ হয় না। প্রত্যাহার করার জন্য যার যার দল সেই প্রার্থীকে অনুরোধ করতে পারে, নির্দেশ দিতে পারে। আমি মনে করি, এ ব্যাপারে মনোমানিল্য কিছু হবে আর কি। এটা হচ্ছে কৌশলগত সিদ্ধান্ত। সেই সিদ্ধান্ত কীভাবে কার্যকর করবে তার জন্য শেষদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তারপর আমরা বুঝব প্রত্যেক আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কীভাবে ভূমিকা রাখছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করছি, আওয়ামী লীগের নামকরা নেতারা জোটের প্রার্থী যেখানে সেখানে স্বতন্ত্র হিসাবে লড়াই করলে এটা আওয়ামী লীগ বনাম সেই দলের হয়ে যায়। এটা হয়তো একটু বিভ্রান্তির সৃষ্টি করতে পারে। আমরা বিবেচনা করার কথা বলেছি।’

বিজ্ঞাপন

গতকাল গণভবনের বৈঠকে জোটনেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে রাজনৈতিক বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে বলে দাবি করেন ইনু। তিনি বলেন, ‘আসন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। পুরো ব্যাপারটা সমন্বয়ক আমির হোসনে আমুর উপরে ন্যস্ত করা হয়েছে। উনি আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে এগুবেন এবং জোটনেত্রীর পরামর্শের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটা আদর্শিক জোট। সুতরাং সর্বনিম্ন-সর্বোচ্চ মাত্রার ভিত্তিতে আমরা জোটকে মাপছি না।’ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘জয়যোগ্য প্রার্থী ছাড়া জোট শরিকদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না।’ এ বিষয়ে ইনু বলেন, ‘নির্বাচনে কে উইনবেল কে উইনেবল না; এটা কোনো নেতা-নেত্রী আগে থেকে বলে দিতে পারেন না। এই যদি হতো তাহলে ক্ষমতায় যারা বার বার গিয়েছে তাদের প্রার্থীরা পরাজিত হতো না।’

এর আগে, গতকাল সোমবার (৪ ডিসেম্বর) গণভবনে জোট নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কয়েক ঘণ্টার বৈঠকেও আসন ভাগাভাগি সম্পন্ন হয়নি। পরে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি সম্পন্ন করতে জোট নেত্রী জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে সমন্বয় করার দায়িত্ব দেন।

উল্লেখ্য, আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৮টিতে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন